ঢাকা ০৮:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
শিক্ষকের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়, এমন কোনো কাজ শিক্ষার্থীদের করা উচিত নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা জলমহাল নীতিমালা পরিবর্তন করে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের পাবে অগ্রাধিকার: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বাংলাদেশ ব্যাংক পেতে যাচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছে ১১ জন মেয়ে ও ১৩৫ জন শিশু: শারমিন মুরশিদ চীন ও তুরস্কের সহায়তার অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করল পাকিস্তান লাগামহীন ও অবিশ্বাস্য মাত্রার লুটপাট আওয়ামী লীগ সরকারের বড় দৃষ্টান্ত: আসিফ মাহমুদ সারা দেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১৪৫৪ জন গ্রেপ্তার সব শ্রেণির মানুষের রক্ত-ঘামে জুলাই বিপ্লবের সাফল্য: আসিফ মাহমুদ ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে বিপর্যস্ত মার্কিন অর্থনীতি, ছাঁটাই-ব্যয় সংকটে ব্যবসা খাত গাজীপুরে পুকুরে ডুবে দুই কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু

খাগড়াছড়ির পাহাড়ে বিদেশি জাতের আমের বাণিজ্যিক চাষ, সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:১২:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
  • / 6

ছবি সংগৃহীত

 

 

জাপান, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার নামকরা জাতের আম এখন আর শুধু বিদেশের সুপারশপে সীমাবদ্ধ নয় খাগড়াছড়ির পাহাড়ি জনপদে বাণিজ্যিকভাবে এ জাতের আমের চাষ শুরু হয়েছে। আকর্ষণীয় রঙ, দারুণ স্বাদ এবং উচ্চ বাজারমূল্যের কারণে এই আমগুলো জেলার কৃষকদের জন্য সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দিচ্ছে।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া এলাকার কৃষক উচনু চৌধুরী পাঁচ একর জমিতে গড়ে তুলেছেন বিদেশি জাতের আমের বাগান। তার বাগানে রয়েছে জাপানের বিখ্যাত ‘মিয়াজাকি’, থাইল্যান্ডের ‘চিয়াংমাই’, আমেরিকার ‘রেড পালমার’ এবং অস্ট্রেলিয়ার ‘কিউজাই’ ও ‘ব্যাকস্টোন ম্যাংগো’-এর মতো দামি ও জনপ্রিয় জাতের আম।

অন্যদিকে, মং গ্রিন লাইফ এগ্রো ফার্মের মালিক মংশিতু চৌধুরী ২০১৪ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে আমচাষে ঝুঁকেছিলেন। এখন তিনি সফল এক উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে তিনি ৩০ একর জমিতে দেশি ও বিদেশি মিলিয়ে ৫৪টি জাতের আম চাষ করছেন।

জেলার ফল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি সমির হোসেন সুজন জানান, বর্তমানে এক কেজি মিয়াজাকি আম ৫০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, রেড আইভরি, হানিডিউ ও আরটুইট বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, ব্যানানা ও কিউজাই ম্যাংগো ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কিং অফ চাকাপা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং ব্রুনাই কিং ও পালমার আম ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে উৎপাদন বাড়লেও বিপণনে কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, পর্যাপ্ত বাজারজাতকরণ ব্যবস্থার অভাবে অনেক সময় ন্যায্য মূল্য পেতে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বাছিরুল আলম জানান, জেলায় প্রায় ৪ হাজার ৪২১ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে, যার মধ্যে বিদেশি জাতের আমের চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। এ বছর প্রায় ৫৪ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশি আম চাষে কৃষকদের আগ্রহকে এগিয়ে নিতে আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। ভবিষ্যতে এ খাতকে রফতানিযোগ্য করতে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

কৃষি সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে বিদেশি জাতের আম খাগড়াছড়ির অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এবং পাহাড়ি কৃষিপণ্য হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারেও নতুন পরিচিতি তৈরি করবে। জেলার অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় এই খাত বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

খাগড়াছড়ির পাহাড়ে বিদেশি জাতের আমের বাণিজ্যিক চাষ, সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

আপডেট সময় ০৪:১২:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫

 

 

জাপান, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার নামকরা জাতের আম এখন আর শুধু বিদেশের সুপারশপে সীমাবদ্ধ নয় খাগড়াছড়ির পাহাড়ি জনপদে বাণিজ্যিকভাবে এ জাতের আমের চাষ শুরু হয়েছে। আকর্ষণীয় রঙ, দারুণ স্বাদ এবং উচ্চ বাজারমূল্যের কারণে এই আমগুলো জেলার কৃষকদের জন্য সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দিচ্ছে।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া এলাকার কৃষক উচনু চৌধুরী পাঁচ একর জমিতে গড়ে তুলেছেন বিদেশি জাতের আমের বাগান। তার বাগানে রয়েছে জাপানের বিখ্যাত ‘মিয়াজাকি’, থাইল্যান্ডের ‘চিয়াংমাই’, আমেরিকার ‘রেড পালমার’ এবং অস্ট্রেলিয়ার ‘কিউজাই’ ও ‘ব্যাকস্টোন ম্যাংগো’-এর মতো দামি ও জনপ্রিয় জাতের আম।

অন্যদিকে, মং গ্রিন লাইফ এগ্রো ফার্মের মালিক মংশিতু চৌধুরী ২০১৪ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে আমচাষে ঝুঁকেছিলেন। এখন তিনি সফল এক উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে তিনি ৩০ একর জমিতে দেশি ও বিদেশি মিলিয়ে ৫৪টি জাতের আম চাষ করছেন।

জেলার ফল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি সমির হোসেন সুজন জানান, বর্তমানে এক কেজি মিয়াজাকি আম ৫০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, রেড আইভরি, হানিডিউ ও আরটুইট বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, ব্যানানা ও কিউজাই ম্যাংগো ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কিং অফ চাকাপা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং ব্রুনাই কিং ও পালমার আম ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে উৎপাদন বাড়লেও বিপণনে কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, পর্যাপ্ত বাজারজাতকরণ ব্যবস্থার অভাবে অনেক সময় ন্যায্য মূল্য পেতে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বাছিরুল আলম জানান, জেলায় প্রায় ৪ হাজার ৪২১ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে, যার মধ্যে বিদেশি জাতের আমের চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। এ বছর প্রায় ৫৪ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশি আম চাষে কৃষকদের আগ্রহকে এগিয়ে নিতে আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। ভবিষ্যতে এ খাতকে রফতানিযোগ্য করতে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

কৃষি সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে বিদেশি জাতের আম খাগড়াছড়ির অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এবং পাহাড়ি কৃষিপণ্য হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারেও নতুন পরিচিতি তৈরি করবে। জেলার অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় এই খাত বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন তারা।