ঢাকা ০৭:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুষ্টিয়া-১ আসনের সাবেক এমপি গ্রেপ্তার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে জামায়াতের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা: প্রেসসচিব ইরানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শেয়ার বাজার কারসাজি: সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা শান্ত-মুশফিকের জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন শেষে বড় সংগ্রহের পথে টাইগাররা ডেঙ্গু তাণ্ডব অব্যাহত: ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ২৪৪, বরিশালে সর্বোচ্চ ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সব পক্ষের প্রতিনিধিত্ব নেই: এনসিপি এশিয়া কাপের ফাইনালে স্বর্ণ জয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশী তীরন্দাজ আব্দুর রহমান চট্টগ্রামে একদিনে আরও ১০ জনের করোনা শনাক্ত, ১৩ দিনে আক্রান্ত ৩৮ সুন্দরবনে হরিণ শিকারের ৬০০ ফাঁদ ও নিষিদ্ধ কাঁকড়া চারু জব্দ

পর্যটনে বিদেশি পর্যটক হারাচ্ছে বাংলাদেশ, ই-ভিসা চালুর তাগিদ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০২:২০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
  • / 4

ছবি সংগৃহীত

 

বাংলাদেশে এখনো চালু হয়নি কোনো ইলেকট্রনিক বা ই-ভিসা ব্যবস্থা। ফলে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে জটিলতার আশঙ্কায় অনেক বিদেশি পর্যটক বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন। ট্যুর অপারেটর, এয়ারলাইন্স ও পর্যটন বিশ্লেষকদের মতে, বিদেশি পর্যটক বাড়াতে হলে দ্রুত ই-ভিসা চালু করা জরুরি। প্রাথমিকভাবে কিছু নির্দিষ্ট দেশের জন্য এ সুবিধা চালুর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

তুরস্কের উদাহরণ টেনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা বা সেনজেন ভিসা থাকলেই সে দেশের পর্যটকরা সহজেই অনলাইনে ই-ভিসার আবেদন করে কম সময়েই ভিসা পাচ্ছেন। ফলস্বরূপ, দেশটি পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের আছে অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক ঐতিহ্য। তবুও ই-ভিসা না থাকায় অনেকেই ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করছেন। বর্তমানে চালু থাকা অন-অ্যারাইভাল ভিসা সিস্টেম নির্ভরযোগ্য নয়, যা পর্যটকদের মনে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে।

আটাব সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ বলেন, “ভিসা নিতে দূতাবাসে যাওয়া সময়সাপেক্ষ এবং অনেকের কাছে ঝামেলাপূর্ণ মনে হয়। এতে অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।”

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম জানান, “শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর আগেই যদি ই-ভিসা চালু করা যায়, তাহলে বিদেশি পর্যটকদের আগমন অনেক গুণে বাড়বে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোয়েব-উর রহমান বলেন, “যেসব দেশ থেকে বাংলাদেশে বেশি পর্যটক আসেন, প্রাথমিকভাবে তাদের জন্য ই-ভিসা চালু করা যেতে পারে।”

পর্যটন বিশেষজ্ঞ তৌফিক রহমান বলেন, “বাংলাদেশকে একটি ট্যুরিস্ট হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে ই-ভিসার বিকল্প নেই।”

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া জানান, “ই-ভিসা চালু হলে এটি দেশের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের বলেন, “ই-ভিসা চালুর বিষয়ে আলোচনা চলছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। পাশাপাশি গেটওয়ে ভিসা ও থার্ড কান্ট্রি ভিসা নিয়েও ভাবনা চলছে।”

উল্লেখ্য, দেশে প্রতিবছর প্রায় ছয় লাখ বিদেশি নাগরিক বিভিন্ন প্রকল্প, গবেষণা বা কূটনৈতিক কাজে আসেন। অন-অ্যারাইভাল ভিসা প্রক্রিয়ায় বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়, যা বাংলাদেশের পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই সময় এই সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার।

নিউজটি শেয়ার করুন

পর্যটনে বিদেশি পর্যটক হারাচ্ছে বাংলাদেশ, ই-ভিসা চালুর তাগিদ

আপডেট সময় ০২:২০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

 

বাংলাদেশে এখনো চালু হয়নি কোনো ইলেকট্রনিক বা ই-ভিসা ব্যবস্থা। ফলে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে জটিলতার আশঙ্কায় অনেক বিদেশি পর্যটক বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন। ট্যুর অপারেটর, এয়ারলাইন্স ও পর্যটন বিশ্লেষকদের মতে, বিদেশি পর্যটক বাড়াতে হলে দ্রুত ই-ভিসা চালু করা জরুরি। প্রাথমিকভাবে কিছু নির্দিষ্ট দেশের জন্য এ সুবিধা চালুর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

তুরস্কের উদাহরণ টেনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা বা সেনজেন ভিসা থাকলেই সে দেশের পর্যটকরা সহজেই অনলাইনে ই-ভিসার আবেদন করে কম সময়েই ভিসা পাচ্ছেন। ফলস্বরূপ, দেশটি পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের আছে অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক ঐতিহ্য। তবুও ই-ভিসা না থাকায় অনেকেই ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করছেন। বর্তমানে চালু থাকা অন-অ্যারাইভাল ভিসা সিস্টেম নির্ভরযোগ্য নয়, যা পর্যটকদের মনে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে।

আটাব সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ বলেন, “ভিসা নিতে দূতাবাসে যাওয়া সময়সাপেক্ষ এবং অনেকের কাছে ঝামেলাপূর্ণ মনে হয়। এতে অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।”

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম জানান, “শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর আগেই যদি ই-ভিসা চালু করা যায়, তাহলে বিদেশি পর্যটকদের আগমন অনেক গুণে বাড়বে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোয়েব-উর রহমান বলেন, “যেসব দেশ থেকে বাংলাদেশে বেশি পর্যটক আসেন, প্রাথমিকভাবে তাদের জন্য ই-ভিসা চালু করা যেতে পারে।”

পর্যটন বিশেষজ্ঞ তৌফিক রহমান বলেন, “বাংলাদেশকে একটি ট্যুরিস্ট হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে ই-ভিসার বিকল্প নেই।”

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া জানান, “ই-ভিসা চালু হলে এটি দেশের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের বলেন, “ই-ভিসা চালুর বিষয়ে আলোচনা চলছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। পাশাপাশি গেটওয়ে ভিসা ও থার্ড কান্ট্রি ভিসা নিয়েও ভাবনা চলছে।”

উল্লেখ্য, দেশে প্রতিবছর প্রায় ছয় লাখ বিদেশি নাগরিক বিভিন্ন প্রকল্প, গবেষণা বা কূটনৈতিক কাজে আসেন। অন-অ্যারাইভাল ভিসা প্রক্রিয়ায় বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়, যা বাংলাদেশের পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই সময় এই সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার।