ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে বিশ্ববাজারে স্বস্তি, তেলের দামে বড় পতন

- আপডেট সময় ০৩:১৯:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
- / 5
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর বিশ্ববাজারে তেলের দামে বড় ধরনের পতন লক্ষ্য করা গেছে। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে জ্বালানি সরবরাহ বিঘ্নের আশঙ্কা হ্রাস পায়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে আন্তর্জাতিক তেলের দামে।
মঙ্গলবার ইউরোপীয় সময় বাজার খোলার পরও এই পতনের ধারা অব্যাহত ছিল। সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) ক্রুড অয়েলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩.৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬৫.৯ ডলারে। এটি সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম বড় দরপতন। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৩.৮ শতাংশ কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৬৮.৮ ডলারে।
এর আগের দিন, সোমবার, ইরান কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোর ওপর সীমিত ও লক্ষ্যভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে বাজারে তীব্র অস্থিরতা দেখা দেয়। সেদিন মাত্র একদিনেই মার্কিন ক্রুডের দাম ৭.২ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৬৮.৫১ ডলারে—যা এ বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দৈনিক পতন এবং গত তিন বছরের অন্যতম বড় দরপতন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
একই দিনে ব্রেন্ট তেলের দামও ৭.২ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৭১.৪৮ ডলারে, যা আগস্ট ২০২২ সালের পর থেকে সর্ববৃহৎ দৈনিক পতন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, এই পতনের নেপথ্যে রয়েছে যুদ্ধের শঙ্কা ও বিনিয়োগকারীদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া।
তবে রাতেই নাটকীয় মোড় নেয় পরিস্থিতি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দেন যে ইরান ও ইসরায়েল একটি ‘সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি’তে পৌঁছেছে। পরে তিনি জানান, যুদ্ধবিরতি ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। ইরান ও ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম থেকেও এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
যদিও এই যুদ্ধবিরতির শর্ত ও সময়সীমা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি, বিশ্লেষকরা বলছেন—যদি এই শান্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা পুনরায় স্থিতিশীল হতে পারে। স্বল্পমেয়াদে হলেও এই শান্তির বার্তা বিশ্ববাজারে বিনিয়োগকারীদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, মধ্যপ্রাচ্যের জটিল ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় একেবারে নিশ্চিন্ত হওয়ার সুযোগ নেই। তবুও সাময়িক স্থিতিশীলতা বিশ্ব জ্বালানি বাজারের জন্য একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন তারা।
সূত্র: বিবিসি, সিএনএন