ঢাকা ১২:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ভালুকায় ৫০০ টাকার জন্য স্ত্রীকে খুন, লাশ খাটের নিচে! দেশে ২৪ ঘন্টায় আরোও ৭ জনের করোনা শনাক্ত আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশের এসআই নিহত মারা গেছেন ক্যান্সার আক্রান্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঝন্টু আলী বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ৩ সন্তানের জননীর অনশন প্রেমিক আত্মগোপনে চোকার্স’ তকমা ও ২৭ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা নাইটহুড খেতাবে ভূষিত হলেন বিশ্বখ্যাত তারকা ‘স্যার’ ডেভিড বেকহ্যাম ইসরাইলি হামলায় ইরানে নিহত ১২ পরমাণু বিজ্ঞানী, দাবি আইডিএফের মানুষকে মামলার অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে কাজ করছি: আসিফ নজরুল লন্ডনে বৈঠকের পর নিরপেক্ষতা হারালেন প্রধান উপদেষ্টা: অভিযোগ জামায়াতের

সুপারি বাণিজ্যে পঞ্চগড়ের টুনিরহাট, লেনদেন ছাড়াতে পারে ১৫০ কোটি টাকা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৫৩:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
  • / 9

ছবি সংগৃহীত

 

পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের টুনিরহাট বাজার এখন দেশের অন্যতম সুপারি বিপণন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সপ্তাহে মাত্র দুইদিন সোমবার ও শুক্রবার বসা এই হাটে প্রতিবার বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার সুপারি। মৌসুমজুড়ে এই হাটে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছাড়াতে পারে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা, এমনটাই জানাচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

সোমবার ও শুক্রবার সকাল থেকে সুপারির বস্তা নিয়ে ভিড় জমায় স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার চাষিরা। বাজারে ঢালাওভাবে মাটিতে সুপারি ঢেলে চলে দরদাম ঠিক করা, বাছাই ও প্যাকেটজাতকরণের কাজ। এরপর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চট্টগ্রাম, সিলেট, ফেনী, নোয়াখালীসহ নানা জেলায় পাঠানো হচ্ছে এসব সুপারি।

কৃষকরা খুশি, লাভে ফিরছেন আগ্রহ

স্থানীয় কৃষকদের মতে, পঞ্চগড়ের মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য আদর্শ। তুলনামূলকভাবে খরচ কম, ফলে লাভ বেশি। অনেকেই অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সুপারি চাষে ঝুঁকছেন।

গত বছর যেখানে প্রতি পণে (৮০ পিছ) সুপারি বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, সেখানে চলতি মৌসুমে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। এক কাহন (১৬ পণ বা ১২৮০ পিছ) সুপারি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৯ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে।

চাষি সালাম মিঞা জানান, “গতবারের তুলনায় এবার বাজার অনেক ভালো। দামও চাহিদা অনুযায়ী মিলছে, লাভও বেশি।” আরেক চাষি কারিমুল ইসলাম বলেন, “ফলন কিছুটা কম হলেও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে সন্তুষ্টি বিরাজ করছে।”

ব্যবসায়ীরাও ব্যস্ত, বেড়েছে গুণগত মানের কদর

গুণগত মান ভালো থাকায় দাম কিছুটা বাড়লেও পিছিয়ে নেই পাইকাররা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা টুনিরহাটে এসে উচ্চমূল্যে হলেও সুপারি কিনে নিচ্ছেন। এতে তাদের নিজ নিজ অঞ্চলের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল মতিন বলেন, “এবার জেলায় প্রায় ৬৫২ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হয়েছে। আশা করছি পুরো মৌসুমে ১৫০ কোটি টাকার লেনদেন হবে।”

দেশজুড়ে চাহিদা, পঞ্চগড় এখন সুপারির বড় যোগানদাতা

সারাদেশে সুপারির ঘাটতির মধ্যে পঞ্চগড়ের সুপারির প্রতি চাহিদা বেড়েই চলেছে। স্থানীয় প্রয়োজন মিটিয়েও দেশের অন্যান্য জেলার বাজারে সরবরাহ করছে এই অঞ্চল। ফলে কৃষক ও ব্যবসায়ী সবাই এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন সুপারির এই জমজমাট মৌসুমকে ঘিরে।

নিউজটি শেয়ার করুন

সুপারি বাণিজ্যে পঞ্চগড়ের টুনিরহাট, লেনদেন ছাড়াতে পারে ১৫০ কোটি টাকা

আপডেট সময় ১১:৫৩:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

 

পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের টুনিরহাট বাজার এখন দেশের অন্যতম সুপারি বিপণন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সপ্তাহে মাত্র দুইদিন সোমবার ও শুক্রবার বসা এই হাটে প্রতিবার বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার সুপারি। মৌসুমজুড়ে এই হাটে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছাড়াতে পারে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা, এমনটাই জানাচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

সোমবার ও শুক্রবার সকাল থেকে সুপারির বস্তা নিয়ে ভিড় জমায় স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার চাষিরা। বাজারে ঢালাওভাবে মাটিতে সুপারি ঢেলে চলে দরদাম ঠিক করা, বাছাই ও প্যাকেটজাতকরণের কাজ। এরপর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চট্টগ্রাম, সিলেট, ফেনী, নোয়াখালীসহ নানা জেলায় পাঠানো হচ্ছে এসব সুপারি।

কৃষকরা খুশি, লাভে ফিরছেন আগ্রহ

স্থানীয় কৃষকদের মতে, পঞ্চগড়ের মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য আদর্শ। তুলনামূলকভাবে খরচ কম, ফলে লাভ বেশি। অনেকেই অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সুপারি চাষে ঝুঁকছেন।

গত বছর যেখানে প্রতি পণে (৮০ পিছ) সুপারি বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, সেখানে চলতি মৌসুমে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। এক কাহন (১৬ পণ বা ১২৮০ পিছ) সুপারি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৯ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে।

চাষি সালাম মিঞা জানান, “গতবারের তুলনায় এবার বাজার অনেক ভালো। দামও চাহিদা অনুযায়ী মিলছে, লাভও বেশি।” আরেক চাষি কারিমুল ইসলাম বলেন, “ফলন কিছুটা কম হলেও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে সন্তুষ্টি বিরাজ করছে।”

ব্যবসায়ীরাও ব্যস্ত, বেড়েছে গুণগত মানের কদর

গুণগত মান ভালো থাকায় দাম কিছুটা বাড়লেও পিছিয়ে নেই পাইকাররা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা টুনিরহাটে এসে উচ্চমূল্যে হলেও সুপারি কিনে নিচ্ছেন। এতে তাদের নিজ নিজ অঞ্চলের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল মতিন বলেন, “এবার জেলায় প্রায় ৬৫২ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হয়েছে। আশা করছি পুরো মৌসুমে ১৫০ কোটি টাকার লেনদেন হবে।”

দেশজুড়ে চাহিদা, পঞ্চগড় এখন সুপারির বড় যোগানদাতা

সারাদেশে সুপারির ঘাটতির মধ্যে পঞ্চগড়ের সুপারির প্রতি চাহিদা বেড়েই চলেছে। স্থানীয় প্রয়োজন মিটিয়েও দেশের অন্যান্য জেলার বাজারে সরবরাহ করছে এই অঞ্চল। ফলে কৃষক ও ব্যবসায়ী সবাই এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন সুপারির এই জমজমাট মৌসুমকে ঘিরে।