ঢাকা ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করতে পারে: আইএইএ পাকিস্তানে মুষলধারে বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় ২৫ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ১৭ বাংলাদেশ ক্রিকেটকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বিসিবি: আমিনুল ইসলাম বাংলাদেশের জন্য পিআর পদ্ধতির নির্বাচন প্রযোজ্য নয়: সালাহউদ্দিন আহমদ চীন থেকে যুদ্ধবিমান কেনার খবর ভিত্তিহীন, ইরানের কড়া প্রতিবাদ ইসরায়েলি হামলায় ইরানের আইআরজিসি সদর দপ্তরে নিহত হয়েছিল ৪১ জন গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ৮১, ধ্বংসস্তূপে চলছে মরদেহ উদ্ধার মুরাদনগরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ ঘটনায় মূল আসামিসহ গ্রেপ্তার ৫ গাজায় ইসরাইলি অবরোধে অপুষ্টিতে ৬৬ শিশুর মৃত্যু জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ

শক্তিশালী ষড়যন্ত্রের ছায়ায় বেলুচিস্তানে ট্রেন ছিনতাই, রাষ্ট্রীয় শক্তির জড়িত থাকা নিয়ে সন্দেহ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৭:২৬:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
  • / 48

ছবি সংগৃহীত

 

আধুনিক ইতিহাসে ট্রেন ছিনতাইয়ের ঘটনা বিরল। তবে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে সম্প্রতি সংঘটিত ট্রেন ছিনতাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার পেছনে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) দায় স্বীকার করলেও, বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি বৃহত্তর কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ হতে পারে।

বিএলএর গেরিলা যুদ্ধের কৌশল মূলত ছোট পরিসরে নাশকতা, আইইডি বিস্ফোরণ ও বিচ্ছিন্ন হামলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অথচ চলন্ত ট্রেন ছিনতাই একটি অত্যন্ত জটিল ও সুসমন্বিত অপারেশন, যা নিখুঁত পরিকল্পনা, উন্নত গোয়েন্দা তথ্য ও শক্তিশালী লজিস্টিক সহায়তা ছাড়া সম্ভব নয়।

জনপদ থেকে বহু দূরে, একটি সুড়ঙ্গের মধ্যে চলন্ত ট্রেন ছিনতাই করা কেবল গেরিলা পন্থায় সম্ভব নয়। এটি বাস্তবায়নে অস্ত্র, বিস্ফোরক, প্রশিক্ষণ ও সামরিক কৌশলগত সহায়তা প্রয়োজন, যা সাধারণত রাষ্ট্রীয় শক্তির সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়। ফলে এই ঘটনায় বাইরের শক্তির সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত মিলছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রেনের প্রকৃত অবস্থান নির্ধারণ ও হামলার সময় নির্ধারণ করতে উচ্চ পর্যায়ের গোয়েন্দা তথ্য প্রয়োজন, যা বিএলএর একার পক্ষে সংগ্রহ করা কঠিন। সাধারণত রাষ্ট্রীয় শক্তির কাছে উন্নত প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট নজরদারি ও সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স থাকে, যা এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়ক হতে পারে।

বিএলএ দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালালেও, এত উন্নত কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সক্ষমতা কিংবা সুসজ্জিত সামরিক লজিস্টিকসের ব্যবহার আগে দেখা যায়নি। তাই অনেকেই মনে করছেন, এই অপারেশনে কোনো রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। বেলুচিস্তানের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলো মূলত স্থানীয় তথ্যের ওপর নির্ভরশীল। অথচ জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাইয়ের ঘটনা এমন দক্ষতা ও পূর্বপ্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়, যা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের শক্তির উপস্থিতি বোঝায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা শুধু বিচ্ছিন্নতাবাদী লড়াইয়ের অংশ নয়, বরং এটি বৃহত্তর ভূরাজনৈতিক পরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো অনেক সময় রাষ্ট্রীয় শক্তির গোপন প্রক্সি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা এই ঘটনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে।

বিএলএ দায় স্বীকার করলেও, তারা পরে পিছিয়ে আসে, যা ইঙ্গিত দেয় বড় কোনো পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা শুধু একটি মুখোশমাত্র। এ ঘটনায় প্রকৃত পরিকল্পনাকারীরা কারা, তা এখনো অজানা, তবে এটি যে শুধুমাত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী হামলা নয়, তা নিশ্চিত।

নিউজটি শেয়ার করুন

শক্তিশালী ষড়যন্ত্রের ছায়ায় বেলুচিস্তানে ট্রেন ছিনতাই, রাষ্ট্রীয় শক্তির জড়িত থাকা নিয়ে সন্দেহ

আপডেট সময় ০৭:২৬:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

 

আধুনিক ইতিহাসে ট্রেন ছিনতাইয়ের ঘটনা বিরল। তবে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে সম্প্রতি সংঘটিত ট্রেন ছিনতাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার পেছনে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) দায় স্বীকার করলেও, বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি বৃহত্তর কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ হতে পারে।

বিএলএর গেরিলা যুদ্ধের কৌশল মূলত ছোট পরিসরে নাশকতা, আইইডি বিস্ফোরণ ও বিচ্ছিন্ন হামলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অথচ চলন্ত ট্রেন ছিনতাই একটি অত্যন্ত জটিল ও সুসমন্বিত অপারেশন, যা নিখুঁত পরিকল্পনা, উন্নত গোয়েন্দা তথ্য ও শক্তিশালী লজিস্টিক সহায়তা ছাড়া সম্ভব নয়।

জনপদ থেকে বহু দূরে, একটি সুড়ঙ্গের মধ্যে চলন্ত ট্রেন ছিনতাই করা কেবল গেরিলা পন্থায় সম্ভব নয়। এটি বাস্তবায়নে অস্ত্র, বিস্ফোরক, প্রশিক্ষণ ও সামরিক কৌশলগত সহায়তা প্রয়োজন, যা সাধারণত রাষ্ট্রীয় শক্তির সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়। ফলে এই ঘটনায় বাইরের শক্তির সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত মিলছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রেনের প্রকৃত অবস্থান নির্ধারণ ও হামলার সময় নির্ধারণ করতে উচ্চ পর্যায়ের গোয়েন্দা তথ্য প্রয়োজন, যা বিএলএর একার পক্ষে সংগ্রহ করা কঠিন। সাধারণত রাষ্ট্রীয় শক্তির কাছে উন্নত প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট নজরদারি ও সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স থাকে, যা এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়ক হতে পারে।

বিএলএ দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালালেও, এত উন্নত কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সক্ষমতা কিংবা সুসজ্জিত সামরিক লজিস্টিকসের ব্যবহার আগে দেখা যায়নি। তাই অনেকেই মনে করছেন, এই অপারেশনে কোনো রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। বেলুচিস্তানের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলো মূলত স্থানীয় তথ্যের ওপর নির্ভরশীল। অথচ জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাইয়ের ঘটনা এমন দক্ষতা ও পূর্বপ্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়, যা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের শক্তির উপস্থিতি বোঝায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা শুধু বিচ্ছিন্নতাবাদী লড়াইয়ের অংশ নয়, বরং এটি বৃহত্তর ভূরাজনৈতিক পরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো অনেক সময় রাষ্ট্রীয় শক্তির গোপন প্রক্সি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা এই ঘটনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে।

বিএলএ দায় স্বীকার করলেও, তারা পরে পিছিয়ে আসে, যা ইঙ্গিত দেয় বড় কোনো পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা শুধু একটি মুখোশমাত্র। এ ঘটনায় প্রকৃত পরিকল্পনাকারীরা কারা, তা এখনো অজানা, তবে এটি যে শুধুমাত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী হামলা নয়, তা নিশ্চিত।