ঢাকা ০৭:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুন্সিগঞ্জে প্রতিপক্ষের গুলিতে নৌ ডাকাত নিহত

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৭:২৩:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
  • / 2

ছবি: সংগৃহীত

 

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় আবদুল মান্নান (৪৫) নামের এক ডাকাত নিহত খুন হয়েছেন। এ ছাড়া আরও ৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের বড় কালীপুরা গ্রামসংলগ্ন মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশের দাবি, বালুমহালের দ্বন্দ্বের জেরে ‘নৌ ডাকাত’ নয়ন ও পিয়াসের পক্ষের হামলায় আবদুল মান্নান নিহত হয়েছেন। নিহত মান্নানের বিরুদ্ধে হত্যা, মাদকসহ ৬ টি মামলা রয়েছে। তিনি একই উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের জৈষ্ঠীতলা এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে। আহতরা হলেন হৃদয় (২৮), আতিকুর (৩০), হাসিব (৩৪), শ্যামল (৩০), নয়ন (২৫) ও হামীম (৩২)। হতাহত সবাই মান্নানের সহযোগী। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক। হৃদয়কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে মেঘনা নদীর বড় কালীপুরা এলাকায় বালুমহালের পাশে কয়েকজন যুবক সশস্ত্র ও হেলমেট পরা অবস্থায় একটি স্পিডবোটে পাহারা দিচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টা-১০টার মধ্যে ৬–৭ জনকে একটি ট্রলারে নিয়ে ওই এলাকায় যান মান্নান। ওই সময় মান্নান ও তাঁর লোকদের ধাওয়া দেন সশস্ত্র যুবকেরা। একপর্যায়ে মান্নানের পক্ষের লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরই ট্রলারের ওপর লুটিয়ে পড়েন মান্নান। পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন হৃদয়। বাকিরা ট্রলার থেকে লাফিয়ে পড়েন। তবে তাঁদের গায়ে ছররা গুলি লাগে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, গজারিয়ার ষোলআনি ও কালীপুরা এলাকায় বৈধ বালুমহাল আছে। সেখান থেকে মান্নান প্রায় সময় লোকজন নিয়ে টাকাপয়সা আনতেন। গুয়াগাছিয়া কালীপুরা এলাকায় রাতে অবৈধভাবে বালু তুলত নয়ন ও পিয়াসদের একটি দল। সেখানেও টাকা চাইতেন মান্নান। অবৈধ মহালের কারণে বৈধ বালুমহালে কম বিক্রি হতো। সব মিলিয়ে বৈধ মহাল, অবৈধ মহাল ও আবদুল মান্নান পক্ষের মধ্যে ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব চলছিল।

এদিকে মান্নানকে কয়েক দিন ধরে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে জানান তাঁর স্ত্রী সুমি বেগম। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে মান্নান আমাকে বলেছিল, কারা যেন তাকে মেরে ফেলতে চায়। আজ সকালে আমরা খবর পেলাম, মান্নানকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা ধারণা করছি, স্থানীয় সৈকত হোসেন, জুয়েল ও গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের কুখ্যাত ডাকাত নয়ন-পিয়াস বাহিনীর লোকজন ঘটনাটি ঘটিয়েছে।’

আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে গজারিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মান্নানের বুকে দুটি গুলির চিহ্ন আছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোসাও উদ্ধার করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে খবর দেওয়া হয়েছে, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন।

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলম বলেন, মান্নান গজারিয়া উপজেলার একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৬টি মামলা আছে। বালু ব্যবসার দ্বন্দ্ব নিয়ে হত্যাটি হতে পারে। এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

বিষয় :

নিউজটি শেয়ার করুন

মুন্সিগঞ্জে প্রতিপক্ষের গুলিতে নৌ ডাকাত নিহত

আপডেট সময় ০৭:২৩:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

 

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় আবদুল মান্নান (৪৫) নামের এক ডাকাত নিহত খুন হয়েছেন। এ ছাড়া আরও ৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের বড় কালীপুরা গ্রামসংলগ্ন মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশের দাবি, বালুমহালের দ্বন্দ্বের জেরে ‘নৌ ডাকাত’ নয়ন ও পিয়াসের পক্ষের হামলায় আবদুল মান্নান নিহত হয়েছেন। নিহত মান্নানের বিরুদ্ধে হত্যা, মাদকসহ ৬ টি মামলা রয়েছে। তিনি একই উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের জৈষ্ঠীতলা এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে। আহতরা হলেন হৃদয় (২৮), আতিকুর (৩০), হাসিব (৩৪), শ্যামল (৩০), নয়ন (২৫) ও হামীম (৩২)। হতাহত সবাই মান্নানের সহযোগী। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক। হৃদয়কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে মেঘনা নদীর বড় কালীপুরা এলাকায় বালুমহালের পাশে কয়েকজন যুবক সশস্ত্র ও হেলমেট পরা অবস্থায় একটি স্পিডবোটে পাহারা দিচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টা-১০টার মধ্যে ৬–৭ জনকে একটি ট্রলারে নিয়ে ওই এলাকায় যান মান্নান। ওই সময় মান্নান ও তাঁর লোকদের ধাওয়া দেন সশস্ত্র যুবকেরা। একপর্যায়ে মান্নানের পক্ষের লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরই ট্রলারের ওপর লুটিয়ে পড়েন মান্নান। পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন হৃদয়। বাকিরা ট্রলার থেকে লাফিয়ে পড়েন। তবে তাঁদের গায়ে ছররা গুলি লাগে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, গজারিয়ার ষোলআনি ও কালীপুরা এলাকায় বৈধ বালুমহাল আছে। সেখান থেকে মান্নান প্রায় সময় লোকজন নিয়ে টাকাপয়সা আনতেন। গুয়াগাছিয়া কালীপুরা এলাকায় রাতে অবৈধভাবে বালু তুলত নয়ন ও পিয়াসদের একটি দল। সেখানেও টাকা চাইতেন মান্নান। অবৈধ মহালের কারণে বৈধ বালুমহালে কম বিক্রি হতো। সব মিলিয়ে বৈধ মহাল, অবৈধ মহাল ও আবদুল মান্নান পক্ষের মধ্যে ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব চলছিল।

এদিকে মান্নানকে কয়েক দিন ধরে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে জানান তাঁর স্ত্রী সুমি বেগম। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে মান্নান আমাকে বলেছিল, কারা যেন তাকে মেরে ফেলতে চায়। আজ সকালে আমরা খবর পেলাম, মান্নানকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা ধারণা করছি, স্থানীয় সৈকত হোসেন, জুয়েল ও গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের কুখ্যাত ডাকাত নয়ন-পিয়াস বাহিনীর লোকজন ঘটনাটি ঘটিয়েছে।’

আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে গজারিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মান্নানের বুকে দুটি গুলির চিহ্ন আছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোসাও উদ্ধার করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে খবর দেওয়া হয়েছে, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন।

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলম বলেন, মান্নান গজারিয়া উপজেলার একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৬টি মামলা আছে। বালু ব্যবসার দ্বন্দ্ব নিয়ে হত্যাটি হতে পারে। এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।