ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রতিরোধ জোরদার করার আহ্বান

- আপডেট সময় ১১:১৩:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
- / 4
রগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুহার বাড়লেও, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থায় এখনও কার্যকর কোনো অগ্রগতি নেই। স্থানীয় প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জনগণের অসচেতনতার দায় দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে পারে না। বরং এই দুরবস্থার বড় অংশজুড়েই রয়েছে তাদের নিষ্ক্রিয়তা।
জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৫০ জনের মতো রোগী ভর্তি হচ্ছে। অথচ হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা। রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ পরিমাপের সামর্থ্য না থাকায় রোগীদের যেতে হচ্ছে ব্যয়বহুল বেসরকারি ক্লিনিকে। অথচ বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছিলেন বরগুনায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে। সেই সতর্কতার যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
অপরিকল্পিতভাবে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দেওয়ার ফল আজ স্পষ্ট। পৌরসভা চলছে প্রশাসকের মাধ্যমে, যাঁরা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কাজ করছেন। ফলে রুটিন কাজ কোনোভাবে চললেও জরুরি সংকট মোকাবিলায় পুরো কাঠামো অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
সুপেয় পানির সংকট, বিশেষ করে মাটির হাঁড়ি ও প্লাস্টিকের পাত্রে পানি জমিয়ে রাখার বাধ্যবাধকতা, এডিস মশার প্রজননে সহায়ক হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে শুধু জনগণকে দায়ী না করে বিকল্প পানির ব্যবস্থা না করাটাকেই বড় ব্যর্থতা বলতে হবে।
এ বছরের জরিপে দেখা গেছে, ঢাকার তুলনায় বরিশাল বিভাগে, বিশেষ করে বরগুনায়, এডিস মশার ঘনত্ব অনেক বেশি। অথচ প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম নেই বললেই চলে। আর আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ও মৃত্যুর কারণ নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষার খরচ জোগাড় করাও অনেক সময় সম্ভব হচ্ছে না—যা স্বাস্থ্যখাতের এক চরম দুরবস্থা নির্দেশ করে।
জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ডেঙ্গুর সবচেয়ে ভয়াবহ সময়। কাজেই এখনই প্রয়োজন সর্বাত্মক প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও চিকিৎসা প্রস্তুতি। শুধু বরগুনা নয়, কক্সবাজার, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর প্রতিও বিশেষ নজর দিতে হবে। দেরি করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।