ঢাকা ১০:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস ভিএআর বিভ্রাটে বিতর্ক, ইয়ামালের গোলে ড্রয়ে রক্ষা পেল বার্সেলোনা আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৫০০ ছাড়িয়েছে ভিসা জালিয়াতদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আজীবন নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি আঞ্চলিক-বৈশ্বিক পরিবর্তনে ইরান-চীন হাত মিলাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি ইসরায়েলি হামলায় গাজার অন্যতম শীর্ষ নেতা মুহাম্মাদ সিনওয়ারের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে হামাস ইসরায়েলের সাইবার ট্র্যাকিংয়ে নিহত হয়েছিলো ইরানের শীর্ষ ব্যক্তিরা পলিথিন পেলেই জব্দ করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

বিদেশফেরত রংমিস্ত্রি থেকে সফল কৃষি উদ্যোক্তা: আফজাল শেখের রাম্বুটান বিপ্লব

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৭:৩৭:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
  • / 19

ছবি সংগৃহীত

 

মো. আফজাল শেখ (৩৬) এখন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের কলাপাটুয়া গ্রামের এক পরিচিত নাম। একসময় মালয়েশিয়ায় রংমিস্ত্রির কাজ করা এই যুবকের পরিচিতির পেছনে আছে কঠোর পরিশ্রম, সাহস আর স্বপ্নপূরণের গল্প।

২০১৮ সালে জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান আফজাল। কিন্তু প্রবাসে বিশেষ সাফল্য না পেয়ে দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তখন নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন তিনি। প্রবাসে থাকাকালীন ইউটিউবে দেখে ‘রাম্বুটান’ নামের এক বিদেশি ফলের প্রতি আগ্রহ জন্মায় তার। মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয় এই ফলের চাষ সম্পর্কে জানতে শুরু করেন গভীরভাবে।

দেশে ফেরার সময় সঙ্গে নিয়ে আসেন মাত্র চারটি রাম্বুটান চারা। বাড়ির উঠানে সেগুলো রোপণ করেন। একটি গাছ নষ্ট হলেও বাকি তিনটি গাছে নিয়মিত পরিচর্যা করতে থাকেন তিনি। জীবিকা নির্বাহের জন্য আবারও রংমিস্ত্রির পেশায় ফিরলেও রাম্বুটান চাষে মনোযোগ হারাননি।

শুরুর দিকে ফলন খুব একটা ভালো ছিল না, তবে হাল ছাড়েননি আফজাল শেখ। পরামর্শ নেন কৃষি অফিস ও বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। নিয়মিত যত্ন আর পরিকল্পনার ফলে অবশেষে আসে সাফল্য। এ বছর তার তিনটি গাছে বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিদিনই পাইকার ও খুচরা ক্রেতারা ভিড় করছেন তার বাড়িতে। প্রতি কেজি রাম্বুটান বিক্রি হচ্ছে ১,২০০ থেকে ১,৫০০ টাকায়। পাশাপাশি চারা বিক্রিও করছেন তিনি। ইতোমধ্যে অনেক তরুণ তার কাছ থেকে চারা নিয়ে রাম্বুটান চাষ শুরু করেছেন।

আফজাল শেখ বলেন, ‘শুরুটা ছিল নিছক শখ। কিন্তু এখন এটি আমার আয়ের বড় উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাম্বুটানের পাশাপাশি ডুরিয়ান ও ননিফলসহ আরও কিছু বিদেশি ফলের গাছ লাগিয়েছি। সামনে বড় পরিসরে চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।’

তিনি শুধু নিজের ভাগ্যই বদলাননি, আশেপাশের তরুণদেরও উৎসাহ দিচ্ছেন কৃষি উদ্যোগে আসতে। নিজ হাতে চারা সরবরাহের পাশাপাশি দিচ্ছেন প্রশিক্ষণও।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, ‘রাম্বুটান চাষের জন্য বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া যথেষ্ট উপযোগী। আফজাল শেখের উদ্যোগ দেশের তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। এই ধরনের উদ্যোগ কৃষিতে নতুন বিপ্লব ঘটাতে পারে।’

স্বপ্ন, সাহস আর সাধনায় বদলে যাওয়া একজন তরুণের গল্প আজ গোটা সমাজের প্রেরণা হয়ে উঠেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিদেশফেরত রংমিস্ত্রি থেকে সফল কৃষি উদ্যোক্তা: আফজাল শেখের রাম্বুটান বিপ্লব

আপডেট সময় ০৭:৩৭:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

 

মো. আফজাল শেখ (৩৬) এখন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের কলাপাটুয়া গ্রামের এক পরিচিত নাম। একসময় মালয়েশিয়ায় রংমিস্ত্রির কাজ করা এই যুবকের পরিচিতির পেছনে আছে কঠোর পরিশ্রম, সাহস আর স্বপ্নপূরণের গল্প।

২০১৮ সালে জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান আফজাল। কিন্তু প্রবাসে বিশেষ সাফল্য না পেয়ে দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তখন নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন তিনি। প্রবাসে থাকাকালীন ইউটিউবে দেখে ‘রাম্বুটান’ নামের এক বিদেশি ফলের প্রতি আগ্রহ জন্মায় তার। মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয় এই ফলের চাষ সম্পর্কে জানতে শুরু করেন গভীরভাবে।

দেশে ফেরার সময় সঙ্গে নিয়ে আসেন মাত্র চারটি রাম্বুটান চারা। বাড়ির উঠানে সেগুলো রোপণ করেন। একটি গাছ নষ্ট হলেও বাকি তিনটি গাছে নিয়মিত পরিচর্যা করতে থাকেন তিনি। জীবিকা নির্বাহের জন্য আবারও রংমিস্ত্রির পেশায় ফিরলেও রাম্বুটান চাষে মনোযোগ হারাননি।

শুরুর দিকে ফলন খুব একটা ভালো ছিল না, তবে হাল ছাড়েননি আফজাল শেখ। পরামর্শ নেন কৃষি অফিস ও বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। নিয়মিত যত্ন আর পরিকল্পনার ফলে অবশেষে আসে সাফল্য। এ বছর তার তিনটি গাছে বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিদিনই পাইকার ও খুচরা ক্রেতারা ভিড় করছেন তার বাড়িতে। প্রতি কেজি রাম্বুটান বিক্রি হচ্ছে ১,২০০ থেকে ১,৫০০ টাকায়। পাশাপাশি চারা বিক্রিও করছেন তিনি। ইতোমধ্যে অনেক তরুণ তার কাছ থেকে চারা নিয়ে রাম্বুটান চাষ শুরু করেছেন।

আফজাল শেখ বলেন, ‘শুরুটা ছিল নিছক শখ। কিন্তু এখন এটি আমার আয়ের বড় উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাম্বুটানের পাশাপাশি ডুরিয়ান ও ননিফলসহ আরও কিছু বিদেশি ফলের গাছ লাগিয়েছি। সামনে বড় পরিসরে চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।’

তিনি শুধু নিজের ভাগ্যই বদলাননি, আশেপাশের তরুণদেরও উৎসাহ দিচ্ছেন কৃষি উদ্যোগে আসতে। নিজ হাতে চারা সরবরাহের পাশাপাশি দিচ্ছেন প্রশিক্ষণও।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, ‘রাম্বুটান চাষের জন্য বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া যথেষ্ট উপযোগী। আফজাল শেখের উদ্যোগ দেশের তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। এই ধরনের উদ্যোগ কৃষিতে নতুন বিপ্লব ঘটাতে পারে।’

স্বপ্ন, সাহস আর সাধনায় বদলে যাওয়া একজন তরুণের গল্প আজ গোটা সমাজের প্রেরণা হয়ে উঠেছে।