তৃতীয় দেশে ইউরেনিয়াম পাঠানোর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলো তেহরান

- আপডেট সময় ০৯:৪৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
- / 12
যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করল ইরান। দেশটির পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নিজেদের ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত অন্য কোনো দেশে পাঠানোর প্রশ্নই ওঠে না। এমন অবস্থানে তেহরান আন্তর্জাতিক রাজনীতির জটিল প্রেক্ষাপটে একপ্রকার সাহসী বার্তাই দিয়েছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
সম্প্রতি ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব আসে, ইরান যেন তার সংবেদনশীল ইউরেনিয়াম মজুত তৃতীয় কোনো নিরপেক্ষ দেশে পাঠিয়ে নিরাপত্তা ও আস্থার বার্তা দেয়। কিন্তু তেহরান দ্ব্যর্থহীনভাবে তা নাকচ করে জানিয়ে দেয়, দেশের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সম্পদ ইরানের ভূখণ্ডের বাইরে পাঠানো হবে না এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌম সিদ্ধান্ত।
ইরানের এই সিদ্ধান্তে যেমন উত্তেজনার পারদ চড়া উঠেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, তেমনি আলোচনার টেবিলেও জোরাল হয়েছে কূটনৈতিক হিসাব-নিকাশ। কেউ কেউ মনে করছেন, এই মনোভাব ভবিষ্যতে একটি সামরিক উত্তেজনার পথ প্রশস্ত করতে পারে। আবার অনেক বিশ্লেষক বলছেন, ইরান এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিণত ও কৌশলী। সরাসরি যুদ্ধের পথে না গিয়ে তারা আন্তর্জাতিক চাপে নিজের অবস্থান দৃঢ় করার নীতিতে এগোচ্ছে।
তেহরান বলছে, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে তারা শুরু থেকেই স্বচ্ছ থেকেছে। আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের নিয়মিত পরিদর্শনের সুযোগও দিয়েছে। তবু বারবার সন্দেহ আর চাপের মুখে তারা আর নত হতে রাজি নয়।
এদিকে, পশ্চিমা দেশগুলোর দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে ইরানের এই মনোভাব দেখে। যদিও এখনই চূড়ান্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা আসেনি, তবে কূটনৈতিক মহলে উত্তেজনা বাড়ছে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য সংঘাত ঘিরে।
অন্যদিকে ইরানের অভ্যন্তরে এই সিদ্ধান্তকে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার দৃঢ় পদক্ষেপ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। সরকার সমর্থিত গণমাধ্যমগুলো বলছে, দেশের বিজ্ঞান ও পরমাণু সক্ষমতা কোনো অবস্থাতেই অন্য কারও চাপে ভেঙে পড়বে না।
পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। তবে এটুকু নিশ্চিত, ইরান এখন আর আগের মতো সরল প্রতিক্রিয়ায় ভেসে যাচ্ছে না তারা কূটনৈতিক তৎপরতায় নিজস্ব কৌশলে আগাচ্ছে, এবং বিশ্ব তাকিয়ে আছে তেহরানের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।