নওগাঁয় ভরা মৌসুমেও চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী, বস্তাপ্রতি বেড়েছে ৪০০ টাকা

- আপডেট সময় ১১:৫০:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
- / 8
নওগাঁয় ভরা মৌসুমে ধানের কোনো ঘাটতি নেই, মিলের গুদামও ঠাসা চালে। তারপরও এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি মোকামে বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এতে দফায় দফায় ভোক্তাদের পকেট কাটছে বাড়তি খরচ।
অন্যদিকে, চাষিরা অভিযোগ করছেন, হাটে তাদের ধানের ন্যায্য দাম মিলছে না। অথচ সেই ধান থেকে উৎপাদিত চালই মিল পর্যায়ে প্রক্রিয়াজাত হয়ে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। এ অবস্থায় মিলারদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন খুচরা ক্রেতারা।
জানা গেছে, এক মাস আগেই বোরো মৌসুমের ধান ঘরে তোলা হয়েছে। মিলগুলোর গুদামে বস্তায় বস্তায় চালের স্তুপ। অটো মিলগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। এই অবস্থাতেই মিলাররা সরু চালের দাম বস্তাপ্রতি ৪০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে স্বর্ণা-৫ জাতের ধান মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩১ টাকা দরে কেনা হয়েছে। মিল পর্যায়ে এনে চাল উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৪৩ থেকে ৪৪ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু পাইকারি মোকামে সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৭ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। প্রতি কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা মুনাফা যাচ্ছে মিলারদের হাতে।
এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। মোটা চালের দাম যেখানে ৫২ টাকা ছিল, সেটি এখন ৫৮ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। সরু চালের দাম ৬৮ থেকে ৭৫ টাকার ঘরে ঘুরছে। দরবৃদ্ধির এই চাপে ভোক্তারা দিশেহারা। অনেকেই বলছেন, আগের মতো চাল কিনতে গেলে সংসারের খরচ মেলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল পর্যায়ে চাল মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে। তারা দাবি করেন, বাজারে চালের কোনো ঘাটতি নেই, কেবল মজুতদারদের কারসাজিতেই দাম বেড়েছে। ঈদের পর বস্তাপ্রতি ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেচাবিক্রিতেও প্রভাব পড়েছে।
অবশ্য মিল মালিকদের পক্ষ থেকে ভিন্ন সুর শোনা গেছে। নওগাঁ জেলা মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফরহাদ হোসেন বলেছেন, “খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ঠিক নয়, মূলত ধানের দাম বাড়ায় চালের দাম কিছুটা বেশি হয়েছে।”
এদিকে বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে অভিযান শুরু করেছে জেলা খাদ্য বিভাগ। নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফরহাদ খন্দকার জানান, “বড় গুদাম ও মিলগুলোতে অভিযান চালানো হচ্ছে। তথ্য সংগ্রহ করে পর্যালোচনা শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন ধান থেকে ৮ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।