ঢাকা ০৯:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
নির্বাচন করলে তফসিলের আগেই উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দেব: আসিফ মাহমুদ রাজনীতি থেকে মাইনাস হবে, যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে: সালাহউদ্দিন ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর মডেলের প্রস্তাব ডিএমপি আবারো রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে যান চলাচল বন্ধ, যমুনা সেতুতে শিক্ষার্থীদের ব্লকেড ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩ ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র কারখানায় রাশিয়ার হামলা নির্বাচন ফেব্রুয়ারি মাস যেন ক্রস না করে : শামসুজ্জামান দুদু ভোলাগঞ্জে সাদা পাথর লুট: দায়ীদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট, শুনানি ১৭ আগস্ট ত্রিদেশীয় জয় শেষে ইংল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ দল

এক দশক পর ভারত-নিউজিল্যান্ডের ফের মুক্ত বাণিজ্য আলোচনার সূচনা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৫৪:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
  • / 44

ছবি: সংগৃহীত

 

এক দশকেরও বেশি সময় পর আবারও মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (FTA) আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। এক সময় স্থগিত হওয়া এই আলোচনা নতুন করে শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সন। পাঁচ দিনের ভারত সফরের অংশ হিসেবে তিনি নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। উভয় দেশ আগামী মাসে আলোচনার প্রথম পর্ব শুরুর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।

লুক্সন এই উদ্যোগকে ভারত-নিউজিল্যান্ড অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ দুই বিলিয়ন ডলারের নিচে থাকলেও লুক্সন আশাবাদী যে, আগামী দশ বছরে নিউজিল্যান্ডের রপ্তানি দ্বিগুণ হতে পারে এবং ভারতের বাজার এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

লুক্সন দিল্লিতে একটি আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক সম্মেলনে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, যেখানে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ডসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও অংশ নেবেন। ভারত সফরে এসে লুক্সন বলেন, ‘ভারত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের এক অন্যতম শক্তি। আমরা আমাদের অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখতে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী।’

নিউজিল্যান্ড জানিয়েছে, তারা প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, খেলাধুলা ও পরিবেশসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চায় এবং নয়াদিল্লির সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে ‘মূল অগ্রাধিকার’ হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে, ১৬ মার্চ ফাইভ আইজ জোটের (নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র) প্রতিনিধিরা নয়াদিল্লিতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের আয়োজিত সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন, যেখানে গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব প্রতিহত করার কৌশলগত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে নিউজিল্যান্ডের ভূমিকাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে নয়াদিল্লি। লুক্সনের সফরের তাৎপর্য এতটাই বিশাল যে, তিনি নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ প্রতিনিধিদল নিয়ে এসেছেন।

২০১০ সালে ভারত-নিউজিল্যান্ড মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরু হলেও বাজার প্রবেশাধিকারের মতো ইস্যুতে কয়েক দফা আলোচনার পর এটি স্থগিত হয়ে যায়। বিশেষত, নিউজিল্যান্ড ভারতের দুগ্ধপণ্য বাজারে প্রবেশাধিকারের দাবি জানিয়ে আসছে, যা ভারত বরাবরই দেশীয় কৃষকদের সুরক্ষার স্বার্থে সংরক্ষিত রেখেছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে আরো উন্মুক্ত হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা শুরুর এই ঘোষণা এমন সময়ে এলো, যখন ভারত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছর ভারত ইউরোপীয় ফ্রি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে ১০০ বিলিয়ন ডলারের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। পাশাপাশি, দুই বছর আগে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

সম্প্রতি ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল স্থানীয় রপ্তানি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘তাদের সুরক্ষামূলক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে’, কারণ ভারত বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা জোরদার করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এক দশক পর ভারত-নিউজিল্যান্ডের ফের মুক্ত বাণিজ্য আলোচনার সূচনা

আপডেট সময় ০৪:৫৪:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

 

এক দশকেরও বেশি সময় পর আবারও মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (FTA) আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। এক সময় স্থগিত হওয়া এই আলোচনা নতুন করে শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সন। পাঁচ দিনের ভারত সফরের অংশ হিসেবে তিনি নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। উভয় দেশ আগামী মাসে আলোচনার প্রথম পর্ব শুরুর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।

লুক্সন এই উদ্যোগকে ভারত-নিউজিল্যান্ড অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ দুই বিলিয়ন ডলারের নিচে থাকলেও লুক্সন আশাবাদী যে, আগামী দশ বছরে নিউজিল্যান্ডের রপ্তানি দ্বিগুণ হতে পারে এবং ভারতের বাজার এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

লুক্সন দিল্লিতে একটি আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক সম্মেলনে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, যেখানে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ডসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও অংশ নেবেন। ভারত সফরে এসে লুক্সন বলেন, ‘ভারত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের এক অন্যতম শক্তি। আমরা আমাদের অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখতে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী।’

নিউজিল্যান্ড জানিয়েছে, তারা প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, খেলাধুলা ও পরিবেশসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চায় এবং নয়াদিল্লির সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে ‘মূল অগ্রাধিকার’ হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে, ১৬ মার্চ ফাইভ আইজ জোটের (নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র) প্রতিনিধিরা নয়াদিল্লিতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের আয়োজিত সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন, যেখানে গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব প্রতিহত করার কৌশলগত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে নিউজিল্যান্ডের ভূমিকাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে নয়াদিল্লি। লুক্সনের সফরের তাৎপর্য এতটাই বিশাল যে, তিনি নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ প্রতিনিধিদল নিয়ে এসেছেন।

২০১০ সালে ভারত-নিউজিল্যান্ড মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরু হলেও বাজার প্রবেশাধিকারের মতো ইস্যুতে কয়েক দফা আলোচনার পর এটি স্থগিত হয়ে যায়। বিশেষত, নিউজিল্যান্ড ভারতের দুগ্ধপণ্য বাজারে প্রবেশাধিকারের দাবি জানিয়ে আসছে, যা ভারত বরাবরই দেশীয় কৃষকদের সুরক্ষার স্বার্থে সংরক্ষিত রেখেছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে আরো উন্মুক্ত হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা শুরুর এই ঘোষণা এমন সময়ে এলো, যখন ভারত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছর ভারত ইউরোপীয় ফ্রি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে ১০০ বিলিয়ন ডলারের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। পাশাপাশি, দুই বছর আগে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

সম্প্রতি ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল স্থানীয় রপ্তানি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘তাদের সুরক্ষামূলক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে’, কারণ ভারত বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা জোরদার করছে।