ঢাকা ০৮:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিশুর করুণ মৃত্যু: যশোরে পুকুর ও বালতির পানিতে ডুবে তিনজনের প্রাণহানি

খবরের কথা ডেস্ক

ছবি সংগৃহীত

 

যশোরের অভয়নগর ও মনিরামপুর উপজেলায় পৃথক ঘটনায় পানিতে ডুবে তিন শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার অভয়নগরের মাগুরা ও বুইকরা গ্রাম এবং মনিরামপুরের ধলিগাতী গ্রামে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো আরিয়ান হোসেন (১ বছর ৫ মাস), রুকসানা খাতুন (১১) এবং আরশি খাতুন (১ বছর ৬ মাস)। আরিয়ান অভয়নগরের মাগুরা গ্রামের শামীম হোসেনের ছেলে, রুকসানা বুইকরা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে এবং আরশি মনিরামপুরের ধলিগাতী গ্রামের ইকবাল হোসেনের মেয়ে।

আরিয়ানের মামি ডলি বেগম জানান, সকালে শিশুটিকে বাড়িতে রেখে তার মা পাশের বাড়িতে যান। কিছুক্ষণ পর আরিয়ানকে খুঁজে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। একপর্যায়ে বাড়ির পাশের পুকুরে তার নিথর দেহ ভাসতে দেখা যায়। দ্রুত উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে, রুকসানা কয়েক বন্ধুর সঙ্গে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করছিল। খেলার একপর্যায়ে গভীর পানিতে তলিয়ে গেলে বন্ধুরা খবর দেয়। দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকের অনুপস্থিতির অভিযোগ করেন স্বজনরা। রুকসানার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘প্রায় ৩০ মিনিট পর চিকিৎসক আসেন। যদি সময়মতো চিকিৎসা পাওয়া যেত, তাহলে হয়তো আমার মেয়ে বেঁচে যেত।’ এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিকেলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘেরাও করে চিকিৎসককে মারধরের চেষ্টা করলে প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

অভয়নগর থানার ওসি মো. আবদুল আলিম জানান, দুটি শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

এদিকে, মনিরামপুরের ধলিগাতী গ্রামে এক মর্মান্তিক ঘটনায় দেড় বছর বয়সী শিশু আরশি খেলতে গিয়ে বাড়ির উঠানে রাখা বালতির পানিতে পড়ে যায়। স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে বালতির ভেতরে শিশুটিকে দেখতে পান। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও পথেই তার মৃত্যু হয়। মনিরামপুর থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী জানান, এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি।

একই দিনে তিন শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়ির আশপাশের পরিবেশ সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। অভিভাবকদের সচেতনতার পাশাপাশি, স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকেও জরুরি সেবার মানোন্নয়নে উদ্যোগী হতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:৩৯:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
৫০৭ বার পড়া হয়েছে

শিশুর করুণ মৃত্যু: যশোরে পুকুর ও বালতির পানিতে ডুবে তিনজনের প্রাণহানি

আপডেট সময় ০৭:৩৯:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

 

যশোরের অভয়নগর ও মনিরামপুর উপজেলায় পৃথক ঘটনায় পানিতে ডুবে তিন শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার অভয়নগরের মাগুরা ও বুইকরা গ্রাম এবং মনিরামপুরের ধলিগাতী গ্রামে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো আরিয়ান হোসেন (১ বছর ৫ মাস), রুকসানা খাতুন (১১) এবং আরশি খাতুন (১ বছর ৬ মাস)। আরিয়ান অভয়নগরের মাগুরা গ্রামের শামীম হোসেনের ছেলে, রুকসানা বুইকরা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে এবং আরশি মনিরামপুরের ধলিগাতী গ্রামের ইকবাল হোসেনের মেয়ে।

আরিয়ানের মামি ডলি বেগম জানান, সকালে শিশুটিকে বাড়িতে রেখে তার মা পাশের বাড়িতে যান। কিছুক্ষণ পর আরিয়ানকে খুঁজে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। একপর্যায়ে বাড়ির পাশের পুকুরে তার নিথর দেহ ভাসতে দেখা যায়। দ্রুত উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে, রুকসানা কয়েক বন্ধুর সঙ্গে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করছিল। খেলার একপর্যায়ে গভীর পানিতে তলিয়ে গেলে বন্ধুরা খবর দেয়। দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকের অনুপস্থিতির অভিযোগ করেন স্বজনরা। রুকসানার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘প্রায় ৩০ মিনিট পর চিকিৎসক আসেন। যদি সময়মতো চিকিৎসা পাওয়া যেত, তাহলে হয়তো আমার মেয়ে বেঁচে যেত।’ এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিকেলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘেরাও করে চিকিৎসককে মারধরের চেষ্টা করলে প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

অভয়নগর থানার ওসি মো. আবদুল আলিম জানান, দুটি শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

এদিকে, মনিরামপুরের ধলিগাতী গ্রামে এক মর্মান্তিক ঘটনায় দেড় বছর বয়সী শিশু আরশি খেলতে গিয়ে বাড়ির উঠানে রাখা বালতির পানিতে পড়ে যায়। স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে বালতির ভেতরে শিশুটিকে দেখতে পান। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও পথেই তার মৃত্যু হয়। মনিরামপুর থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী জানান, এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি।

একই দিনে তিন শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়ির আশপাশের পরিবেশ সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। অভিভাবকদের সচেতনতার পাশাপাশি, স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকেও জরুরি সেবার মানোন্নয়নে উদ্যোগী হতে হবে।