পল্লী বিদ্যুৎকে বাণিজ্যিক খাতে রূপান্তরের চেষ্টায় উদ্বিগ্ন ক্যাব

- আপডেট সময় ০৪:০১:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫
- / 7
পল্লী বিদ্যুৎ খাতকে বাণিজ্যিক খাতে রূপান্তরের প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব। সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পিবিএস) মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদ এবং দোষারোপের রাজনীতি সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে আরও জটিল করে তুলছে। সরকারের এই অবস্থানকে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ বলেও মনে করছে তারা।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম। তিনি জানান, আরইবিকে সেবা প্রতিষ্ঠান থেকে কোম্পানিতে রূপান্তরের প্রক্রিয়া ৮০’র দশক থেকেই চলছে, যা এখন সরকারের হাতে পুরোমাত্রায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে আরইবি ও পিবিএস একীভূত করার দাবি জানিয়ে আসছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীরা এবং তাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও সংহতি প্রকাশ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পিবিএস কর্মীরা তাদের ৭ দফা দাবিতে টানা ১৫ দিন শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এর আগেও জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি তুলে ধরেছেন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনও কার্যকর সাড়া মেলেনি।
প্রসঙ্গত, সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিল। কমিটির প্রতিবেদনের খসড়া ১ জুন বিদ্যুৎ বিভাগের উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হয়। তবে ক্যাব জানিয়েছে, এই কমিটি তাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি এবং খসড়া প্রতিবেদনেও ভোক্তাদের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে।
ক্যাবের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এই প্রতিবেদনে আরইবিকে কোম্পানিতে রূপান্তরের সুপারিশ করা হয়েছে, যা ভোক্তাদের স্বার্থবিরোধী। এতে ব্যয় বেড়ে যাবে এবং গ্রাহককে আরও ভোগান্তিতে ফেলবে। ক্যাবের মতে, বিশ্বব্যাংক ও এডিবির পরামর্শে পরিচালিত এই প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ খাত বেসরকারি শোষণের দিকে যাচ্ছে।
ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া বলেন, “ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শোষণের মাধ্যমে শাসন করেছিল। এখন আরইবিকে কোম্পানিতে রূপান্তরের মাধ্যমে সেই শোষণ আবার ফিরে আসছে।”
সংগঠনটির মতে, সহজ সমাধান হচ্ছে আরইবি ও পিবিএসকে একীভূত করে একটি কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান তৈরি করা। কিন্তু সরকার সে পথে না গিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের চাপেই নীতিনির্ধারণ করছে।