ঢাকা ১১:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূস, তারেক রহমানের অভিনন্দন থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ, সড়কে জনতার ঢল করোনায় আরও দুজনের মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ৭ জন শিক্ষা সমাজ ও রাষ্ট্রের উপযোগী মানুষ গড়ে তোলে : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা পরিবেশই নয়, অর্থনীতি ও জীববৈচিত্র্যও টিকিয়ে রাখতে বন নিরাপত্তার অন্যতম ভিত্তি: রিজওয়ানা জোটবদ্ধ ইসলামি দলই আগামী দিনে দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠবে: চরমোনাই পীর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে বিজিবির ৯ কোটি টাকার এলএসডি ও ফেনসিডিল উদ্ধার গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জামায়াতের ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিশেষ অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে গ্রেফতার ১,৫৪০ জন

শনি গ্রহের চারপাশে নতুন ১২৮টি চাঁদের সন্ধান, আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৭:৫৫:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
  • / 34

ছবি সংগৃহীত

 

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শনির চারপাশে ১২৮টি নতুন চাঁদ আবিষ্কার করেছেন, যা গ্রহটিকে সৌরজগতের সর্বাধিক চাঁদের মালিক করে তুলেছে। তাইওয়ান, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের গবেষকদের এই যুগান্তকারী আবিষ্কার আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন (আইএইউ) আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

গবেষকদের মতে, নতুন চাঁদগুলোর উৎপত্তি সম্ভবত কয়েক কোটি বছর আগে সংঘটিত মহাকাশীয় সংঘর্ষের ফল। শনির নর্স গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত এই চাঁদগুলো বিপরীতমুখী ও কাত হয়ে গ্রহটিকে প্রদক্ষিণ করছে, যা অতীত সংঘর্ষের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়।

এই আবিষ্কারের ফলে শনির মোট চাঁদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৪-এ। তুলনামূলকভাবে, বৃহস্পতির পরিচিত চাঁদের সংখ্যা ৯৫, ইউরেনাসের ২৮ এবং নেপচুনের ১৬টি। গবেষকরা ধারণা করছেন, সৌরজগতের প্রাথমিক পর্যায়ে শনির চারপাশে অনেক বস্তু একত্রে ছিল, যা একাধিক সংঘর্ষের ফলে ক্ষুদ্র চাঁদে পরিণত হয়।

তাইওয়ানের অ্যাকাডেমিয়া সিনিকার পোস্টডক্টরাল গবেষক ড. এডওয়ার্ড অ্যাশটন বলেন, ‘এই আবিষ্কারের পর বৃহস্পতির পক্ষে শনিকে আর ছাড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’ তবে শনির চাঁদগুলো পৃথিবীর চাঁদের মতো গোল ও মসৃণ নয়; এগুলো অপেক্ষাকৃত ছোট, আলুর মতো অসম আকৃতির, যা ‘ইরেগুলার মুনস’ নামে পরিচিত। গবেষকেরা ‘শিফট অ্যান্ড স্ট্যাক’ নামে একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাঁদগুলোর অবস্থান নির্ণয় করেছেন।

কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ব্রেট গ্ল্যাডম্যান বলেন, ‘নতুন চাঁদগুলো শনির বড় চাঁদগুলোর ধ্বংসাবশেষ, যা হয় শনির অন্যান্য চাঁদের সঙ্গে, নয়তো কোনো ধূমকেতুর সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।’ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই চাঁদগুলোর গতিবিধি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে শনির বলয়গুলোর উৎপত্তি সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে।

অন্যদিকে, ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার ‘হেরা’ মহাকাশযান এবার মঙ্গলের ক্ষুদ্রতম চাঁদ ‘ডেইমস’-এর পর্যবেক্ষণ শুরু করবে। ৩০০ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে এটি ডেইমসের গঠন বিশ্লেষণ করবে, যা হয় মঙ্গলের কোনো বিশাল সংঘর্ষের ফলে তৈরি হয়েছে, নয়তো এটি মহাকর্ষীয় টানে আটকে পড়া কোনো গ্রহাণু। একই অভিযানে হেরা বৃহত্তর চাঁদ ‘ফোবোস’-এর ছবিও তুলবে এবং পরবর্তীতে এটি ‘ডিমরফোস’ নামক এক গ্রহাণুর দিকে যাত্রা করবে।

তিন বছর আগে নাসার একটি মহাকাশযান ডিমরফোসকে ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করেছিল, যার প্রভাব বিশ্লেষণ করা হবে ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা বিপজ্জনক গ্রহাণু প্রতিরোধের কৌশল তৈরির জন্য। শনির নতুন চাঁদের আবিষ্কার থেকে শুরু করে মহাকাশ গবেষণার এই চলমান অভিযাত্রা মানবজাতির মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানার পথ আরও প্রশস্ত করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

শনি গ্রহের চারপাশে নতুন ১২৮টি চাঁদের সন্ধান, আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান

আপডেট সময় ০৭:৫৫:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

 

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শনির চারপাশে ১২৮টি নতুন চাঁদ আবিষ্কার করেছেন, যা গ্রহটিকে সৌরজগতের সর্বাধিক চাঁদের মালিক করে তুলেছে। তাইওয়ান, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের গবেষকদের এই যুগান্তকারী আবিষ্কার আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন (আইএইউ) আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

গবেষকদের মতে, নতুন চাঁদগুলোর উৎপত্তি সম্ভবত কয়েক কোটি বছর আগে সংঘটিত মহাকাশীয় সংঘর্ষের ফল। শনির নর্স গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত এই চাঁদগুলো বিপরীতমুখী ও কাত হয়ে গ্রহটিকে প্রদক্ষিণ করছে, যা অতীত সংঘর্ষের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়।

এই আবিষ্কারের ফলে শনির মোট চাঁদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৪-এ। তুলনামূলকভাবে, বৃহস্পতির পরিচিত চাঁদের সংখ্যা ৯৫, ইউরেনাসের ২৮ এবং নেপচুনের ১৬টি। গবেষকরা ধারণা করছেন, সৌরজগতের প্রাথমিক পর্যায়ে শনির চারপাশে অনেক বস্তু একত্রে ছিল, যা একাধিক সংঘর্ষের ফলে ক্ষুদ্র চাঁদে পরিণত হয়।

তাইওয়ানের অ্যাকাডেমিয়া সিনিকার পোস্টডক্টরাল গবেষক ড. এডওয়ার্ড অ্যাশটন বলেন, ‘এই আবিষ্কারের পর বৃহস্পতির পক্ষে শনিকে আর ছাড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’ তবে শনির চাঁদগুলো পৃথিবীর চাঁদের মতো গোল ও মসৃণ নয়; এগুলো অপেক্ষাকৃত ছোট, আলুর মতো অসম আকৃতির, যা ‘ইরেগুলার মুনস’ নামে পরিচিত। গবেষকেরা ‘শিফট অ্যান্ড স্ট্যাক’ নামে একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাঁদগুলোর অবস্থান নির্ণয় করেছেন।

কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ব্রেট গ্ল্যাডম্যান বলেন, ‘নতুন চাঁদগুলো শনির বড় চাঁদগুলোর ধ্বংসাবশেষ, যা হয় শনির অন্যান্য চাঁদের সঙ্গে, নয়তো কোনো ধূমকেতুর সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।’ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই চাঁদগুলোর গতিবিধি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে শনির বলয়গুলোর উৎপত্তি সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে।

অন্যদিকে, ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার ‘হেরা’ মহাকাশযান এবার মঙ্গলের ক্ষুদ্রতম চাঁদ ‘ডেইমস’-এর পর্যবেক্ষণ শুরু করবে। ৩০০ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে এটি ডেইমসের গঠন বিশ্লেষণ করবে, যা হয় মঙ্গলের কোনো বিশাল সংঘর্ষের ফলে তৈরি হয়েছে, নয়তো এটি মহাকর্ষীয় টানে আটকে পড়া কোনো গ্রহাণু। একই অভিযানে হেরা বৃহত্তর চাঁদ ‘ফোবোস’-এর ছবিও তুলবে এবং পরবর্তীতে এটি ‘ডিমরফোস’ নামক এক গ্রহাণুর দিকে যাত্রা করবে।

তিন বছর আগে নাসার একটি মহাকাশযান ডিমরফোসকে ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করেছিল, যার প্রভাব বিশ্লেষণ করা হবে ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা বিপজ্জনক গ্রহাণু প্রতিরোধের কৌশল তৈরির জন্য। শনির নতুন চাঁদের আবিষ্কার থেকে শুরু করে মহাকাশ গবেষণার এই চলমান অভিযাত্রা মানবজাতির মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানার পথ আরও প্রশস্ত করছে।