ঢাকা ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আসন্ন পাকিস্তান সিরিজের দল ঘোষণা করলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) রাজনৈতিক কর্মসূচি বা বক্তব্যের আগে দলকে হিসেব-নিকেশ করতে হবে: এ্যানি পুলিশের ১১০ কর্মকর্তাকে এসআই থেকে ইন্সপেক্টর পদে উত্তরণ পাকিস্তানে টানা বৃষ্টিতে ২৪ ঘণ্টায় ৬৩ জনের মৃত্যু, দুর্ভোগে লাখো মানুষ গোয়েন্দা তথ্য ছিল, কিন্তু এমন ব্যাপকতা ধারণা করা যায়নি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা” কিশোরগঞ্জে ব্যবসায়ী সৈয়দুর হত্যা মামলায় ১৩ জনের যাবজ্জীবন রাশিয়া-ইউক্রেন পাল্টাপাল্টি ড্রোন হামলার তীব্রতা, দুই পক্ষেই হতাহত ভোটার তালিকা সংযোজনসহ তিনটি অধ্যাদেশের খসড়া উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন অবৈধ ৬২ কোটি টাকার সম্পদের প্রমাণ মিলেছে তারিক সিদ্দিকের: দুদক চকরিয়ায় চুরি করতে গিয়ে পুলিশের স্ত্রীকে ধর্ষণ, আটক ১

টিকার অভাবে বিপন্ন শিশু: ১৬% এখনও বঞ্চিত

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:২৮:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 68

ছবি সংগৃহীত

 

বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ১৬ শতাংশ শিশু এখনও টিকা থেকে বঞ্চিত। এই গবেষণার ফলাফল উদ্বেগজনক, কারণ এটি ইঙ্গিত করে যে, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতা গত এক দশকে বৃদ্ধি পায়নি। এর ফলে বিপুল সংখ্যক শিশু মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে, যেমন পোলিও, হাম, যক্ষ্মা, ডিফথেরিয়া, হুপিং কাশি, স্টোলব এবং হেপাটাইটিস বি। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, টিকা না পাওয়া শিশুদের অধিকাংশই দরিদ্র ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করে, যেখানে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানো অত্যন্ত কঠিন।

গবেষণায় দেখা গেছে, টিকা কর্মসূচির হার গত ১২ বছর ধরে ৮৪ শতাংশে স্থিতিশীল রয়েছে, অর্থাৎ ১৬ শতাংশ শিশু এখনও টিকার আওতার বাইরে। এই সমস্যার পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। প্রথমত, টিকাদান কর্মসূচিতে জনবলের ঘাটতি রয়েছে, যার কারণে অনেক টিকাকেন্দ্রে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী নেই। দ্বিতীয়ত, শহর ও গ্রামের মধ্যে টিকাকেন্দ্রের সংখ্যা অসমভাবে বণ্টিত, ফলে অনেক দুর্গম এলাকায় টিকাকেন্দ্রের অভাব রয়েছে।

আরেকটি বড় সমস্যা হলো অপর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ। টিকাদান কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে টিকা কেনা ও বিতরণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া, টিকাদান কেন্দ্রে অনেক সময় টিকার অভাব দেখা যায়, যা শিশুদের সুরক্ষায় বড় বাধা। প্রশিক্ষণের অভাবও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; টিকাদান কর্মীদের অনেক সময় যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না, ফলে তারা টিকা দেওয়ার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত থাকেন না।

দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় টিকা পরিবহন করা কঠিন হয়ে পড়ে, যা এই বিষয়টিকে আরও জটিল করে তোলে। টিকাদানের গুরুত্ব সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাবও রয়েছে; প্রচারের অভাবে অনেকেই টিকাদানের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারছেন না। সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও, এই সমস্যাগুলো সমাধানে যথেষ্ট উদ্যোগ প্রয়োজন। আমাদের সকলের দায়িত্ব হলো শিশুদের টিকা দেওয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং অন্যদেরও সচেতন করা, যাতে কোনো শিশু টিকা থেকে বঞ্চিত না হয়।

“এই গবেষণা আমাদের দেশের টিকাদান কর্মসূচির কিছু দুর্বল দিক তুলে ধরেছে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই বিষয়গুলোর ওপর মনোযোগ দিয়ে টিকাদান কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এটা নিশ্চিত করতে পারি যে প্রতিটি শিশু প্রয়োজনীয় টিকা পেয়ে একটি সুস্থ জীবন শুরু করতে পারবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

টিকার অভাবে বিপন্ন শিশু: ১৬% এখনও বঞ্চিত

আপডেট সময় ১১:২৮:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ১৬ শতাংশ শিশু এখনও টিকা থেকে বঞ্চিত। এই গবেষণার ফলাফল উদ্বেগজনক, কারণ এটি ইঙ্গিত করে যে, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতা গত এক দশকে বৃদ্ধি পায়নি। এর ফলে বিপুল সংখ্যক শিশু মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে, যেমন পোলিও, হাম, যক্ষ্মা, ডিফথেরিয়া, হুপিং কাশি, স্টোলব এবং হেপাটাইটিস বি। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, টিকা না পাওয়া শিশুদের অধিকাংশই দরিদ্র ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করে, যেখানে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানো অত্যন্ত কঠিন।

গবেষণায় দেখা গেছে, টিকা কর্মসূচির হার গত ১২ বছর ধরে ৮৪ শতাংশে স্থিতিশীল রয়েছে, অর্থাৎ ১৬ শতাংশ শিশু এখনও টিকার আওতার বাইরে। এই সমস্যার পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। প্রথমত, টিকাদান কর্মসূচিতে জনবলের ঘাটতি রয়েছে, যার কারণে অনেক টিকাকেন্দ্রে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী নেই। দ্বিতীয়ত, শহর ও গ্রামের মধ্যে টিকাকেন্দ্রের সংখ্যা অসমভাবে বণ্টিত, ফলে অনেক দুর্গম এলাকায় টিকাকেন্দ্রের অভাব রয়েছে।

আরেকটি বড় সমস্যা হলো অপর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ। টিকাদান কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে টিকা কেনা ও বিতরণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া, টিকাদান কেন্দ্রে অনেক সময় টিকার অভাব দেখা যায়, যা শিশুদের সুরক্ষায় বড় বাধা। প্রশিক্ষণের অভাবও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; টিকাদান কর্মীদের অনেক সময় যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না, ফলে তারা টিকা দেওয়ার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত থাকেন না।

দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় টিকা পরিবহন করা কঠিন হয়ে পড়ে, যা এই বিষয়টিকে আরও জটিল করে তোলে। টিকাদানের গুরুত্ব সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাবও রয়েছে; প্রচারের অভাবে অনেকেই টিকাদানের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারছেন না। সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও, এই সমস্যাগুলো সমাধানে যথেষ্ট উদ্যোগ প্রয়োজন। আমাদের সকলের দায়িত্ব হলো শিশুদের টিকা দেওয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং অন্যদেরও সচেতন করা, যাতে কোনো শিশু টিকা থেকে বঞ্চিত না হয়।

“এই গবেষণা আমাদের দেশের টিকাদান কর্মসূচির কিছু দুর্বল দিক তুলে ধরেছে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই বিষয়গুলোর ওপর মনোযোগ দিয়ে টিকাদান কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এটা নিশ্চিত করতে পারি যে প্রতিটি শিশু প্রয়োজনীয় টিকা পেয়ে একটি সুস্থ জীবন শুরু করতে পারবে।