ঢাকা ১২:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গরমে লোডশেডিং সীমিত রাখতে সরকারের প্রচেষ্টা চলছে: জ্বালানি উপদেষ্টা ইরানে ভয়াবহ বিস্ফোরণে আহত ৫৬১ ছাড়ালো, দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি শ্রীনগরে ধান কাটার কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন কৃষি উপদেষ্টা নির্বাচনের রোডম্যাপ দ্রুত ঘোষণা করুন—রিজভীর দাবি টানা ছয় দিন বন্ধ বুড়িমারী-লালমনিরহাট ট্রেন যোগাযোগ নেশাজাত দ্রব্যে অচেতন ৪ নিরাপত্তাকর্মী, ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন মিরসরাইয়ে ঢ্যাঁড়শ চাষে স্বাবলম্বী কৃষকেরা, বাড়ছে আবাদ ইরানের বন্দর আব্বাসে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, আহত অন্তত ১৯৫ জন মে মাসে টানা ৩ দিন করে দুইবার ছুটি মিলছে সরকারি চাকরিজীবীদের তিন দাবিতে ফের আন্দোলনে যাচ্ছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা

সাইবার অপরাধের বিশ্বব্যাপী বিস্তার: জাতিসংঘের সতর্কতা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০২:২১:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৮ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

 

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে সাইবার অপরাধের ভয়ঙ্কর জাল। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এশিয়াজুড়ে বিস্তার ঘটিয়ে এবার আফ্রিকা ও ইউরোপেও নিজের শিকড় গেড়ে বসতে চলেছে এই সাইবার কেলেঙ্কারির চক্র। সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ায় কয়েক বিলিয়ন ডলারের একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, যারা সুপরিকল্পিতভাবে এই অপরাধ সংগঠিত করছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এই চক্র সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। চীনসহ একাধিক দেশের গ্যাং ক্রিপ্টোকারেন্সিকে ব্যবহার করে এই অপরাধ ছড়িয়ে দিচ্ছে। শুধু প্রযুক্তিই নয়, প্রেমের ফাঁদেও ফেলছে তারা। নারীদের ব্যবহার করে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে এই চক্র। ফলে অসংখ্য মানুষ আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে।

জাতিসংঘের ড্রাগ ও অপরাধবিষয়ক সংস্থা ইউএনওডিসি-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কার্যকরী প্রতিনিধি বেনেডিক্ট হফম্যান জানান, এই সাইবার অপরাধ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জগুলোতেও ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। প্রশাসনের চেষ্টার পরও তা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চলে এই অপরাধমূলক কার্যকলাপ সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেখানে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে প্রশাসনের পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, আর সেই সুযোগেই মাথাচাড়া দিচ্ছে অপরাধী চক্রগুলো।

এই গ্যাংগুলো শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত প্রতারণাই নয়, মানব পাচারের সঙ্গেও জড়িত। পাচার হওয়া ব্যক্তিদের জোর করে এই অপরাধে যুক্ত করা হচ্ছে। শুধু ২০২৩ সালেই সাইবার অপরাধের কারণে বিশ্বজুড়ে তিন হাজার সাতশ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র আমেরিকাতেই ৫৬০ কোটি ডলার হারিয়েছে সাধারণ মানুষ।

জাতিসংঘের মতে, এই বৈশ্বিক সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সম্প্রতি চীন মিয়ানমারে বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে প্রায় সাত হাজার মানুষকে উদ্ধার করেছে, যাদের অধিকাংশই বিভিন্ন দেশের নাগরিক। এদেরকে পাচার করে সাইবার অপরাধে নিযুক্ত করা হয়েছিল। একইভাবে কাম্বোডিয়াতেও চলছে লাগাতার অভিযান।

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়া এই অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক মোকাবেলায় এখনই প্রয়োজন দৃঢ় আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ। অন্যথায়, এই সাইবার দানব রূপান্তরিত হবে বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য এক বড় হুমকিতে।

নিউজটি শেয়ার করুন

সাইবার অপরাধের বিশ্বব্যাপী বিস্তার: জাতিসংঘের সতর্কতা

আপডেট সময় ০২:২১:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

 

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে সাইবার অপরাধের ভয়ঙ্কর জাল। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এশিয়াজুড়ে বিস্তার ঘটিয়ে এবার আফ্রিকা ও ইউরোপেও নিজের শিকড় গেড়ে বসতে চলেছে এই সাইবার কেলেঙ্কারির চক্র। সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ায় কয়েক বিলিয়ন ডলারের একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, যারা সুপরিকল্পিতভাবে এই অপরাধ সংগঠিত করছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এই চক্র সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। চীনসহ একাধিক দেশের গ্যাং ক্রিপ্টোকারেন্সিকে ব্যবহার করে এই অপরাধ ছড়িয়ে দিচ্ছে। শুধু প্রযুক্তিই নয়, প্রেমের ফাঁদেও ফেলছে তারা। নারীদের ব্যবহার করে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে এই চক্র। ফলে অসংখ্য মানুষ আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে।

জাতিসংঘের ড্রাগ ও অপরাধবিষয়ক সংস্থা ইউএনওডিসি-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কার্যকরী প্রতিনিধি বেনেডিক্ট হফম্যান জানান, এই সাইবার অপরাধ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জগুলোতেও ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। প্রশাসনের চেষ্টার পরও তা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চলে এই অপরাধমূলক কার্যকলাপ সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেখানে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে প্রশাসনের পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, আর সেই সুযোগেই মাথাচাড়া দিচ্ছে অপরাধী চক্রগুলো।

এই গ্যাংগুলো শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত প্রতারণাই নয়, মানব পাচারের সঙ্গেও জড়িত। পাচার হওয়া ব্যক্তিদের জোর করে এই অপরাধে যুক্ত করা হচ্ছে। শুধু ২০২৩ সালেই সাইবার অপরাধের কারণে বিশ্বজুড়ে তিন হাজার সাতশ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র আমেরিকাতেই ৫৬০ কোটি ডলার হারিয়েছে সাধারণ মানুষ।

জাতিসংঘের মতে, এই বৈশ্বিক সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সম্প্রতি চীন মিয়ানমারে বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে প্রায় সাত হাজার মানুষকে উদ্ধার করেছে, যাদের অধিকাংশই বিভিন্ন দেশের নাগরিক। এদেরকে পাচার করে সাইবার অপরাধে নিযুক্ত করা হয়েছিল। একইভাবে কাম্বোডিয়াতেও চলছে লাগাতার অভিযান।

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়া এই অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক মোকাবেলায় এখনই প্রয়োজন দৃঢ় আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ। অন্যথায়, এই সাইবার দানব রূপান্তরিত হবে বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য এক বড় হুমকিতে।