টেকনাফে সূর্যমুখী চাষে নতুন সম্ভাবনা, কৃষকদের স্বপ্ন তেল উৎপাদন
কক্সবাজারের টেকনাফে সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। সূর্যমুখীর বীজ থেকে তেল উৎপাদনের নতুন সম্ভাবনা দেখে চাষিরা এই সোনালি ফসলে ঝুঁকছেন। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় উৎপাদিত সূর্যমুখী তেল বাজারে কেজিপ্রতি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা কৃষকদের জন্য লাভজনক বলে মনে করা হচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে টেকনাফ সদর, সাবরাং, হ্নীলা, হোয়াইক্যং ও বাহারছড়া ইউনিয়নে প্রায় ৪ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। জানুয়ারিতে বীজ বপন করে ফেব্রুয়ারির শেষ বা মার্চের শুরুতেই ফসল তোলা যায়। প্রান্তিক কৃষকরা মরিচ, আলু ও শাকসবজির পাশাপাশি এখন সূর্যমুখী চাষেও আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
দক্ষিণ লম্বরীর কৃষক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমি এবার ৪০ শতক জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। কৃষি বিভাগ থেকে বীজ, সার ও কারিগরি সহায়তা পেয়েছি। তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো স্থানীয়ভাবে তেল উৎপাদনের জন্য আধুনিক মেশিনের অভাব।’ তিনি মনে করেন, মেশিন থাকলে আরও বেশি কৃষক সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হতেন।
হোয়াইক্যংয়ের আরেক কৃষক আলী আহমেদ জানান, প্রথমবারের মতো ধান, আলু ও সবজির পাশাপাশি সূর্যমুখী চাষ করেছেন। যদিও আগে অভিজ্ঞতা ছিল না, তবে অন্য চাষিদের কাছ থেকে শিখে ও কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ভালো ফল পাচ্ছেন। ‘যদি স্থানীয়ভাবে তেল উৎপাদন সম্ভব হয়, তাহলে কৃষকেরা আরও বেশি লাভবান হবে,’ বলেন তিনি।
টেকনাফ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকিরুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকার মাটি ও জলবায়ু সূর্যমুখী চাষের জন্য উপযুক্ত। কৃষকেরা ইতোমধ্যে এ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন, আমরাও তাদের পাশে আছি।’ তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে কৃষকদের সুবিধার্থে টেকনাফেই আধুনিক তেল উৎপাদনের মেশিন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
কৃষি বিভাগের এই উদ্যোগ সফল হলে, টেকনাফে সূর্যমুখী চাষ আরও জনপ্রিয় হবে এবং কৃষকদের নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।