০৮:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
শীত আসছে, চলতি মাসেই বইতে পারে একাধিক শৈত্যপ্রবাহ চট্টগ্রামে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে সহিংসতা, পদ হারালেন বিএনপির ৪ নেতা গণভোট নিয়ে দলগুলো ‘ঐকমত্যে’ পৌঁছাতে না পারলে সিদ্ধান্ত দেবে সরকার পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ইরাক–তুরস্ক সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২০ অবিশ্বাস্য উড়ন্ত গাড়ি আনছে টেসলা, জানালেন ইলন মাস্ক এমবাপ্পের পেনাল্টি মিস দেখেই হার্ট অ্যাটাকে রিয়াল সমর্থকের মৃত্যু জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ নেই: মির্জা ফখরুল যারা আগে গণভোট চায় না তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী না: মুজিবুর রহমান আজ থেকে শুরু জাটকা শিকারে ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা

বিসিবি নতুন সভাপতি হলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:২০:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
  • / 128

ছবি সংগৃহীত

 

 

সবকিছু যখন অনুমেয় হয়ে ওঠে, তখন আর চমক থাকে না। গত দুদিনের নাটকীয় ঘটনাপ্রবাহে অনেকেই বুঝে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি হচ্ছেন সাবেক অধিনায়ক ও দেশের অভিষেক টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম। সেই অনুমানই সত্যি হলো গতকাল বিকেলে, বিসিবির জরুরি সভায় তাঁকে ষোড়শ সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সভার শুরুতেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনয়নে বোর্ড পরিচালক হিসেবে আমিনুলের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর পরিচালকদের ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানকে হারিয়ে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয় মুহূর্ত এনে দিয়েছিলেন যাঁর নেতৃত্বে, তিনিই এখন দেশের ক্রিকেট প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে।

তবে এই পরিবর্তনের পেছনের গল্পটা আরও চমকপ্রদ। গত বুধবার রাতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীবের বাসায় গিয়ে তৎকালীন সভাপতি ফারুক আহমেদ বুঝতে পারেন, তাঁকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যদিও তখনো তিনি পদ ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। বরং গণমাধ্যমে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কারণ না জানালে তিনি পদত্যাগ করবেন না।

তবে এরপরই নাটকীয়ভাবে বিসিবির আট পরিচালক যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে ফারুকের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে চিঠি দেন। এনএসসি সেই চিঠির ভিত্তিতে ফারুকের পরিচালক পদ বাতিল করে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বোর্ড পরিচালকদের মধ্য থেকেই সভাপতি নির্বাচন হয় ফারুক যখন আর পরিচালক নন, তখন সভাপতির পদেও আর থাকার সুযোগ ছিল না তাঁর।

ফারুককে সরানোর সঙ্গে সঙ্গেই আলোচনায় আসেন আমিনুল ইসলাম। দীর্ঘদিন আইসিসির এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। আইসিসির সঙ্গে তাঁর বর্তমান চুক্তি নবায়নের কথাও চলছিল, কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটে কাজ করার প্রস্তাব পেয়ে তিনি তা স্থগিত রেখেছেন।

নবনির্বাচিত সভাপতি হিসেবে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে আমিনুল বলেন, “এপ্রিলের শেষ দিকে ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিল থেকে একটা কল পাই। বলা হয়, আপনাকে একটা সুযোগ দেওয়া হবে আপনি গ্রহণ করবেন কি না। তখন থেকেই আমি ভাবতে থাকি, কীভাবে এই কলটার সম্মান রাখতে পারি।”

তবে এই আকস্মিক পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্নও উঠছে। বিসিবির যেসব পরিচালক অনাস্থা দিয়েছেন, অনেক অভিযোগের দায় তাঁদের ওপরও বর্তায়। হাথুরুসিংহেকে অপসারণ, বিপিএলের অনিয়ম, স্বজনপ্রীতির অভিযোগ সব ক্ষেত্রেই পরিচালকদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তদন্ত ছাড়াই কেবল এক চিঠির ভিত্তিতে পদচ্যুতি এই ঘটনা ভবিষ্যতে আইসিসির নজরে আসলে বাংলাদেশের ক্রিকেট বিপদে পড়তে পারে। এর আগে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বোর্ডে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগে সেসব দেশকে নিষিদ্ধ করেছিল আইসিসি।

অন্যদিকে, যাঁর হাতে এখন দায়িত্ব, সেই আমিনুল নিজেই বলেছেন, দীর্ঘ ইনিংস খেলতে আসেননি। বরং, “আমি একটা কুইক টি-টোয়েন্টি ইনিংস খেলতে এসেছি” এই উক্তি দিয়েই বোঝাতে চেয়েছেন, দ্রুত কিছু করে দেখানোর লক্ষ্য নিয়েই তিনি এসেছেন।

তবে সেই ইনিংস কতটা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা স্মরণীয় হয়ে থাকে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিসিবি নতুন সভাপতি হলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল

আপডেট সময় ১১:২০:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

 

 

সবকিছু যখন অনুমেয় হয়ে ওঠে, তখন আর চমক থাকে না। গত দুদিনের নাটকীয় ঘটনাপ্রবাহে অনেকেই বুঝে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি হচ্ছেন সাবেক অধিনায়ক ও দেশের অভিষেক টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম। সেই অনুমানই সত্যি হলো গতকাল বিকেলে, বিসিবির জরুরি সভায় তাঁকে ষোড়শ সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সভার শুরুতেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনয়নে বোর্ড পরিচালক হিসেবে আমিনুলের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর পরিচালকদের ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানকে হারিয়ে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয় মুহূর্ত এনে দিয়েছিলেন যাঁর নেতৃত্বে, তিনিই এখন দেশের ক্রিকেট প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে।

তবে এই পরিবর্তনের পেছনের গল্পটা আরও চমকপ্রদ। গত বুধবার রাতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীবের বাসায় গিয়ে তৎকালীন সভাপতি ফারুক আহমেদ বুঝতে পারেন, তাঁকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যদিও তখনো তিনি পদ ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। বরং গণমাধ্যমে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কারণ না জানালে তিনি পদত্যাগ করবেন না।

তবে এরপরই নাটকীয়ভাবে বিসিবির আট পরিচালক যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে ফারুকের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে চিঠি দেন। এনএসসি সেই চিঠির ভিত্তিতে ফারুকের পরিচালক পদ বাতিল করে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বোর্ড পরিচালকদের মধ্য থেকেই সভাপতি নির্বাচন হয় ফারুক যখন আর পরিচালক নন, তখন সভাপতির পদেও আর থাকার সুযোগ ছিল না তাঁর।

ফারুককে সরানোর সঙ্গে সঙ্গেই আলোচনায় আসেন আমিনুল ইসলাম। দীর্ঘদিন আইসিসির এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। আইসিসির সঙ্গে তাঁর বর্তমান চুক্তি নবায়নের কথাও চলছিল, কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটে কাজ করার প্রস্তাব পেয়ে তিনি তা স্থগিত রেখেছেন।

নবনির্বাচিত সভাপতি হিসেবে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে আমিনুল বলেন, “এপ্রিলের শেষ দিকে ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিল থেকে একটা কল পাই। বলা হয়, আপনাকে একটা সুযোগ দেওয়া হবে আপনি গ্রহণ করবেন কি না। তখন থেকেই আমি ভাবতে থাকি, কীভাবে এই কলটার সম্মান রাখতে পারি।”

তবে এই আকস্মিক পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্নও উঠছে। বিসিবির যেসব পরিচালক অনাস্থা দিয়েছেন, অনেক অভিযোগের দায় তাঁদের ওপরও বর্তায়। হাথুরুসিংহেকে অপসারণ, বিপিএলের অনিয়ম, স্বজনপ্রীতির অভিযোগ সব ক্ষেত্রেই পরিচালকদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তদন্ত ছাড়াই কেবল এক চিঠির ভিত্তিতে পদচ্যুতি এই ঘটনা ভবিষ্যতে আইসিসির নজরে আসলে বাংলাদেশের ক্রিকেট বিপদে পড়তে পারে। এর আগে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বোর্ডে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগে সেসব দেশকে নিষিদ্ধ করেছিল আইসিসি।

অন্যদিকে, যাঁর হাতে এখন দায়িত্ব, সেই আমিনুল নিজেই বলেছেন, দীর্ঘ ইনিংস খেলতে আসেননি। বরং, “আমি একটা কুইক টি-টোয়েন্টি ইনিংস খেলতে এসেছি” এই উক্তি দিয়েই বোঝাতে চেয়েছেন, দ্রুত কিছু করে দেখানোর লক্ষ্য নিয়েই তিনি এসেছেন।

তবে সেই ইনিংস কতটা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা স্মরণীয় হয়ে থাকে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।