ঢাকা ১১:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়া থেকে সরে দাঁড়াল ইউরোপের দুই প্রভাবশালী দেশ ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত ঢাকা থেকে বিদায় নিয়েছে ভুটান দল, রাতে আসছে সিঙ্গাপুরের ৪২ সদস্য বরগুনায় কোরবানির দিনে পশু কাটতে গিয়ে আহত ২০ জন ষাটগম্বুজ মসজিদে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সম্পন্ন : মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করলো বিএনপি ঈদের দিনেও গাজায় রক্তক্ষরণ: ইসরায়েলি হামলায় ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পবিত্র ঈদুল আযহায় স্বাস্থ্যসচেতনতা: সুস্থ থাকুন, নিরাপদে ঈদ করুন আর্জেন্টিনার জয় চিলিতে, গোল আলভারেজের

শাবানের শেষ রাতে নবীজি (সা.)-এর খুতবা ও তাঁর জীবনচর্যায় মাহে রমজানের গুরুত্ব

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৩৯:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
  • / 40

ছবি সংগৃহীত

 

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে রমজান মাসের ছিল অপরিসীম গুরুত্ব। রজব মাসের শুরু থেকেই তিনি রমজানের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করতেন। এ সময় তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন, “হে আল্লাহ! আমাদের রমজান পর্যন্ত জীবিত রাখো।” (আদ-দুআ, তাবরানি) রমজানের আগমনে তিনি আনন্দ প্রকাশ করতেন এবং শাবান মাসে বিশেষভাবে অধিক রোজা রাখতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, “রমজান মাস ছাড়া, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে শাবান মাসের চেয়ে বেশি রোজা রাখতে দেখিনি।” (সহিহ বুখারি)

রমজান মাসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বিশেষ দান-খয়রাত করতেন, দাস-দাসীদের দায়িত্ব হালকা করতেন এবং শবে কদর ও তারাবির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতেন। তিনি শাবান মাসের শেষ রাতে সাহাবিদের সঙ্গে মঞ্চে দাঁড়িয়ে এক শক্তিশালী খুতবায় রমজানের গুরুত্ব তুলে ধরতেন। তিনি বলতেন, “এই মাসের রোজা ফরজ, আর তারাবি সুন্নত। যে ব্যক্তি এ মাসে নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে, সে যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল।”

শাবানের শেষ রাতে প্রদত্ত নবীজি (সা.)-এর খুতবা

শাবান মাসে, বিশেষত এর শেষ রাতে এবং রমজানের প্রথম দিনগুলিতে, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সাহাবিদের একত্রিত করতেন, রমজানের গুরুত্ব নিয়ে খুতবা দিতেন, এর অসীম ফজিলত বর্ণনা করতেন এবং এ মহিমান্বিত মাসের কদর করতে উদ্বুদ্ধ করতেন। যাতে তারা আগেভাগেই রমজানের অপেক্ষায় থাকে এবং সম্পূর্ণ একাগ্রচিত্তে এ বরকতময় মাসের রহমত ও কল্যাণে নিমগ্ন হতে পারে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবায় বলেন ‘হে মানুষ! এক মহান মাস তোমাদের ওপর ছায়া বিস্তার করছে এটি এক অত্যন্ত বরকতময় মাস। আল্লাহ এ মাসের রোজাকে তোমাদের ওপর ফরজ করেছেন এবং এর রাত্রিগুলোর কিয়াম (তারাবি)-কে সুন্নত করেছেন। যে ব্যক্তি এ মাসে কোনো নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে, সে যেন অন্য কোনো মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করে, সে যেন অন্য সময় সত্তরটি ফরজ পালন করল। এটি ধৈর্যের মাস, আর ধৈর্যের প্রতিদান হলো জান্নাত। এটি পারস্পরিক সহানুভূতির মাস এবং এমন একটি মাস, যাতে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করা হয়।’ (শুআবুল ঈমান, বায়হাকি, হাদিস : ৩৬০৮)

রমজানের মাসের গুরুত্ব ও তাত্পর্য বোঝাতে তিনি আরও বলেন, এই মাসে যে ব্যক্তি তার দাস-দাসীদের (কর্মচারী বা অধীনস্থদের) দায়িত্ব হালকা করে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দান করবেন। (শুআবুল ঈমান, বায়হাকি, হাদিস : ৩৬০৮)

আর রমজানের প্রতি ভালোবাসার এমন এক উদাহরণ তিনি উপস্থাপন করেছেন, যা অন্য কোনো মাসে নেই। অন্যান্য মাসে চাঁদ দেখার জন্য দুই ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির সাক্ষ্য আবশ্যক, কিন্তু রমজানের জন্য এর বিশেষ মর্যাদা এই যে একজন ব্যক্তি চাঁদ দেখার সাক্ষ্য দিলেই তা গ্রহণযোগ্য হয় এবং পরদিন থেকেই রোজা রাখতে বলা হয়েছে। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ২৩৪০-২৩৪১)

এই পবিত্র মাস আমাদের জীবনে এক নতুন উদ্যম এবং অনুপ্রেরণা যোগায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শিক্ষা অনুসরণ করে আমাদের উচিত রমজানকে পূর্ণ মর্যাদা দেওয়া।

নিউজটি শেয়ার করুন

শাবানের শেষ রাতে নবীজি (সা.)-এর খুতবা ও তাঁর জীবনচর্যায় মাহে রমজানের গুরুত্ব

আপডেট সময় ১২:৩৯:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫

 

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে রমজান মাসের ছিল অপরিসীম গুরুত্ব। রজব মাসের শুরু থেকেই তিনি রমজানের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করতেন। এ সময় তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন, “হে আল্লাহ! আমাদের রমজান পর্যন্ত জীবিত রাখো।” (আদ-দুআ, তাবরানি) রমজানের আগমনে তিনি আনন্দ প্রকাশ করতেন এবং শাবান মাসে বিশেষভাবে অধিক রোজা রাখতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, “রমজান মাস ছাড়া, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে শাবান মাসের চেয়ে বেশি রোজা রাখতে দেখিনি।” (সহিহ বুখারি)

রমজান মাসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বিশেষ দান-খয়রাত করতেন, দাস-দাসীদের দায়িত্ব হালকা করতেন এবং শবে কদর ও তারাবির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতেন। তিনি শাবান মাসের শেষ রাতে সাহাবিদের সঙ্গে মঞ্চে দাঁড়িয়ে এক শক্তিশালী খুতবায় রমজানের গুরুত্ব তুলে ধরতেন। তিনি বলতেন, “এই মাসের রোজা ফরজ, আর তারাবি সুন্নত। যে ব্যক্তি এ মাসে নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে, সে যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল।”

শাবানের শেষ রাতে প্রদত্ত নবীজি (সা.)-এর খুতবা

শাবান মাসে, বিশেষত এর শেষ রাতে এবং রমজানের প্রথম দিনগুলিতে, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সাহাবিদের একত্রিত করতেন, রমজানের গুরুত্ব নিয়ে খুতবা দিতেন, এর অসীম ফজিলত বর্ণনা করতেন এবং এ মহিমান্বিত মাসের কদর করতে উদ্বুদ্ধ করতেন। যাতে তারা আগেভাগেই রমজানের অপেক্ষায় থাকে এবং সম্পূর্ণ একাগ্রচিত্তে এ বরকতময় মাসের রহমত ও কল্যাণে নিমগ্ন হতে পারে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবায় বলেন ‘হে মানুষ! এক মহান মাস তোমাদের ওপর ছায়া বিস্তার করছে এটি এক অত্যন্ত বরকতময় মাস। আল্লাহ এ মাসের রোজাকে তোমাদের ওপর ফরজ করেছেন এবং এর রাত্রিগুলোর কিয়াম (তারাবি)-কে সুন্নত করেছেন। যে ব্যক্তি এ মাসে কোনো নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে, সে যেন অন্য কোনো মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করে, সে যেন অন্য সময় সত্তরটি ফরজ পালন করল। এটি ধৈর্যের মাস, আর ধৈর্যের প্রতিদান হলো জান্নাত। এটি পারস্পরিক সহানুভূতির মাস এবং এমন একটি মাস, যাতে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করা হয়।’ (শুআবুল ঈমান, বায়হাকি, হাদিস : ৩৬০৮)

রমজানের মাসের গুরুত্ব ও তাত্পর্য বোঝাতে তিনি আরও বলেন, এই মাসে যে ব্যক্তি তার দাস-দাসীদের (কর্মচারী বা অধীনস্থদের) দায়িত্ব হালকা করে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দান করবেন। (শুআবুল ঈমান, বায়হাকি, হাদিস : ৩৬০৮)

আর রমজানের প্রতি ভালোবাসার এমন এক উদাহরণ তিনি উপস্থাপন করেছেন, যা অন্য কোনো মাসে নেই। অন্যান্য মাসে চাঁদ দেখার জন্য দুই ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির সাক্ষ্য আবশ্যক, কিন্তু রমজানের জন্য এর বিশেষ মর্যাদা এই যে একজন ব্যক্তি চাঁদ দেখার সাক্ষ্য দিলেই তা গ্রহণযোগ্য হয় এবং পরদিন থেকেই রোজা রাখতে বলা হয়েছে। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ২৩৪০-২৩৪১)

এই পবিত্র মাস আমাদের জীবনে এক নতুন উদ্যম এবং অনুপ্রেরণা যোগায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শিক্ষা অনুসরণ করে আমাদের উচিত রমজানকে পূর্ণ মর্যাদা দেওয়া।