কিরগিজস্তানে প্রতারণার শিকার হয়ে দেশে ফিরলেন ১৮০ বাংলাদেশি

- আপডেট সময় ০১:৩৭:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / 16
গার্মেন্টস ও নির্মাণ খাতে ভালো বেতনের চাকরির আশায় কিরগিজস্তানে গিয়ে কাজ না পাওয়ার ফলে প্রতারণার শিকার হয়েছেন ১৮০ জন বাংলাদেশি নাগরিক। বিশেষ একটি ফ্লাইটে তারা বিশকেক থেকে দেশে ফিরেছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোরে তারা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এই প্রক্রিয়া সমন্বয়ের মাধ্যমে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বিদেশ থেকে ফেরত আসা এসব নাগরিককে বিমানবন্দরে জরুরি সহায়তা ও অর্থ প্রদান করা হয়।
ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান জানান, বিদেশে বেশি বেতনের কাজের লোভ দেখিয়ে তাদের কিরগিজস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে গিয়ে অনেকেই কাজ পাননি, তাই নথিপত্রহীন হয়ে পড়েছেন এবং ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অনেকের পরিবার মুক্তিপণ দিতে বাধ্য হয়েছে।
ফেরত আসা লালমনিরহাটের শহীদুল ইসলাম (৪৫) বলেন, ওয়েল্ডিংয়ের কাজের আশায় তিনি ২০২৪ সালের ৩ জুন বিশকেক পৌঁছান। পরদিনই তার ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যায়। এরপর তিনি সাত মাস বেতন ছাড়া কাজ করেছেন এবং পরে কিরগিজ কর্তৃপক্ষের কাছে ধরা দেন। তিন মাস জেলে থাকার পর তিনি দেশে ফিরেছেন।
শরীয়তপুরের সখীপুরের প্রিন্স মিয়া (২১) বলেন, তাকে ইউরোপ পাঠানোর কথা বলে দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে ১৯ মে বিশকেক পাঠানো হয়। তাকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে সেখানে কিছুদিন কাজ করার পর ইতালি নিয়ে যাওয়া হবে। দালালকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেওয়ার পর তিনি ৪৪ দিন জেলে আটক ছিলেন।
কুষ্টিয়ার মিরপুরের মো. মিলন আলী (৩৮) জানান, ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন, কিন্তু নিয়োগকর্তার কাছ থেকে কোনো সহায়তা পাননি। টানা চার মাস বেতন না পাওয়ায় তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ধরা দেন। তিন মাসেরও বেশি সময় অনিয়মিত অভিবাসী হিসেবে সেখানকার কারাগারে ছিলেন এবং তিনি ও তার সঙ্গীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে।
ব্র্যাক জানায়, বিদেশ থেকে ফেরত আসা নাগরিকদের জরুরি সহায়তার জন্য গত আট বছর ধরে ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টার কাজ করছে। সিভিল এভিয়েশন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক এবং এপিবিএনসহ অন্যান্যদের সহযোগিতায় গত আট বছরে ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষের সহায়তা করা হয়েছে। ২০২৪ সালেই ৪০ জন প্রবাসীকে বিভিন্ন দেশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।