থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ, সড়কে জনতার ঢল

- আপডেট সময় ০৮:৩৪:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
- / 0
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে শনিবার হাজারো সরকারবিরোধী মানুষ রাস্তায় নেমে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার একটি কূটনৈতিক ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ফাঁস হওয়া এই ফোনালাপে কম্বোডিয়ার এক বর্ষীয়ান রাজনীতিবীদকে তিনি ‘আংকেল’ বলে সম্বোধন করেন এবং থাইল্যান্ডের এক সীমান্ত সেনা কমান্ডারকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উল্লেখ করেন। এর ফলে সমালোচনার মুখে পড়েন ৩৮ বছর বয়সী এই প্রধানমন্ত্রী, যিনি রাজবংশীয় পরিবারের সদস্য।
ঘটনার পরপরই প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক জোটের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ভূমজাইথাই পার্টি সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে সংকটে পড়েছেন তিনি।
শনিবার প্রায় ১০ হাজার বিক্ষোভকারী রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে ‘অসৎ প্রধানমন্ত্রী, সরে যাও’ স্লোগান দেন। মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এক নেতা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।”
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের বড় একটি অংশই ছিলেন প্রবীণ, যারা একসময় ‘ইয়েলো শার্ট’ আন্দোলনে অংশ নিয়ে পেতংতার্নের বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন।
বিক্ষোভটি শনিবার দুপুর পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে চললেও, যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রায় এক হাজার পুলিশ সদস্য এবং ১০০ নগর কর্মকর্তা মোতায়েন রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী সিনাওয়াত্রা ব্যাঙ্কক ছাড়ার আগে গণমাধ্যমকে বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত এটি শান্তিপূর্ণ থাকবে, ততক্ষণ এটি নাগরিকদের অধিকার।”
সীমান্ত কমান্ডারকে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ বলায় তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঐক্যের বার্তাও দিয়েছেন।
মূলত কম্বোডিয়ার সাবেক নেতা হুন সেনের সঙ্গে তার ওই ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পরই জোটে ফাটল ধরে। এই দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই সম্পর্কের টানাপোড়েন আছে, যা সম্প্রতি সীমান্তে এক কম্বোডীয় সেনা নিহত হওয়ার ঘটনায় আরও তীব্র হয়েছে।
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডে ২০২১ সালের পর বড় কোনো আন্দোলন হয়নি। সেবার রাজতন্ত্র সংস্কারের দাবিতে তরুণদের নেতৃত্বে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল, যা পরে কঠোর আইনে দমন করা হয়।
প্রসঙ্গত, মাত্র এক বছর আগে আদালতের আদেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী অপসারিত হলে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা ক্ষমতায় আসেন। এরপর তার বাবা দীর্ঘ ১৫ বছরের নির্বাসন শেষে দেশে ফিরে আসেন। পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা হলেন সিনাওয়াত্রা পরিবারের চতুর্থ ব্যক্তি, যিনি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।