ঢাকা ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ অ-১৮ এশিয়া কাপ হকিতে জাপানের কাছে বাংলাদেশের নারী দলের বড় হার: ১১-০ গোলে বিধ্বস্ত! গাজায় আরও এক ফুটবলারের মৃত্যু, ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল মুহান্নাদের ঈদে শাকিব খানের নতুন চমক, অ্যাকশন সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হলিউড অভিনেতা মাইকেল ম্যাডসেন আর নেই আশুগঞ্জে অবৈধ সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনের কারাদণ্ড মিয়ানমারে কেএনডিএফ-এর হামলায় ভূপাতিত জান্তা সরকারের যুদ্ধবিমান বিশ্বে প্রথমবার তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলো রাশিয়া শুটিংয়ের মাঝে অসুস্থ স্বস্তিকা দত্ত, হাসপাতালে ভর্তি চূড়ান্ত হলো দুই এল ক্লাসিকো, ঐতিহাসিক ক্যাম্প ন্যুতে ফিরছে রোমাঞ্চ

পটুয়াখালীতে মুগডালের বাম্পার ফলন, শ্রমিক সংকট ও তাপদাহে মুগডাল সংগ্রহে হিমশিম কৃষক

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:১৬:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • / 45

ছবি: সংগৃহীত

 

পটুয়াখালী জেলায় এবার মুগডালের বাম্পার ফলন হয়েছে। উন্নতমানের বীজ ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে দেশের মোট উৎপাদনের বড় একটি অংশ এখান থেকেই আসছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চাহিদা মিটিয়ে ইতোমধ্যে বিদেশেও রপ্তানি শুরু হয়েছে এই ডাল। তবে তীব্র তাপদাহ ও শ্রমিক সংকটে ফসল সংগ্রহে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন কৃষকরা।

এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শুধু পাকা মুগডালের হলুদ ঝিলিক। কৃষকদের ভাষায়, “কালো সোনা”র সমারোহ। পটুয়াখালীর মাটি মুগডাল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। দেশের মোট মুগডালের প্রায় ৪৫ শতাংশই এখান থেকে উৎপাদিত হয়।

পটুয়াখালীর ডাল জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। এবার একরপ্রতি গড় উৎপাদন হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ কেজি পর্যন্ত। গত বছর যেখানে প্রতি মণ মুগডাল ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল, এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার টাকায়।

তবে ফলনের এই সাফল্যের মধ্যেও চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে। অতিরিক্ত গরম ও শ্রমিক সংকটে ফসল ঘরে তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে সকাল-বিকেল নিজ হাতে ডাল তুলে শুকাচ্ছেন উঠানে। দিনের অন্য সময়গুলোতে প্রচণ্ড রোদে কাজ করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

দুই বিঘা জমিতে মুগডাল চাষ করা কৃষক মো. আব্দুল জলিল বলেন, “ফসল ভালো হয়েছে, কিন্তু গরমের কারণে সকাল-বিকেল ছাড়া কাজ করা যাচ্ছে না। শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। যদি সময়মতো উঠাতে না পারি, বর্ষা এলে সব নষ্ট হয়ে যাবে।”

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিয়েছি যাতে তারা ফজরের নামাজের পরে ও বিকেলে কাজ করেন এবং রোদে ছাতা ব্যবহার করেন।”

চলতি বছর পটুয়াখালীতে ৮৮ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে মুগডাল চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ১১৪ মেট্রিক টন, যা গত বছরের তুলনায় ২০ হাজার মেট্রিক টন বেশি।

দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে পটুয়াখালীর এই মুগডাল এখন রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। তবে শ্রমিক সংকট ও বৈরী আবহাওয়ার মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কৃষকের এই সাফল্য কিছুটা ম্লান হয়ে যেতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

পটুয়াখালীতে মুগডালের বাম্পার ফলন, শ্রমিক সংকট ও তাপদাহে মুগডাল সংগ্রহে হিমশিম কৃষক

আপডেট সময় ১২:১৬:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

 

পটুয়াখালী জেলায় এবার মুগডালের বাম্পার ফলন হয়েছে। উন্নতমানের বীজ ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে দেশের মোট উৎপাদনের বড় একটি অংশ এখান থেকেই আসছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চাহিদা মিটিয়ে ইতোমধ্যে বিদেশেও রপ্তানি শুরু হয়েছে এই ডাল। তবে তীব্র তাপদাহ ও শ্রমিক সংকটে ফসল সংগ্রহে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন কৃষকরা।

এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শুধু পাকা মুগডালের হলুদ ঝিলিক। কৃষকদের ভাষায়, “কালো সোনা”র সমারোহ। পটুয়াখালীর মাটি মুগডাল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। দেশের মোট মুগডালের প্রায় ৪৫ শতাংশই এখান থেকে উৎপাদিত হয়।

পটুয়াখালীর ডাল জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। এবার একরপ্রতি গড় উৎপাদন হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ কেজি পর্যন্ত। গত বছর যেখানে প্রতি মণ মুগডাল ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল, এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার টাকায়।

তবে ফলনের এই সাফল্যের মধ্যেও চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে। অতিরিক্ত গরম ও শ্রমিক সংকটে ফসল ঘরে তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে সকাল-বিকেল নিজ হাতে ডাল তুলে শুকাচ্ছেন উঠানে। দিনের অন্য সময়গুলোতে প্রচণ্ড রোদে কাজ করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

দুই বিঘা জমিতে মুগডাল চাষ করা কৃষক মো. আব্দুল জলিল বলেন, “ফসল ভালো হয়েছে, কিন্তু গরমের কারণে সকাল-বিকেল ছাড়া কাজ করা যাচ্ছে না। শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। যদি সময়মতো উঠাতে না পারি, বর্ষা এলে সব নষ্ট হয়ে যাবে।”

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিয়েছি যাতে তারা ফজরের নামাজের পরে ও বিকেলে কাজ করেন এবং রোদে ছাতা ব্যবহার করেন।”

চলতি বছর পটুয়াখালীতে ৮৮ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে মুগডাল চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ১১৪ মেট্রিক টন, যা গত বছরের তুলনায় ২০ হাজার মেট্রিক টন বেশি।

দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে পটুয়াখালীর এই মুগডাল এখন রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। তবে শ্রমিক সংকট ও বৈরী আবহাওয়ার মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কৃষকের এই সাফল্য কিছুটা ম্লান হয়ে যেতে পারে।