হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে লিবিয়া মানব পাচার চক্রের মূলহোতা আটক
পুলিশ ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লিবিয়া মানব পাচার চক্রের মূলহোতা মো. ফখরুদ্দিনকে আটক করেছে। একই ঘটনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ট্রাফিক হেলপার শওকত আলীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি পাচারকারী চক্রকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করছিলেন।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বিমানবন্দর থানা পুলিশ তাঁদের আটক করে। বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাসলিমা আক্তার জানিয়েছেন, এ ঘটনায় এক ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফখরুদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের লিবিয়ায় পাচার করে চক্র পরিচালনা করছিলেন। প্রলুব্ধ করে সাধারণ মানুষকে বিদেশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরে তাঁদের জিম্মি করে নির্যাতন চালানো হতো। মুক্তিপণ আদায়ের পরও অনেকে স্বজনদের কাছে ফিরতে পারেননি।
ফখরুদ্দিন গতকাল সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটে কায়রো থেকে ঢাকায় অবতরণ করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁকে বিমানবন্দরেই আটক করে। তাঁর বিরুদ্ধে আগেও একাধিক অভিযোগ থাকলেও, এবারই প্রথম আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেন তিনি।
এদিকে, একই চক্রের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ট্রাফিক হেলপার শওকত আলীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি পাচার চক্রের সদস্যদের নিরাপদে পালিয়ে যেতে সহায়তা করতেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ গভীর তদন্ত চালাচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে সাধারণ মানুষকে বিদেশে উচ্চ বেতনের চাকরির স্বপ্ন দেখিয়ে পাচার করা হয়। পরে লিবিয়ায় আটকে রেখে তাদের ওপর চালানো হয় ভয়াবহ নির্যাতন।
পুলিশ বলছে, এই চক্রের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগীদের সহায়তায় নতুন তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।
মানব পাচারের মতো ভয়ংকর অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সাধারণ মানুষকে বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তারা প্রতারকের খপ্পরে না পড়ে।