০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
ট্রাম্পের উপস্থিতিতে সিনারকে হারিয়ে ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন আলকারাজ ডিএমপির অভ্যন্তরীণ রদবদল: ৫ কর্মকর্তার নতুন দায়িত্ব নির্বাচনকালে তথ্যে প্রবাহে গণমাধ্যমকে বাধা দেওয়া হবে না: মাহফুজ আলম পৃথিবীর কোনো শক্তি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না: প্রেস সচিব মৌলভীবাজারে বাগানের কেয়ারটেকারকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা ভোটের পরিবেশ শতভাগ অনুকূলে : ইসি আনোয়ারুল বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণে লেবাননের মন্ত্রিসভার পরিকল্পনার ধাপসমূহ ২০২৬ সালে মায়ামিতে অনুষ্ঠিত হবে জি-২০ সম্মেলন: ট্রাম্প পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী

সাতক্ষীরার বাগদা চিংড়িতে মরক, কালীগঞ্জের ঘেরে দুর্দশায় চাষিরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:২১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / 74

ছবি সংগৃহীত

 

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে শুরুতেই ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বাগদা চিংড়ি চাষ। হঠাৎ করে বিভিন্ন ঘেরে শুরু হয়েছে মড়ক। পানিতে ভেসে উঠছে মরা চিংড়ি, চারদিকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। চাষিরা নানাভাবে প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও কোনো ওষুধই কাজ করছে না।

কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার ঘের রয়েছে ১৬০০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে প্রায় ৬ হাজার মেট্রিক টন বাগদা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই ভাইরাসজনিত মড়কে সেই লক্ষ্য এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বেড়াখালী গ্রামের চাষি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘ঋণের টাকা দিয়ে চাষ শুরু করেছিলাম। হঠাৎ করে সব মাছ মরে গেছে। এখন মাথায় হাত, কিছুই করার নেই।’ শ্রীকলা গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দফায় ঘেরে পোনা ছেড়েছিলাম। দুইবারই সব মাছ মরে গেছে। এখন শুধু পচা গন্ধ।’

চাষি রাজিউন আহম্মেদ বলেন, ‘তিনটি ঘেরে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার পোনা ছেড়েছিলাম। বেশিরভাগই মারা গেছে। আশপাশের সব ঘেরেই একই অবস্থা।’

চাষিরা জানান, লোকাল মার্কেট থেকে কেনা পোনা, ঘেরে ভাইরাসবাহিত পানি প্রবেশ, এবং ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার না করায় দ্রুত ছড়িয়েছে এই মড়ক। অনেকে এখন ঘের শুকিয়ে আবার নতুন করে চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু বিনিয়োগ করা পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা তারা।

কালীগঞ্জের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তৌকির আহমেদ বলেন, ‘চাষিরা ঘেরের পানি পরিবর্তনের সময় সতর্কতা মানেননি। ভাইরাসযুক্ত পানি খালে ছেড়ে দেওয়ার পর সেটি ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য ঘেরে। ভাইরাস রোধে কোনো কার্যকর ওষুধ নেই। অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে চাষিরা মাছ ছাড়ার আগে পানি ও মাটি পরীক্ষা করতে মৎস্য অফিসে এলে পরামর্শ দেওয়া যাবে।’

বাগদা চাষে এ ধরণের সংকট শুধু অর্থনৈতিক নয়, একটি সম্ভাবনাময় খাতের ওপরও বড় ধাক্কা। দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই মড়ক দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

সাতক্ষীরার বাগদা চিংড়িতে মরক, কালীগঞ্জের ঘেরে দুর্দশায় চাষিরা

আপডেট সময় ০৫:২১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

 

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে শুরুতেই ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বাগদা চিংড়ি চাষ। হঠাৎ করে বিভিন্ন ঘেরে শুরু হয়েছে মড়ক। পানিতে ভেসে উঠছে মরা চিংড়ি, চারদিকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। চাষিরা নানাভাবে প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও কোনো ওষুধই কাজ করছে না।

কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার ঘের রয়েছে ১৬০০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে প্রায় ৬ হাজার মেট্রিক টন বাগদা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই ভাইরাসজনিত মড়কে সেই লক্ষ্য এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বেড়াখালী গ্রামের চাষি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘ঋণের টাকা দিয়ে চাষ শুরু করেছিলাম। হঠাৎ করে সব মাছ মরে গেছে। এখন মাথায় হাত, কিছুই করার নেই।’ শ্রীকলা গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দফায় ঘেরে পোনা ছেড়েছিলাম। দুইবারই সব মাছ মরে গেছে। এখন শুধু পচা গন্ধ।’

চাষি রাজিউন আহম্মেদ বলেন, ‘তিনটি ঘেরে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার পোনা ছেড়েছিলাম। বেশিরভাগই মারা গেছে। আশপাশের সব ঘেরেই একই অবস্থা।’

চাষিরা জানান, লোকাল মার্কেট থেকে কেনা পোনা, ঘেরে ভাইরাসবাহিত পানি প্রবেশ, এবং ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার না করায় দ্রুত ছড়িয়েছে এই মড়ক। অনেকে এখন ঘের শুকিয়ে আবার নতুন করে চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু বিনিয়োগ করা পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা তারা।

কালীগঞ্জের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তৌকির আহমেদ বলেন, ‘চাষিরা ঘেরের পানি পরিবর্তনের সময় সতর্কতা মানেননি। ভাইরাসযুক্ত পানি খালে ছেড়ে দেওয়ার পর সেটি ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য ঘেরে। ভাইরাস রোধে কোনো কার্যকর ওষুধ নেই। অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে চাষিরা মাছ ছাড়ার আগে পানি ও মাটি পরীক্ষা করতে মৎস্য অফিসে এলে পরামর্শ দেওয়া যাবে।’

বাগদা চাষে এ ধরণের সংকট শুধু অর্থনৈতিক নয়, একটি সম্ভাবনাময় খাতের ওপরও বড় ধাক্কা। দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই মড়ক দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।