ওষুধ ছাড়াই ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণে যেসব খাবার খাবেন!

- আপডেট সময় ০৮:২০:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
- / 5
ইউরিক এসিড শরীরে একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা মূলত খাবারে থাকা পুরিন নামক এক ধরনের যৌগ ভেঙে তৈরি হয়। সাধারণত কিডনির মাধ্যমে এটি প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যায়। তবে যখন শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে যায় এবং কিডনি তা ঠিকভাবে নিষ্কাশন করতে পারে না, তখন তা রক্তে জমা হয়ে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে। এর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হলো গাউট বা গেঁটে বাত, যা অস্থিসন্ধিতে তীব্র ব্যথা, ফোলাভাব ও জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে।
অনেকে এই সমস্যার সমাধানে ওষুধের ওপর নির্ভর করে থাকেন, তবে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করেও ইউরিক এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নিচে ওষুধ ছাড়াই ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণে সহায়ক কিছু খাবারের তালিকা তুলে ধরা হলো—
পানি ও হালকা তরল: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান ইউরিক এসিড বের করে দিতে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করলে কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়ে এবং ইউরিক এসিড প্রস্রাবের মাধ্যমে সহজেই বের হয়ে যায়। সঙ্গে হালকা নারকেল পানি বা লেবু পানি পান করলেও উপকার পাওয়া যায়।
চেরি ও বেরিজাতীয় ফল: চেরি, স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি ও ব্লুবেরি এই ফলগুলো অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানে ভরপুর, যা গাউটের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। চেরিতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন নামক উপাদান ইউরিক এসিড কমাতে কার্যকর।
সবুজ শাকসবজি: পালং শাক বাদে অন্যান্য সবুজ শাক যেমন ঢেঁড়স, কচু শাক, মুলা শাক, করলা ইত্যাদি ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এগুলোতে ক্যালোরি কম এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি, যা শরীরের প্রদাহ কমায়।
আপেল ও কলা: আপেলে থাকা ম্যালিক অ্যাসিড ইউরিক এসিড ভেঙে দিতে সহায়তা করে। অপরদিকে, কলা শরীরের পিএইচ ব্যালান্স বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা ইউরিক এসিড কমাতে সাহায্য করে।
লেবু ও টকজাতীয় ফল: লেবু, কমলা, মাল্টা ইত্যাদিতে থাকা ভিটামিন ‘সি’ ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
গোটা শস্য : ইউরিক এসিডের সঙ্গে লড়াই করতে গোটা শস্য খান। ব্রাউন রাইস, বার্লে ও আটার পাউরুটিসহ উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে পারেন। এ ছাড়া খাদ্যতালিকায় রাখুন মটরশুঁটি, চানা ডাল, আমন্ড, চিয়া সিড ও ফ্ল্যাক্স সিড।
কফির পরিবর্তে গ্রিন টি: গ্রিন টি শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়া বাড়ায় এবং ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে গাউটের ঝুঁকি কমে।
নিয়ন্ত্রণে রাখতে যা পরিহার করবেন: মাংস, কলিজা, চিংড়ি, মাছের ডিম, ডাল জাতীয় খাবার ও মিষ্টিজাতীয় খাবার পরিমিত খেতে হবে। এছাড়া অতিরিক্ত অ্যালকোহল ও চিনিযুক্ত পানীয় সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ওষুধ ছাড়াও ইউরিক অ্যাসিডকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, যা দীর্ঘমেয়াদে শরীরকে সুস্থ রাখবে।