ঢাকা ১০:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কাজী নজরুলের জীবনী নিয়ে চলচ্চিত্র ও তাঁর রচনাবলী অনুবাদ করা হবে: সংস্কৃতি উপদেষ্টা মধুপুরে বনবাসীদের ১২৯টি মামলা প্রত্যাহারের ঘোষণা পরিবেশ উপদেষ্টার জনগণের ন্যায্য দাবিতে সরকারের ‘মান-অভিমান’ চলবে না: তারেক রহমান দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হলো সাবেক মেয়র আইভীকে ঈদের তারিখ জানতে ২৭ মে চাঁদ দেখার আহ্বান জানাল সৌদি আরব ইউক্রেন যুদ্ধের ড্রোন কৌশল থেকে শিক্ষা নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র – ট্রাম্প ২০২৫ সালে শিল্পের সঙ্গে শিল্পোউদ্যোক্তাদেরও মেরে ফেলা হচ্ছে: বিটিএমএ সভাপতি গঠনমূলক সমালোচনার ওপর জোর দিলেন তারেক রহমান, প্রত্যাশা অবাধ নির্বাচনের আজ বিশ্ব থাইরয়েড দিবস: দ্রুত শনাক্ত করুন, সুস্থ থাকুন ঈদের ছুটিতেও সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা রাখতে নতুন নির্দেশনা

বন্দরে অচলাবস্থা: কলম বিরতিতে থেমে গেছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কার্যক্রম

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৩১:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • / 0

ছবি সংগৃহীত

 

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার এসে জমা হলেও খালাস হচ্ছে না একটিও। প্রতিদিন শত শত কনটেইনার পণ্যসহ নামছে, কিন্তু কাস্টমসের শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কোনো পণ্য ছাড়া যাচ্ছে না। ফলে জমে যাচ্ছে কনটেইনার, ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা, বিশেষ করে পোশাক শিল্প।

এই অচলাবস্থার কারণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে নতুন দুটি বিভাগ ‘রাজস্ব নীতি’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ গঠনের সিদ্ধান্ত। ১৪ মে থেকে মাঠপর্যায়ের কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কলম বিরতিতে যান।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, “প্রতি ঘণ্টায় কনটেইনার নামছে, কিন্তু খালাস হচ্ছে না। জায়গা সঙ্কট শুরু হয়ে গেছে, কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন কনটেইনার নামানো বন্ধ করতে হতে পারে।”

বন্দরের ধারণক্ষমতা ৫৩,০০০ টিইইউস হলেও বর্তমানে জমে আছে ৪১,০০০ এর বেশি টিইইউস কনটেইনার। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ১,০০০ টিইইউস কনটেইনার খালাস হয়, এখন তা পুরোপুরি বন্ধ।

শুধু শিল্প খাত নয়, ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরাও। ফাল্গুনী ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল খান জানান, “আজকেও কোনো শুল্কায়ন হয়নি। দেরির কারণে চারগুণ পর্যন্ত অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হচ্ছে।”

বিশেষভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে পোশাক খাত। বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, “আমাদের এখনই কাঁচামাল দরকার। ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিতাদেশের সুযোগে রপ্তানির আদেশ পেয়েছি, কিন্তু পণ্য না পেয়ে সময়মতো ডেলিভারি দিতে পারছি না।”

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস দেশের ৯৫% আমদানি-রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন সম্পন্ন করে। এই গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি কার্যত এখন নিথর।

২০ মে আলোচনার আশ্বাসে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত হলেও ২১ মে থেকে আবারও কার্যক্রমে স্থবিরতা ফিরে আসে। কর্মকর্তারা মুখে বলছেন কার্যক্রম চলছে, কিন্তু বাস্তবে কাগজে-কলমে বন্ধই। কেউই প্রকাশ্যে কথা বলতে চাইছেন না।

এই অচলাবস্থা শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয়, গোটা আমদানি-রপ্তানি অর্থনীতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, পণ্য আটকে থাকায় ব্যবসায়ীদের খরচ বেড়েই চলেছে। চলমান পরিস্থিতি দ্রুত না বদলালে ক্ষতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াতে পারে কোটি কোটি ডলারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বন্দরে অচলাবস্থা: কলম বিরতিতে থেমে গেছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কার্যক্রম

আপডেট সময় ০৪:৩১:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

 

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার এসে জমা হলেও খালাস হচ্ছে না একটিও। প্রতিদিন শত শত কনটেইনার পণ্যসহ নামছে, কিন্তু কাস্টমসের শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কোনো পণ্য ছাড়া যাচ্ছে না। ফলে জমে যাচ্ছে কনটেইনার, ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা, বিশেষ করে পোশাক শিল্প।

এই অচলাবস্থার কারণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে নতুন দুটি বিভাগ ‘রাজস্ব নীতি’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ গঠনের সিদ্ধান্ত। ১৪ মে থেকে মাঠপর্যায়ের কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কলম বিরতিতে যান।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, “প্রতি ঘণ্টায় কনটেইনার নামছে, কিন্তু খালাস হচ্ছে না। জায়গা সঙ্কট শুরু হয়ে গেছে, কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন কনটেইনার নামানো বন্ধ করতে হতে পারে।”

বন্দরের ধারণক্ষমতা ৫৩,০০০ টিইইউস হলেও বর্তমানে জমে আছে ৪১,০০০ এর বেশি টিইইউস কনটেইনার। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ১,০০০ টিইইউস কনটেইনার খালাস হয়, এখন তা পুরোপুরি বন্ধ।

শুধু শিল্প খাত নয়, ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরাও। ফাল্গুনী ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল খান জানান, “আজকেও কোনো শুল্কায়ন হয়নি। দেরির কারণে চারগুণ পর্যন্ত অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হচ্ছে।”

বিশেষভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে পোশাক খাত। বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, “আমাদের এখনই কাঁচামাল দরকার। ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিতাদেশের সুযোগে রপ্তানির আদেশ পেয়েছি, কিন্তু পণ্য না পেয়ে সময়মতো ডেলিভারি দিতে পারছি না।”

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস দেশের ৯৫% আমদানি-রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন সম্পন্ন করে। এই গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি কার্যত এখন নিথর।

২০ মে আলোচনার আশ্বাসে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত হলেও ২১ মে থেকে আবারও কার্যক্রমে স্থবিরতা ফিরে আসে। কর্মকর্তারা মুখে বলছেন কার্যক্রম চলছে, কিন্তু বাস্তবে কাগজে-কলমে বন্ধই। কেউই প্রকাশ্যে কথা বলতে চাইছেন না।

এই অচলাবস্থা শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয়, গোটা আমদানি-রপ্তানি অর্থনীতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, পণ্য আটকে থাকায় ব্যবসায়ীদের খরচ বেড়েই চলেছে। চলমান পরিস্থিতি দ্রুত না বদলালে ক্ষতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াতে পারে কোটি কোটি ডলারে।