০৯:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
নিজামী-মীর কাসেম-সালাউদ্দিন কাদেরকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধের খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৯ থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন সেনা ও সিআইএ এজেন্টদের বহিষ্কারের চিন্তা কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট পেত্রোর পেন্টাগনের বড় চুক্তি পেল ট্রাম্পের ছেলের ড্রোন কোম্পানি কেন ট্রাম্প-পুতিনের বুদাপেস্ট বৈঠক বাতিল হলো? হুমকিতে বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকাদান কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার হুঁশিয়ারি: “আমাদের হাতে ৫ হাজার রুশ ক্ষেপণাস্ত্র” সিইসির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, গভীর সমুদ্রে যাত্রা নিষেধ আতলেতিকোর জালে ১৪ মিনিটে ৪ গোল, দাপুটে জয়ে আর্সেনাল

পার্বত্য জনগোষ্ঠীকে মূল স্রোতধারায় আনতে চাই: সুপ্রদীপ চাকমা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৭:০৮:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
  • / 37

ছবি সংগৃহীত

 

 

রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক কর্মশালায় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, “আমরা চাই পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগোষ্ঠী দেশের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত হোক।”

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৬ মে) মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলের বড় সমস্যা হলো এখানকার জনগোষ্ঠী জানে না তাদের কী দরকার বা কীভাবে নিজেদের প্রয়োজন আদায় করতে হয়। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন নিজেদের প্রয়োজনগুলো চিহ্নিত করে সঠিক ফোরামে উপস্থাপনের দক্ষতা অর্জন করা।”

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা জানান, পার্বত্য অঞ্চলের অনেক মাতৃভাষা বিলুপ্তির পথে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, “বান্দরবানের আলীকদমে এখনো ৬-৭ জন মানুষ আছেন যারা কেবল নিজ মাতৃভাষায় কথা বলেন। তাদের মৃত্যুর সাথে সাথে ভাষাটিও হারিয়ে যাবে।” এই ভাষাগুলো সংরক্ষণের জন্য মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পাশাপাশি মন্ত্রণালয়কেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষা ও জীবিকার মান একরকম নয়। তাই রেসিডেনসিয়াল শিক্ষা ব্যবস্থা চালু এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।” প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

শিক্ষার পাশাপাশি জীবিকার উন্নয়নকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “লাইভলিহুড ইম্প্রুভমেন্ট ও পরিবেশগত ভারসাম্য গড়ে তোলা এখন জরুরি।” রাঙামাটির কাপ্তাই লেকের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই লেককে উন্নয়ন করতে পারলে তা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখতে পারবে। পাশাপাশি, পর্যটন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়ে অল্প সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের চেহারা বদলে দেওয়া সম্ভব।”

তিনি বলেন, “সরকার পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রস্তুত। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে, যাতে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।”

কর্মশালায় জানানো হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করে ১১টি জাতিগোষ্ঠীর ১৬ লাখের বেশি মানুষ। এসডিজি বাস্তবায়নে ১৬৯টি সূচকের মধ্যে ৩৯টি সূচককে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে সমতল অঞ্চলের সঙ্গে পার্বত্য এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা, সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, জীবনধারা এবং শিক্ষার মানের পার্থক্য থাকায় একটি ফিজিবিলিটি স্টাডির মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়নে ইউএনডিপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে কাজ করছে।

কর্মশালায় আলোচনায় উঠে আসে তীব্র পানি সংকট, পরিবেশগত দুর্বলতা, বিদ্যালয়ের ঘাটতি, বহুমাত্রিক দারিদ্র্য, তথ্যের অভাব ও বাজার মনিটরিংয়ের মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ। বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ফিজিবিলিটি স্টাডিকে মূল্যায়ন করা হবে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল খালেক। উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং, ইউএনডিপির সোনালী দয়ারত্নে, অতিরিক্ত সচিব মো. মনিরুল ইসলাম, ও ড. আবু ইউসুফ প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

পার্বত্য জনগোষ্ঠীকে মূল স্রোতধারায় আনতে চাই: সুপ্রদীপ চাকমা

আপডেট সময় ০৭:০৮:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

 

 

রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক কর্মশালায় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, “আমরা চাই পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগোষ্ঠী দেশের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত হোক।”

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৬ মে) মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলের বড় সমস্যা হলো এখানকার জনগোষ্ঠী জানে না তাদের কী দরকার বা কীভাবে নিজেদের প্রয়োজন আদায় করতে হয়। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন নিজেদের প্রয়োজনগুলো চিহ্নিত করে সঠিক ফোরামে উপস্থাপনের দক্ষতা অর্জন করা।”

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা জানান, পার্বত্য অঞ্চলের অনেক মাতৃভাষা বিলুপ্তির পথে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, “বান্দরবানের আলীকদমে এখনো ৬-৭ জন মানুষ আছেন যারা কেবল নিজ মাতৃভাষায় কথা বলেন। তাদের মৃত্যুর সাথে সাথে ভাষাটিও হারিয়ে যাবে।” এই ভাষাগুলো সংরক্ষণের জন্য মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পাশাপাশি মন্ত্রণালয়কেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষা ও জীবিকার মান একরকম নয়। তাই রেসিডেনসিয়াল শিক্ষা ব্যবস্থা চালু এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।” প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

শিক্ষার পাশাপাশি জীবিকার উন্নয়নকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “লাইভলিহুড ইম্প্রুভমেন্ট ও পরিবেশগত ভারসাম্য গড়ে তোলা এখন জরুরি।” রাঙামাটির কাপ্তাই লেকের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই লেককে উন্নয়ন করতে পারলে তা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখতে পারবে। পাশাপাশি, পর্যটন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়ে অল্প সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের চেহারা বদলে দেওয়া সম্ভব।”

তিনি বলেন, “সরকার পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রস্তুত। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে, যাতে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।”

কর্মশালায় জানানো হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করে ১১টি জাতিগোষ্ঠীর ১৬ লাখের বেশি মানুষ। এসডিজি বাস্তবায়নে ১৬৯টি সূচকের মধ্যে ৩৯টি সূচককে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে সমতল অঞ্চলের সঙ্গে পার্বত্য এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা, সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, জীবনধারা এবং শিক্ষার মানের পার্থক্য থাকায় একটি ফিজিবিলিটি স্টাডির মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়নে ইউএনডিপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে কাজ করছে।

কর্মশালায় আলোচনায় উঠে আসে তীব্র পানি সংকট, পরিবেশগত দুর্বলতা, বিদ্যালয়ের ঘাটতি, বহুমাত্রিক দারিদ্র্য, তথ্যের অভাব ও বাজার মনিটরিংয়ের মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ। বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ফিজিবিলিটি স্টাডিকে মূল্যায়ন করা হবে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল খালেক। উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং, ইউএনডিপির সোনালী দয়ারত্নে, অতিরিক্ত সচিব মো. মনিরুল ইসলাম, ও ড. আবু ইউসুফ প্রমুখ।