পারমাণবিক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব, তেহরানের ‘অবিশ্বাস’ স্পষ্ট

- আপডেট সময় ১১:৫৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
- / 10
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান। তবে এ প্রস্তাবকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি গভীর অবিশ্বাসের কথা জানিয়ে দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতার উপদেষ্টা আলী লারিজানি।
শুক্রবার (১১ জুলাই) দেশটির আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লারিজানি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আমাদের এখন আর কোনো বিশ্বাস নেই।” তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলকে তীব্রভাবে সমালোচনা করে বলেন, “আমেরিকার নীতি হলো আত্মসমর্পণ করো, নয়তো যুদ্ধ করো।”
তিনি আরও বলেন, “নতুন মধ্যপ্রাচ্য হবে একটি সহনশীল এবং দৃঢ় অঞ্চলের প্রতিচ্ছবি, যেখানে শোষণ নয়, সহযোগিতাই হবে ভিত্তি।”
এদিকে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, ইরান নাকি পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করতে চায় এবং এজন্য বৈঠকের অনুরোধও জানিয়েছে। ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমরা ইরানের সঙ্গে আলোচনার সময় নির্ধারণ করেছি এবং ওরা কথা বলতে চায়।”
তবে ট্রাম্পের এই দাবি সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাঈ। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসনিমকে তিনি বলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো ধরনের বৈঠকের অনুরোধ করিনি।”
এছাড়া চলমান উত্তেজনার পেছনে সামরিক হামলাও বড় ভূমিকা রেখেছে। গত ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমান ইরানের ফোর্দো ও নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনায় ১৪টি জিবিইউ-৫৭ ‘ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনেট্রেটর’ বোমা ফেলেছে। একই দিনে ইসফাহানের স্থাপনাগুলোতে সাবমেরিন থেকে নিক্ষিপ্ত হয়েছে টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র।
তারও আগে, ১৫ জুন নির্ধারিত ষষ্ঠ দফার ইরান-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা শুরুর দুদিন আগে ১৩ জুন, ইসরায়েল ইরানের সামরিক, পারমাণবিক ও বেসামরিক স্থাপনায় ব্যাপক বিমান হামলা চালায়।
দীর্ঘ ১২ দিনব্যাপী ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের অবসান ঘটে ২৪ জুন, যখন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই পক্ষ।
তেহরান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তারা আলোচনায় ফিরতে চাইলেও যুক্তরাষ্ট্রের সদিচ্ছা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে তাদের গভীর সংশয় রয়েছে। এতে করে মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ও ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।