বাংলাদেশ মিশনে জনবল বৃদ্ধির উদ্যোগ নিল সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

- আপডেট সময় ০২:০৯:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
- / 18
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের বিদেশি মিশনগুলো, বিশেষ করে কনস্যুলেট জেনারেল অফিসগুলোতে জনবল বাড়ানোর কার্যক্রম শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, “আমরা আমাদের কনস্যুলার পদগুলোতে মানবসম্পদ বাড়াতে কাজ শুরু করেছি। আশা করছি, এই উদ্যোগ অন্তত আংশিক হলেও সুফল দেবে।” ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেন সার্ভিস ডে ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রবাসীদের ভোগান্তির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রবাসী শ্রমিকদের অন্তত ৮০ শতাংশ সমস্যা অভিবাসনের আগেই দেশের ভেতরে তৈরি হয়। তিনি মন্তব্য করেন, “তারপরও বিদেশে আমাদের মিশনগুলোকে প্রায় ১০০ শতাংশ সমস্যা সামলাতে হয়। এটি মোটেও বাস্তবসম্মত নয়। বরং দেশের ভেতর থেকেই প্রক্রিয়াগত সমস্যাগুলো সমাধানে আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে।”
তিনি জানান, সীমিত জনবল ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী এক কোটির বেশি প্রবাসীকে সেবা দিচ্ছে বাংলাদেশের মিশনগুলো। সৌদি আরবের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “প্রায় ৩২ লাখ বাংলাদেশি সেখানে বসবাস করছেন। মাত্র ৫০ জনের মতো কর্মকর্তা দিয়ে এত বিপুলসংখ্যক মানুষকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া অসম্ভব।”
তৌহিদ হোসেন দেশের ভেতরে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেন, যাতে অভিবাসন-সংক্রান্ত সমস্যাগুলো শুরুতেই সমাধান সম্ভব হয়। তিনি কনস্যুলেট কর্মকর্তাদের আরও সহানুভূতিশীল হওয়ার আহ্বান জানান, “প্রবাসীরা আনন্দে কনস্যুলেটে যান না, অধিকাংশই বাধ্য হয়ে আসেন। তাঁদের অনেকেই অসহায় অবস্থায় থাকেন। তাই যত আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ দেখানো সম্ভব, তা-ই তাঁদের প্রাপ্য।”
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ এই বিষয়ে বর্তমানে দ্বিধায় রয়েছে। রাখাইন রাজ্যে অধিকাংশ এলাকা এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। তিনি বলেন, “আরাকান আর্মি রাষ্ট্রীয়ভাবে বা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়। তাই তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করা সম্ভব নয়। কিন্তু তাদের বাদ দিয়ে কোনো সমাধানও কার্যকর হবে না।”
১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল পাকিস্তানি ফরেন সার্ভিসে কর্মরত কিছু সাহসী বাঙালি কূটনীতিক বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। সেই ঐতিহাসিক দিনের স্মরণে প্রতি বছর এই দিনটি ফরেন সার্ভিস দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনসহ সাবেক কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন এবং স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির গুরুত্ব তুলে ধরেন।