বিসিবির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন হাথুরুসিংহে, অভিযোগ ‘ক্যারিয়ার ধ্বংসের চক্রান্ত’

- আপডেট সময় ০১:৪৫:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
- / 15
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বিসিবির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তার দাবি, আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ না দিয়েই তাকে বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, যা তার কোচিং ক্যারিয়ারকেই ধ্বংস করে দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার ‘কোড স্পোর্টস’-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাথুরুসিংহে বলেন, “তারা আমার কোনো বক্তব্য না শুনেই শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে চুক্তি বাতিল করেছে। এতে আমার পেশাগত জীবনে ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে।”
২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ চলাকালীন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বরখাস্ত করা হয় এই শ্রীলঙ্কান কোচকে। তবে হাথুরুসিংহে এই অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছেন।
তিনি জানান, “আমি নাসুমকে চড় মারিনি। ব্যাটসম্যানদের গ্লাভস পাঠানোর জন্য পিঠে হালকা করে টোকা দিয়েছিলাম মাত্র। আমি কখনোই কোনো খেলোয়াড়কে শারীরিকভাবে আঘাত করিনি।”
বরখাস্তের পর বাংলাদেশে অবস্থানকালেও তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছেন বলে অভিযোগ করেন হাথুরুসিংহে। তার ভাষায়, “আগে একজন ড্রাইভার আর একজন বন্দুকধারী সঙ্গে থাকত। কিন্তু বরখাস্ত হওয়ার পর শুধু ড্রাইভার ছিল। তখনই বুঝে গিয়েছিলাম, কিছু একটা ঠিক নেই।”
একদিন ব্যাংকে টাকা তুলতে গিয়েই টেলিভিশনের স্ক্রলে নিজের বরখাস্তের খবর দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। ব্যাংক ম্যানেজার তাকে সাবধান করে দেন রাস্তায় যেন না বের হন। এরপরই হুডি ও টুপি পরে এক বন্ধুর সহায়তায় রাতের ফ্লাইটে দেশ ছাড়েন তিনি।
এই ঘটনায় হাথুরুসিংহের পক্ষ নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক সহকারী কোচ নিক পোথাস এবং স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। তারা অভিযোগটিকে ভিত্তিহীন এবং অতিরঞ্জিত বলে আখ্যা দিয়েছেন। হেরাথ বলেন, “বিশ্বকাপ চলাকালে চারপাশে অনেক ক্যামেরা ছিল। যদি কিছু ঘটত, প্রমাণ থাকতই।” পোথাস বলেন, “এই অভিযোগের পেছনে ব্যক্তিগত অভিপ্রায় থাকতে পারে। হাথুরু এমন কোচ না, যিনি এমন আচরণ করবেন।”
হাথুরুসিংহের দাবি, বিসিবির বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদের পূর্বপরিকল্পিত সিদ্ধান্তেই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। “তারা শুধু আমার চাকরিই নয়, ক্যারিয়ারটাকেই ধ্বংস করেছে,” বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, হাথুরুসিংহে দুই দফায় বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে প্রায় ছয় বছর দায়িত্ব পালন করেন। তবে তার শেষ অধ্যায়টা তার নিজের ভাষায়, “অবিচার আর অপমানের দুঃখজনক পরিণতি।”