০৮:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
নিজামী-মীর কাসেম-সালাউদ্দিন কাদেরকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধের খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৯ থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন সেনা ও সিআইএ এজেন্টদের বহিষ্কারের চিন্তা কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট পেত্রোর পেন্টাগনের বড় চুক্তি পেল ট্রাম্পের ছেলের ড্রোন কোম্পানি কেন ট্রাম্প-পুতিনের বুদাপেস্ট বৈঠক বাতিল হলো? হুমকিতে বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকাদান কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার হুঁশিয়ারি: “আমাদের হাতে ৫ হাজার রুশ ক্ষেপণাস্ত্র” সিইসির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, গভীর সমুদ্রে যাত্রা নিষেধ আতলেতিকোর জালে ১৪ মিনিটে ৪ গোল, দাপুটে জয়ে আর্সেনাল

পাবনায় পেঁয়াজের খেতে ‘আগা মরা’ রোগ: লোকসানের শঙ্কায় কৃষকরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৫৬:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫
  • / 142

ছবি সংগৃহীত

 

চলতি বছর মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজের ফলন ভালো হলেও বাজারদর কম থাকায় প্রত্যাশিত লাভ হয়নি কৃষকদের। তাই হালি পেঁয়াজ নিয়ে আশায় ছিলেন তাঁরা। তবে সেই আশায়ও যেন গুড়েবালি! পাবনার বেড়া, সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলায় হালি পেঁয়াজের খেতে দেখা দিয়েছে ‘আগা মরা’ রোগ। এতে ফলন কমে যাওয়ার শঙ্কায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে কৃষকদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পেঁয়াজগাছের আগা শুকিয়ে লালচে হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো জমির গাছ প্রায় অর্ধেক শুকিয়ে গেছে, ফলে পেঁয়াজের আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে। চাষিরা বলছেন, শুরুতে কোনো সমস্যা ছিল না, তবে গাছ বড় হতেই আগা শুকিয়ে মারা যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বেড়া উপজেলার কৃষক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘হালকা বৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই গাছের আগা মরতে শুরু করেছে। দুইবার ওষুধ ছিটালেও কাজ হয়নি। এবার ৬০ মণ পেঁয়াজের আশায় ছিলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৩০ মণও পাব কি না সন্দেহ।’ সাঁথিয়া উপজেলার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে এমনিতেই দাম নেই, তার ওপর আগা মরা রোগে পেঁয়াজের খেত শেষ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চললে বিশাল লোকসান গুনতে হবে।’

স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দিনে তীব্র গরম, রাতে শীত এবং ভোরের কুয়াশার কারণে তাপমাত্রার তারতম্য ১০ ডিগ্রি পর্যন্ত হচ্ছে। এই কারণেই হালি পেঁয়াজের গাছ দুর্বল হয়ে পড়ছে। তবে কৃষকদের দাবি, তারা যথাযথ পরিচর্যা করলেও সমস্যার সমাধান মিলছে না।

পাবনার কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, এবার সুজানগরে ১৯,২৮০ হেক্টর, সাঁথিয়ায় ১৬,৭০০ হেক্টর এবং বেড়ায় ৫,১০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। ১০-১২ দিন ধরে এসব এলাকায় হালি পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করেছে, তবে ফলন নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।

মুড়িকাটা পেঁয়াজের কেজিপ্রতি উৎপাদন খরচ প্রায় ৫০ টাকা, আর হালি পেঁয়াজের ৪৫ টাকা। তবে সরকারি হিসাব অনুযায়ী, যথাক্রমে ৪১ ও ৩৮ টাকা। অথচ পাইকারি বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৩-১৮ টাকা কেজিতে, আর হালি পেঁয়াজ ২০-২৫ টাকায়। এতে প্রতি বিঘায় কৃষকদের ৪০-৫০ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে।

সাঁথিয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, ‘চাষিদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। গাছের আগা শুকোলেও পেঁয়াজের গুটি মোটামুটি বড় হয়েছে। আর মাসখানেকের মধ্যে পেঁয়াজ সংগ্রহ শুরু হবে। কৃষকদের পরিমিত পরিমাণে রাসায়নিক কীটনাশক ছিটানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

কিন্তু কৃষকদের প্রশ্ন বাজারে দাম কম, রোগের আক্রমণে ফলনও কমতে পারে, তাহলে লোকসানের দায় কে নেবে? পেঁয়াজের ন্যায্য দাম নিশ্চিত না হলে, কৃষকদের এই ক্ষতি পূরণ হবে কীভাবে? নীতিনির্ধারকদের এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে দ্রুত।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

পাবনায় পেঁয়াজের খেতে ‘আগা মরা’ রোগ: লোকসানের শঙ্কায় কৃষকরা

আপডেট সময় ১০:৫৬:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫

 

চলতি বছর মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজের ফলন ভালো হলেও বাজারদর কম থাকায় প্রত্যাশিত লাভ হয়নি কৃষকদের। তাই হালি পেঁয়াজ নিয়ে আশায় ছিলেন তাঁরা। তবে সেই আশায়ও যেন গুড়েবালি! পাবনার বেড়া, সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলায় হালি পেঁয়াজের খেতে দেখা দিয়েছে ‘আগা মরা’ রোগ। এতে ফলন কমে যাওয়ার শঙ্কায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে কৃষকদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পেঁয়াজগাছের আগা শুকিয়ে লালচে হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো জমির গাছ প্রায় অর্ধেক শুকিয়ে গেছে, ফলে পেঁয়াজের আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে। চাষিরা বলছেন, শুরুতে কোনো সমস্যা ছিল না, তবে গাছ বড় হতেই আগা শুকিয়ে মারা যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বেড়া উপজেলার কৃষক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘হালকা বৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই গাছের আগা মরতে শুরু করেছে। দুইবার ওষুধ ছিটালেও কাজ হয়নি। এবার ৬০ মণ পেঁয়াজের আশায় ছিলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৩০ মণও পাব কি না সন্দেহ।’ সাঁথিয়া উপজেলার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে এমনিতেই দাম নেই, তার ওপর আগা মরা রোগে পেঁয়াজের খেত শেষ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চললে বিশাল লোকসান গুনতে হবে।’

স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দিনে তীব্র গরম, রাতে শীত এবং ভোরের কুয়াশার কারণে তাপমাত্রার তারতম্য ১০ ডিগ্রি পর্যন্ত হচ্ছে। এই কারণেই হালি পেঁয়াজের গাছ দুর্বল হয়ে পড়ছে। তবে কৃষকদের দাবি, তারা যথাযথ পরিচর্যা করলেও সমস্যার সমাধান মিলছে না।

পাবনার কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, এবার সুজানগরে ১৯,২৮০ হেক্টর, সাঁথিয়ায় ১৬,৭০০ হেক্টর এবং বেড়ায় ৫,১০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। ১০-১২ দিন ধরে এসব এলাকায় হালি পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করেছে, তবে ফলন নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।

মুড়িকাটা পেঁয়াজের কেজিপ্রতি উৎপাদন খরচ প্রায় ৫০ টাকা, আর হালি পেঁয়াজের ৪৫ টাকা। তবে সরকারি হিসাব অনুযায়ী, যথাক্রমে ৪১ ও ৩৮ টাকা। অথচ পাইকারি বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৩-১৮ টাকা কেজিতে, আর হালি পেঁয়াজ ২০-২৫ টাকায়। এতে প্রতি বিঘায় কৃষকদের ৪০-৫০ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে।

সাঁথিয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, ‘চাষিদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। গাছের আগা শুকোলেও পেঁয়াজের গুটি মোটামুটি বড় হয়েছে। আর মাসখানেকের মধ্যে পেঁয়াজ সংগ্রহ শুরু হবে। কৃষকদের পরিমিত পরিমাণে রাসায়নিক কীটনাশক ছিটানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

কিন্তু কৃষকদের প্রশ্ন বাজারে দাম কম, রোগের আক্রমণে ফলনও কমতে পারে, তাহলে লোকসানের দায় কে নেবে? পেঁয়াজের ন্যায্য দাম নিশ্চিত না হলে, কৃষকদের এই ক্ষতি পূরণ হবে কীভাবে? নীতিনির্ধারকদের এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে দ্রুত।