ঢাকা ১০:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গা/জা/য় অনির্দিষ্টকাল সেনা রাখার ঘোষণা ই*স*রা*য়ে*লের মানুষের ঢলে মুখরিত ৪০০ বছরের প্রাচীন কুলিকুন্ডার শুঁটকি মেলা দাবি আদায়ে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতেই হবে: প্রধান উপদেষ্টা উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য পোড়ালে কঠোর ব্যবস্থা : হুঁশিয়ারি পরিবেশ উপদেষ্টার ই*স*রা*য়ে*লের ভয়াবহ হামলা গা/জা/য় আরো ২৫ ফিলিস্তিনি নিহত দেশীয় মাছের সুরক্ষা ও উৎপাদন বাড়াতে জোর দিলেন মৎস্য উপদেষ্টা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলা শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে: প্রসিকিউটর আগামী রমজানের আগে নির্বাচন চায় জামায়াত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে তহবিল বন্ধের প্রস্তাব দিল ট্রাম্প প্রশাসন 

মাদারীপুরে বাজি ফাটানো নিয়ে আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, এএসপি-ওসি-এসআইসহ আহত অর্ধশতাধিক

খবরের কথা ডেস্ক

ছবি সংগৃহীত

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় বাজি ফাটানোকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জেরে ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর গ্রামের বাসিন্দারা। রোববার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টার এ সংঘর্ষে বিস্ফোরিত হয় একাধিক ককটেল, ভাঙচুর হয় দোকানপাট, আর আহত হন পুলিশসহ অর্ধশতাধিক মানুষ।

সংঘর্ষের শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টায় রাজৈর উপজেলা সদরের বেপারীপাড়া মোড়ে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি হয় উভয় পক্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে পুলিশ টিয়ারশেল ছোড়ে, কিন্তু তাতেও থামেনি উত্তেজনা। একপর্যায়ে ককটেল বিস্ফোরণ ও দোকানে অগ্নিসংযোগে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, এর আগের দিন শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতেও বাজি ফাটানোকে কেন্দ্র করে প্রায় তিন ঘণ্টা সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রাম। তাতে অন্তত ১০ পুলিশসহ ২৫ জন আহত হন। এরপর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে রোববার দুপুরে উভয় পক্ষকে মীমাংসার টেবিলে বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঠিক পরদিন সকাল ১০টায় বসার কথা থাকলেও সন্ধ্যায় আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়।

বদরপাশা গ্রামের লোকজনের ককটেল বিস্ফোরণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাটে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। অন্তত ১২টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়।

অবশেষে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাত ১০টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। রাজৈর ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আহতদের মধ্যে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, রাজৈর থানার ওসি ও একাধিক পুলিশ সদস্য রয়েছেন। গুরুতর আহত পশ্চিম রাজৈর গ্রামের মেহেদী মীর, রাসেল শেখ, মনোতোষ সাহা ও তাওফিককে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রাত ১২টার দিকে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আবারও উত্তেজনা দেখা দেয়। মজুমদার কান্দি গ্রামের লোকজন মিটিং করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে তারা পুলিশের দুটি পিকআপে হামলা চালায়। এতে এসআই মোস্তফা ও চালক শাহাবুদ্দিন গুরুতর আহত হন।

রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ খান জানান, “সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। সংঘর্ষে পুলিশের সাহসী ভূমিকা ছিল। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০২:২৪:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
৫১২ বার পড়া হয়েছে

মাদারীপুরে বাজি ফাটানো নিয়ে আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, এএসপি-ওসি-এসআইসহ আহত অর্ধশতাধিক

আপডেট সময় ০২:২৪:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় বাজি ফাটানোকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জেরে ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর গ্রামের বাসিন্দারা। রোববার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টার এ সংঘর্ষে বিস্ফোরিত হয় একাধিক ককটেল, ভাঙচুর হয় দোকানপাট, আর আহত হন পুলিশসহ অর্ধশতাধিক মানুষ।

সংঘর্ষের শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টায় রাজৈর উপজেলা সদরের বেপারীপাড়া মোড়ে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি হয় উভয় পক্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে পুলিশ টিয়ারশেল ছোড়ে, কিন্তু তাতেও থামেনি উত্তেজনা। একপর্যায়ে ককটেল বিস্ফোরণ ও দোকানে অগ্নিসংযোগে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, এর আগের দিন শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতেও বাজি ফাটানোকে কেন্দ্র করে প্রায় তিন ঘণ্টা সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রাম। তাতে অন্তত ১০ পুলিশসহ ২৫ জন আহত হন। এরপর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে রোববার দুপুরে উভয় পক্ষকে মীমাংসার টেবিলে বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঠিক পরদিন সকাল ১০টায় বসার কথা থাকলেও সন্ধ্যায় আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়।

বদরপাশা গ্রামের লোকজনের ককটেল বিস্ফোরণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাটে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। অন্তত ১২টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়।

অবশেষে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাত ১০টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। রাজৈর ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আহতদের মধ্যে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, রাজৈর থানার ওসি ও একাধিক পুলিশ সদস্য রয়েছেন। গুরুতর আহত পশ্চিম রাজৈর গ্রামের মেহেদী মীর, রাসেল শেখ, মনোতোষ সাহা ও তাওফিককে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রাত ১২টার দিকে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আবারও উত্তেজনা দেখা দেয়। মজুমদার কান্দি গ্রামের লোকজন মিটিং করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে তারা পুলিশের দুটি পিকআপে হামলা চালায়। এতে এসআই মোস্তফা ও চালক শাহাবুদ্দিন গুরুতর আহত হন।

রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ খান জানান, “সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। সংঘর্ষে পুলিশের সাহসী ভূমিকা ছিল। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।