ঢাকা ০৪:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সরকারি চাকরিতে শৃঙ্খলা ভঙ্গের শাস্তিতে নতুন বিধান, ২৫ দিন বরখাস্তের নির্দেশনা ইশরাক ইস্যু বিচারাধীন, এই বিষয় নিয়ে আমাকে দোষারোপ করা সমীচীন নয়: সজীব ভূইয়া অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় কণ্ঠশিল্পী নোবেলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ গাজায় ৪৮ ঘণ্টায় ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে, আশঙ্কায় জাতিসংঘ সবজি ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় সিরাজগঞ্জে ৬ আসামির ফাঁসি ‘সর্বকালের সেরা’ মেসি, আইএফএফএইচএস র‍্যাঙ্কিংয়ে কে কোন স্থানে? পাবনায় ৭৪ কেজি কষ্টিপাথরের মূর্তি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১ মাটিকাটায় সেনাবাহিনীর অভিযান, ‘হিটলু বাবু গ্যাং’-এর ১০ সদস্য গ্রেপ্তার স্টারলিংক নিয়ে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বে কোনো হুমকির শঙ্কা নেই: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আগামী অর্থবছরে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা হবে: অর্থ উপদেষ্টা

পটুয়াখালীতে মুগডালের বাম্পার ফলন, শ্রমিক সংকট ও তাপদাহে মুগডাল সংগ্রহে হিমশিম কৃষক

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:১৬:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • / 4

ছবি: সংগৃহীত

 

পটুয়াখালী জেলায় এবার মুগডালের বাম্পার ফলন হয়েছে। উন্নতমানের বীজ ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে দেশের মোট উৎপাদনের বড় একটি অংশ এখান থেকেই আসছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চাহিদা মিটিয়ে ইতোমধ্যে বিদেশেও রপ্তানি শুরু হয়েছে এই ডাল। তবে তীব্র তাপদাহ ও শ্রমিক সংকটে ফসল সংগ্রহে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন কৃষকরা।

এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শুধু পাকা মুগডালের হলুদ ঝিলিক। কৃষকদের ভাষায়, “কালো সোনা”র সমারোহ। পটুয়াখালীর মাটি মুগডাল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। দেশের মোট মুগডালের প্রায় ৪৫ শতাংশই এখান থেকে উৎপাদিত হয়।

পটুয়াখালীর ডাল জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। এবার একরপ্রতি গড় উৎপাদন হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ কেজি পর্যন্ত। গত বছর যেখানে প্রতি মণ মুগডাল ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল, এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার টাকায়।

তবে ফলনের এই সাফল্যের মধ্যেও চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে। অতিরিক্ত গরম ও শ্রমিক সংকটে ফসল ঘরে তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে সকাল-বিকেল নিজ হাতে ডাল তুলে শুকাচ্ছেন উঠানে। দিনের অন্য সময়গুলোতে প্রচণ্ড রোদে কাজ করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

দুই বিঘা জমিতে মুগডাল চাষ করা কৃষক মো. আব্দুল জলিল বলেন, “ফসল ভালো হয়েছে, কিন্তু গরমের কারণে সকাল-বিকেল ছাড়া কাজ করা যাচ্ছে না। শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। যদি সময়মতো উঠাতে না পারি, বর্ষা এলে সব নষ্ট হয়ে যাবে।”

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিয়েছি যাতে তারা ফজরের নামাজের পরে ও বিকেলে কাজ করেন এবং রোদে ছাতা ব্যবহার করেন।”

চলতি বছর পটুয়াখালীতে ৮৮ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে মুগডাল চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ১১৪ মেট্রিক টন, যা গত বছরের তুলনায় ২০ হাজার মেট্রিক টন বেশি।

দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে পটুয়াখালীর এই মুগডাল এখন রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। তবে শ্রমিক সংকট ও বৈরী আবহাওয়ার মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কৃষকের এই সাফল্য কিছুটা ম্লান হয়ে যেতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

পটুয়াখালীতে মুগডালের বাম্পার ফলন, শ্রমিক সংকট ও তাপদাহে মুগডাল সংগ্রহে হিমশিম কৃষক

আপডেট সময় ১২:১৬:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

 

পটুয়াখালী জেলায় এবার মুগডালের বাম্পার ফলন হয়েছে। উন্নতমানের বীজ ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে দেশের মোট উৎপাদনের বড় একটি অংশ এখান থেকেই আসছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চাহিদা মিটিয়ে ইতোমধ্যে বিদেশেও রপ্তানি শুরু হয়েছে এই ডাল। তবে তীব্র তাপদাহ ও শ্রমিক সংকটে ফসল সংগ্রহে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন কৃষকরা।

এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শুধু পাকা মুগডালের হলুদ ঝিলিক। কৃষকদের ভাষায়, “কালো সোনা”র সমারোহ। পটুয়াখালীর মাটি মুগডাল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। দেশের মোট মুগডালের প্রায় ৪৫ শতাংশই এখান থেকে উৎপাদিত হয়।

পটুয়াখালীর ডাল জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। এবার একরপ্রতি গড় উৎপাদন হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ কেজি পর্যন্ত। গত বছর যেখানে প্রতি মণ মুগডাল ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল, এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার টাকায়।

তবে ফলনের এই সাফল্যের মধ্যেও চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে। অতিরিক্ত গরম ও শ্রমিক সংকটে ফসল ঘরে তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে সকাল-বিকেল নিজ হাতে ডাল তুলে শুকাচ্ছেন উঠানে। দিনের অন্য সময়গুলোতে প্রচণ্ড রোদে কাজ করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

দুই বিঘা জমিতে মুগডাল চাষ করা কৃষক মো. আব্দুল জলিল বলেন, “ফসল ভালো হয়েছে, কিন্তু গরমের কারণে সকাল-বিকেল ছাড়া কাজ করা যাচ্ছে না। শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। যদি সময়মতো উঠাতে না পারি, বর্ষা এলে সব নষ্ট হয়ে যাবে।”

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিয়েছি যাতে তারা ফজরের নামাজের পরে ও বিকেলে কাজ করেন এবং রোদে ছাতা ব্যবহার করেন।”

চলতি বছর পটুয়াখালীতে ৮৮ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে মুগডাল চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ১১৪ মেট্রিক টন, যা গত বছরের তুলনায় ২০ হাজার মেট্রিক টন বেশি।

দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে পটুয়াখালীর এই মুগডাল এখন রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। তবে শ্রমিক সংকট ও বৈরী আবহাওয়ার মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কৃষকের এই সাফল্য কিছুটা ম্লান হয়ে যেতে পারে।