ঢাকা ০২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গুপ্তচরবৃত্তিতে মৃত্যুদণ্ড ও সম্পত্তি জব্দের আইন পাস করলো ইরান ময়মনসিংহে বাড়ি থেকে একই পরিবারের মা ও দুই শিশুর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার পুতিন দিনের বেলায় সুন্দর কথা বলেন, রাতে সবাইকে বোমা মারেন: ট্রাম্প রাজধানীতে বাথরুমে ঝর্ণার সাথে ওড়না পেঁচানো গৃহকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার শীর্ষ নেতাদের চরিত্রহননের অপচেষ্টা চলছে: মির্জা ফখরুল নারীদের সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠা রাষ্ট্রের দায়িত্ব: ড. আলী রীয়াজ সায়মা ও জয় পরিচালিত ফাউন্ডেশনের অনুদান ও আয়কর নথি চেয়ে এনবিআরে চিঠি ইংল্যান্ডের বিমানবন্দরে ছোট বিমান বিধ্বস্ত, ফ্লাইট চলাচল বন্ধ বান্দরবানে ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে একই পরিবারের ২ জনসহ ৩ নারী নিহত ইতিহাস গড়লো বিটকয়েন, প্রথমবারের মতো মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার ডলার ছাড়াল

পাহাড়ে সরিষা ফুলের মধুর ব্যাপক ফলন, টেকনাফের চাকমা কৃষকদের সাফল্য

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:০৮:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
  • / 47

ছবি সংগৃহীত

 

কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ি জমিতে প্রথমবারের মতো সরিষা চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছেন চাকমা কৃষকেরা। মৌমাছির সহায়তায় আহরিত খাঁটি মধু বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা।

টেকনাফের হোয়াইক্যং হরিখোলা এলাকায় চাকমা পল্লির ৮ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে এ বছর সরিষা চাষ শুরু হয়। নারী-পুরুষ মিলে দিনরাত জমিতে কাজ করছেন। বিশেষ করে নারীরা সক্রিয়ভাবে সরিষার পরিচর্যা ও মধু সংগ্রহের কাজে যুক্ত রয়েছেন। ক্ষেতের চারপাশে বসানো হয়েছে মৌ-বাক্স, যেখানে মৌমাছিরা সরিষার ফুল থেকে রস সংগ্রহ করে মধু উৎপাদন করছে। জানা গেছে, প্রতিটি বাক্স থেকে দুই মাসে ১০ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক তাইনচাও চাকমা বলেন, ‘‘ধান ও শাকসবজির পর এ বছর সরিষা চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছি। লক্ষ্য একদম খাঁটি ও ভালো মানের মধু উৎপাদন করা। আমি ৩৩ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছি এবং সেখান থেকে প্রথমবারের মতো মধু সংগ্রহ করছি। বর্তমানে ১ কেজি মধুর বাজারমূল্য প্রায় ২ হাজার টাকা, যা আমাদের জন্য বেশ লাভজনক।’’

এ বিষয়ে হোয়াইক্যংয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সরুওয়ার কাদের জয় জানান, ‘‘এ বছর রবি মৌসুমে চাকমা পল্লিতে ৮ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। একটি মৌ-বাক্স থেকে দুই মাসে প্রায় ১০-১২ কেজি মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। প্রতিটি বাক্সে প্রায় সাতটি চাক থাকে, যেখানে মৌমাছিরা ফুলের রস জমা রাখে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘টেকনাফ উপজেলায় প্রথমবারের মতো সরিষার সাথে মধু চাষের এই সফল উদ্যোগ চাকমা কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। প্রায় ২০-২৫টি গ্রুপ একসঙ্গে কাজ করছে, যেখানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। এ প্রকল্পে চাকমা যুবকেরাও এগিয়ে আসছেন, যা ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে মধু উৎপাদনকে আরও প্রসারিত করবে।’’

সরিষা চাষ ও মধু উৎপাদনের এই যুগান্তকারী উদ্যোগ পাহাড়ি এলাকায় কৃষির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। স্থানীয় কৃষকেরা আশা করছেন, সরকারের সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে এ উদ্যোগ আরও বৃহৎ পরিসরে সম্প্রসারিত হবে, যা চাকমা সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

পাহাড়ে সরিষা ফুলের মধুর ব্যাপক ফলন, টেকনাফের চাকমা কৃষকদের সাফল্য

আপডেট সময় ০৪:০৮:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

 

কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ি জমিতে প্রথমবারের মতো সরিষা চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছেন চাকমা কৃষকেরা। মৌমাছির সহায়তায় আহরিত খাঁটি মধু বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা।

টেকনাফের হোয়াইক্যং হরিখোলা এলাকায় চাকমা পল্লির ৮ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে এ বছর সরিষা চাষ শুরু হয়। নারী-পুরুষ মিলে দিনরাত জমিতে কাজ করছেন। বিশেষ করে নারীরা সক্রিয়ভাবে সরিষার পরিচর্যা ও মধু সংগ্রহের কাজে যুক্ত রয়েছেন। ক্ষেতের চারপাশে বসানো হয়েছে মৌ-বাক্স, যেখানে মৌমাছিরা সরিষার ফুল থেকে রস সংগ্রহ করে মধু উৎপাদন করছে। জানা গেছে, প্রতিটি বাক্স থেকে দুই মাসে ১০ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক তাইনচাও চাকমা বলেন, ‘‘ধান ও শাকসবজির পর এ বছর সরিষা চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছি। লক্ষ্য একদম খাঁটি ও ভালো মানের মধু উৎপাদন করা। আমি ৩৩ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছি এবং সেখান থেকে প্রথমবারের মতো মধু সংগ্রহ করছি। বর্তমানে ১ কেজি মধুর বাজারমূল্য প্রায় ২ হাজার টাকা, যা আমাদের জন্য বেশ লাভজনক।’’

এ বিষয়ে হোয়াইক্যংয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সরুওয়ার কাদের জয় জানান, ‘‘এ বছর রবি মৌসুমে চাকমা পল্লিতে ৮ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। একটি মৌ-বাক্স থেকে দুই মাসে প্রায় ১০-১২ কেজি মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। প্রতিটি বাক্সে প্রায় সাতটি চাক থাকে, যেখানে মৌমাছিরা ফুলের রস জমা রাখে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘টেকনাফ উপজেলায় প্রথমবারের মতো সরিষার সাথে মধু চাষের এই সফল উদ্যোগ চাকমা কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। প্রায় ২০-২৫টি গ্রুপ একসঙ্গে কাজ করছে, যেখানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। এ প্রকল্পে চাকমা যুবকেরাও এগিয়ে আসছেন, যা ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে মধু উৎপাদনকে আরও প্রসারিত করবে।’’

সরিষা চাষ ও মধু উৎপাদনের এই যুগান্তকারী উদ্যোগ পাহাড়ি এলাকায় কৃষির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। স্থানীয় কৃষকেরা আশা করছেন, সরকারের সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে এ উদ্যোগ আরও বৃহৎ পরিসরে সম্প্রসারিত হবে, যা চাকমা সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।