তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে উত্তাল উত্তরাঞ্চল
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হওয়ার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। ভারতীয় পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার লাখো মানুষ প্রতিবাদ জানিয়ে মশাল প্রজ্বলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১১টি স্থানে একযোগে মশাল প্রজ্বলন করা হয়। আন্দোলনকারীরা ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে। বুধবার ভোরে ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটলেও আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লালমনিরহাটের তিস্তা সেতু এলাকায় আন্দোলনের শেষ দিনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, “তিস্তা মহাপরিকল্পনার বিকল্প নেই। বিএনপি ক্ষমতায় এলে তিস্তা সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।” তিনি ভারতকে হুঁশিয়ার করে বলেন, “যদি তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত না হয়, তাহলে বাংলাদেশকেই বিকল্প পথ খুঁজে নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলে তিস্তা ইস্যু জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে এবং বাংলাদেশকে ১৯৯২ সালের ওয়াটার কনভেনশন ও ১৯৯৭ সালের জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশনে স্বাক্ষর করা জরুরি।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, “তিস্তার পানি সংকট নিরসনে বিশ্বকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যদি ন্যায্য হিস্যা না পাই, তাহলে আগামীতে পুরো উত্তরাঞ্চল অচল করে দেওয়ার মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
এর আগে, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা রক্ষা আন্দোলন কমিটির নেতৃত্বে গণপদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। লালমনিরহাটের তিস্তা ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে এই পদযাত্রা রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গিয়ে শেষ হয়।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া তিস্তাপাড়ের মানুষ একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহারের মাধ্যমে তিস্তা নদীকে শুকিয়ে ফেলার জন্য ভারতকে দায়ী করে। তারা দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন এবং আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার আহ্বান জানান।