ঢাকা ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৬০টি ওষুধের দাম বেঁধে দিল সরকার

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৩৫:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫
  • / 28

ছবি: সংগৃহীত

 

অত্যাবশ্যকীয় ২৬০টি ওষুধের দাম বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর ফলে প্রয়োজনীয় এসব ওষুধ সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই লক্ষ্যে ১৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) টাস্কফোর্সের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে ওষুধের তালিকা হালনাগাদ করা এবং উৎপাদকদের জন্য ন্যায্য মুনাফা নিশ্চিত করে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, এর আগে একাধিকবার ওষুধের দাম নির্ধারণ করা হলেও ঔষধ প্রশাসন তা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য এবার একটি শক্তিশালী জাতীয় কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব উঠেছে, যার প্রধান থাকবেন মন্ত্রী পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা।

সরকার এ প্রক্রিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ইউনিসেফকে যুক্ত করেছে। তবে টাস্কফোর্সে কোনো ওষুধ উৎপাদনকারীর প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শিল্প মালিকরা।

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব ও ডেল্টা ফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন—

“যারা ওষুধ তৈরি করেন, তাদের বাদ দিয়ে মূল্য নির্ধারণের নীতিমালা করলে চিকিৎসক, রোগী ও প্রস্তুতকারক সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ ওষুধের দাম কেবল কাঁচামালের খরচ নয়; গবেষণা, মান নিয়ন্ত্রণ ও আধুনিকায়নের খরচও বিবেচনায় নিতে হয়।”

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইকিউভিআইএর তথ্যমতে, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে প্রতি ১০০ টাকার মধ্যে ৪৪ টাকা ব্যয় হয় শুধু ওষুধে। বৈশ্বিক গড় হলো ১৫ শতাংশ।

২০২২ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপে দেখা গেছে, ওষুধের উচ্চমূল্যের কারণে প্রায় ৬১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছেন।

২০১৬ সালে অ্যান্টিবায়োটিক, নিউমোনিয়া, সর্দি-জ্বর, উচ্চ রক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিক আলসার, কৃমিনাশক, ব্যথানাশক ও হাঁপানির ওষুধসহ ২৮৬টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা করা হয়। তবে তখন মাত্র ১১৭টির দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রতিবছর তালিকা হালনাগাদ করার কথা থাকলেও গত ৯ বছরে কার্যকর তদারকি হয়নি।

রোববার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ এবং সরকারের রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ কৌশল বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন

বাংলাদেশ ব্যাংক

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

অর্থ মন্ত্রণালয়

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি বিভাগ

বাংলাদেশ এপিআই অ্যান্ড ইন্টারমিডিয়ারিজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের দুজন প্রতিনিধি

বিষয় :

নিউজটি শেয়ার করুন

২৬০টি ওষুধের দাম বেঁধে দিল সরকার

আপডেট সময় ০৪:৩৫:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

 

অত্যাবশ্যকীয় ২৬০টি ওষুধের দাম বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর ফলে প্রয়োজনীয় এসব ওষুধ সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই লক্ষ্যে ১৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) টাস্কফোর্সের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে ওষুধের তালিকা হালনাগাদ করা এবং উৎপাদকদের জন্য ন্যায্য মুনাফা নিশ্চিত করে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, এর আগে একাধিকবার ওষুধের দাম নির্ধারণ করা হলেও ঔষধ প্রশাসন তা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য এবার একটি শক্তিশালী জাতীয় কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব উঠেছে, যার প্রধান থাকবেন মন্ত্রী পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা।

সরকার এ প্রক্রিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ইউনিসেফকে যুক্ত করেছে। তবে টাস্কফোর্সে কোনো ওষুধ উৎপাদনকারীর প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শিল্প মালিকরা।

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব ও ডেল্টা ফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন—

“যারা ওষুধ তৈরি করেন, তাদের বাদ দিয়ে মূল্য নির্ধারণের নীতিমালা করলে চিকিৎসক, রোগী ও প্রস্তুতকারক সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ ওষুধের দাম কেবল কাঁচামালের খরচ নয়; গবেষণা, মান নিয়ন্ত্রণ ও আধুনিকায়নের খরচও বিবেচনায় নিতে হয়।”

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইকিউভিআইএর তথ্যমতে, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে প্রতি ১০০ টাকার মধ্যে ৪৪ টাকা ব্যয় হয় শুধু ওষুধে। বৈশ্বিক গড় হলো ১৫ শতাংশ।

২০২২ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপে দেখা গেছে, ওষুধের উচ্চমূল্যের কারণে প্রায় ৬১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছেন।

২০১৬ সালে অ্যান্টিবায়োটিক, নিউমোনিয়া, সর্দি-জ্বর, উচ্চ রক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিক আলসার, কৃমিনাশক, ব্যথানাশক ও হাঁপানির ওষুধসহ ২৮৬টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা করা হয়। তবে তখন মাত্র ১১৭টির দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রতিবছর তালিকা হালনাগাদ করার কথা থাকলেও গত ৯ বছরে কার্যকর তদারকি হয়নি।

রোববার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ এবং সরকারের রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ কৌশল বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন

বাংলাদেশ ব্যাংক

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

অর্থ মন্ত্রণালয়

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি বিভাগ

বাংলাদেশ এপিআই অ্যান্ড ইন্টারমিডিয়ারিজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের দুজন প্রতিনিধি