ঢাকা ১১:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ফরাসি নেতার দাবি: ‘স্ট্যাচু অফ লিবারর্টি ফিরিয়ে দিন’ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা চালের দুটি জাহাজ রোজা অবস্থায় যদি কয়েল বা আগরবাতির ধোঁয়া নাকে যায়, তবে কি রোজা ভঙ্গ হবে? এআই মিথ্যাচার রোধে স্পেনের ঐতিহাসিক আইন: বড় জরিমানার বিধান পিলখানা বিদ্রোহ: বিস্ফোরক মামলায় ২৩৯ আসামির জামিন আদেশ ১০ এপ্রিল আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত হলে প্রতিটি যুদ্ধেই বিজয় অর্জন করা সম্ভব: প্রধান উপদেষ্টা সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় আসছেন মার্কিন অস্ত্র ক্রয় কমিটির প্রধান গ্যারি পিটার্স নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধনী, দ্রুত বিচার ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতকরণের উদ্যোগ: আইন উপদেষ্টা গ্রীষ্ম ও রমজানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিতে বিশেষ নির্দেশনা এক দশক পর ভারত-নিউজিল্যান্ডের ফের মুক্ত বাণিজ্য আলোচনার সূচনা

বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতে আমরা নিরলস কাজ করছি : বাণিজ্য উপদেষ্টা

খবরের কথা ডেস্ক

ছবি: সংগৃহীত

 

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, দেশের অর্থনীতি বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে আমদানি ও রপ্তানির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বাজারের চাহিদার ওপর নির্ভর করে বছরে ৭০ থেকে ৯০ বিলিয়ন ডলার আমদানি হলেও রপ্তানি সাধারণত ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হয়।

তিনি বলেন, “আমরা শুধু রপ্তানিকে নয়, প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে আমদানিকেও সমর্থন করতে চাই, কারণ আমদানি আমাদের অর্থনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।”

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ১৫০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল বাণিজ্য ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে শুল্ক কাঠামো সংস্কার, কাস্টমস ডিউটি পুনর্বিন্যাস এবং বিনিয়োগ সহজীকরণের বিকল্প নেই। কারণ, অর্থনীতিতে টেকসই কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে স্থানীয় বিনিয়োগ ও বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) বৃদ্ধি অপরিহার্য।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে, গত কয়েক বছরে কোনো সুপরিকল্পিত নীতি গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি ন্যূনতম দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও ঘাটতি ছিল। এখন, যখন ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে বাংলাদেশ, তখন বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা যদি বাণিজ্য উদারীকরণ করি, তাহলে স্থানীয় বিনিয়োগ সুরক্ষিত রাখার কৌশলও নিতে হবে, যাতে প্রতিযোগিতার মুখে দেশীয় শিল্পগুলো বিপর্যস্ত না হয়।”

বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ এফটিএ (ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট), পিটিএ (প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট), ইপিএ (ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট) এবং সিইপিএ (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট) নিয়ে কাজ করছে। তবে এই চুক্তিগুলো বাস্তবায়ন করা সহজ নয়, কারণ এতে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ জড়িত। তিনি উল্লেখ করেন, “আমাদের অর্থনৈতিক কূটনীতির যথাযথ ব্যবহার করতে হবে, যাতে বাণিজ্য সুবিধা নিশ্চিত হয়।”

২০২০ সালে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে পিটিএ স্বাক্ষরিত হলেও কার্যত এটি কোনো নতুন সুবিধা বয়ে আনেনি। বরং উল্টো বাণিজ্যের পরিমাণ কমে গেছে। শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “এটি শুধু একটি চুক্তির শিরোনাম ছিল, যার বাস্তব প্রভাব তেমন কিছুই দেখা যায়নি।” তিনি বলেন, “আমরা পাঁচ বছর সময় পেলেও তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারিনি। এখন সময় এসেছে বাস্তবভিত্তিক নীতিমালা গ্রহণের, যাতে আমাদের অর্থনীতি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে।”

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এলডিসি উত্তরণের পর বাণিজ্য সুবিধা যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে জন্য সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা মসৃণ উত্তরণ কৌশল (এসটিএস) বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাণিজ্য ব্যবস্থাপনা ও সক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করছি।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এখন আর শুধু চুক্তির কাগজে স্বাক্ষর করেই বসে থাকতে পারে না, বরং বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে দ্রুত কার্যকর নীতি গ্রহণের এখনই সময়।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৩:৩৯:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
৫১১ বার পড়া হয়েছে

বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতে আমরা নিরলস কাজ করছি : বাণিজ্য উপদেষ্টা

আপডেট সময় ০৩:৩৯:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

 

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, দেশের অর্থনীতি বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে আমদানি ও রপ্তানির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বাজারের চাহিদার ওপর নির্ভর করে বছরে ৭০ থেকে ৯০ বিলিয়ন ডলার আমদানি হলেও রপ্তানি সাধারণত ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হয়।

তিনি বলেন, “আমরা শুধু রপ্তানিকে নয়, প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে আমদানিকেও সমর্থন করতে চাই, কারণ আমদানি আমাদের অর্থনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।”

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ১৫০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল বাণিজ্য ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে শুল্ক কাঠামো সংস্কার, কাস্টমস ডিউটি পুনর্বিন্যাস এবং বিনিয়োগ সহজীকরণের বিকল্প নেই। কারণ, অর্থনীতিতে টেকসই কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে স্থানীয় বিনিয়োগ ও বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) বৃদ্ধি অপরিহার্য।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে, গত কয়েক বছরে কোনো সুপরিকল্পিত নীতি গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি ন্যূনতম দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও ঘাটতি ছিল। এখন, যখন ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে বাংলাদেশ, তখন বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা যদি বাণিজ্য উদারীকরণ করি, তাহলে স্থানীয় বিনিয়োগ সুরক্ষিত রাখার কৌশলও নিতে হবে, যাতে প্রতিযোগিতার মুখে দেশীয় শিল্পগুলো বিপর্যস্ত না হয়।”

বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ এফটিএ (ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট), পিটিএ (প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট), ইপিএ (ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট) এবং সিইপিএ (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট) নিয়ে কাজ করছে। তবে এই চুক্তিগুলো বাস্তবায়ন করা সহজ নয়, কারণ এতে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ জড়িত। তিনি উল্লেখ করেন, “আমাদের অর্থনৈতিক কূটনীতির যথাযথ ব্যবহার করতে হবে, যাতে বাণিজ্য সুবিধা নিশ্চিত হয়।”

২০২০ সালে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে পিটিএ স্বাক্ষরিত হলেও কার্যত এটি কোনো নতুন সুবিধা বয়ে আনেনি। বরং উল্টো বাণিজ্যের পরিমাণ কমে গেছে। শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “এটি শুধু একটি চুক্তির শিরোনাম ছিল, যার বাস্তব প্রভাব তেমন কিছুই দেখা যায়নি।” তিনি বলেন, “আমরা পাঁচ বছর সময় পেলেও তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারিনি। এখন সময় এসেছে বাস্তবভিত্তিক নীতিমালা গ্রহণের, যাতে আমাদের অর্থনীতি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে।”

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এলডিসি উত্তরণের পর বাণিজ্য সুবিধা যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে জন্য সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা মসৃণ উত্তরণ কৌশল (এসটিএস) বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাণিজ্য ব্যবস্থাপনা ও সক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করছি।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এখন আর শুধু চুক্তির কাগজে স্বাক্ষর করেই বসে থাকতে পারে না, বরং বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে দ্রুত কার্যকর নীতি গ্রহণের এখনই সময়।”