ঢাকা ০৯:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
পাকিস্তান সীমান্তে ধরা পড়লো তুরস্কের শীর্ষ আইএস নেতা, ভেস্তে গেল বড় হামলার ছক শিশুর পুষ্টি ও দুগ্ধশিল্পের অগ্রগতিতে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস আজ ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার বিমানঘাঁটি বিধ্বস্ত, দাবি ৪০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের গা/জা/য় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরাইলের হামলা, নিহত অন্তত ৫০ শীর্ষে রেমিট্যান্সের ধারা: মে মাসে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ ২৯৭ কোটি ডলার বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নস্যাৎ করতে অপপ্রচারে লিপ্ত কিছু ভারতীয় গণমাধ্যম: সেনাবাহিনী রাজস্ব খাতে চাকরির দাবিতে আন্দোলনে ‘তথ্য আপা’দের সরিয়ে দিল পুলিশ ঐতিহ্যের ছোঁয়া আর উৎসবের রঙ নিয়ে হংকংয়ে অনুষ্ঠিত হলো ড্রাগন বোট ফেস্টিভাল দুধ শুধু পণ্য নয়, আমাদের সংস্কৃতির অংশ: ফরিদা আখতার সিলেট-মৌলভীবাজারে বন্যার প্রকোপ, বাড়ছে নদ-নদীর পানি

সুন্দরবনে প্রবেশে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করলো বন বিভাগ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:২৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
  • / 15

ছবি: সংগৃহীত

 

আগামীকাল ১ জুন থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন বিভাগ। এ সময়সীমায় বনাঞ্চলে পর্যটক প্রবেশ, মাছ ধরা ও সাধারণ মানুষের চলাচল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে সব ধরনের পাস ও পারমিট প্রদান।

বন বিভাগ জানিয়েছে, জলজ জীব ও বন্য প্রাণীর প্রজনন মৌসুম এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে ইতোমধ্যে শ্যামনগরসহ সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাগুলোতে মাইকিং করা হয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞার কারণে গহীন সুন্দরবন থেকে উপকূলীয় অঞ্চলের জেলে, মৌয়াল ও বাওয়ালিরা ফিরতে শুরু করেছেন। তবে তারা বলছেন, টানা তিন মাস কর্মবিরতির ফলে পরিবার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। অনেকেই অভিযোগ করছেন, সরকার যে পরিমাণ খাদ্য সহায়তা দেয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। এমনকি অনেক প্রকৃত বনজীবী সেই সহায়তা থেকেও বঞ্চিত হন।

জানা গেছে, শ্যামনগর উপজেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২৩ হাজার ৯২৮ জন। অথচ খাদ্য সহায়তা পাবেন মাত্র ৮ হাজার ৩২৪ জন। তাদের মধ্যে প্রত্যেককে দুই ধাপে ৭৭ কেজি করে চাল দেয়া হবে। ট্রলার চালক, সহকারী ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট অনেকেই এই সহায়তার বাইরে রয়ে গেছেন।

সাতক্ষীরা রেঞ্জের ট্রলার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন, “এই তিন মাস বনজীবীরা মানবেতর জীবনযাপন করেন। সরকারিভাবে সকল প্রকৃত বনজীবীর জন্য খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি।”

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের রেঞ্জ সহকারী এবিএম হাবিবুল ইসলাম বলেন, “জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কেউ সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবে না। অনুমতি ছাড়া প্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্মার্ট পেট্রোলিং টিম নিয়মিত টহলে থাকবে।”

তবে একাধিক বনজীবী দাবি করেছেন, নিষেধাজ্ঞা সাধারণ মানুষের জন্য কঠোর হলেও প্রভাবশালী অসাধু চক্র এই সময়ও বনাঞ্চলে প্রবেশ করে মাছ ও কাঁকড়া আহরণ করে। অভিযোগ রয়েছে, বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে এসব চক্র নির্বিঘ্নে বনজ সম্পদ লুটে নেয়।

একজন জেলে বলেন, “আমরা বনে গেলে ধরা পড়ি, কিন্তু ওরা দিব্যি মাছ ধরে। বনের মুখে টহল ফাঁড়ি ও স্মার্ট টিম থাকার পরও তারা কীভাবে ঢোকে? এর দায় বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তাকেই নিতে হবে।”

সাধারণ জেলে ও স্থানীয়রা সুন্দরবনে সুষ্ঠু ও ন্যায়সংগত নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পাশাপাশি যথাযথভাবে খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

সুন্দরবনে প্রবেশে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করলো বন বিভাগ

আপডেট সময় ১১:২৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

 

আগামীকাল ১ জুন থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন বিভাগ। এ সময়সীমায় বনাঞ্চলে পর্যটক প্রবেশ, মাছ ধরা ও সাধারণ মানুষের চলাচল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে সব ধরনের পাস ও পারমিট প্রদান।

বন বিভাগ জানিয়েছে, জলজ জীব ও বন্য প্রাণীর প্রজনন মৌসুম এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে ইতোমধ্যে শ্যামনগরসহ সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাগুলোতে মাইকিং করা হয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞার কারণে গহীন সুন্দরবন থেকে উপকূলীয় অঞ্চলের জেলে, মৌয়াল ও বাওয়ালিরা ফিরতে শুরু করেছেন। তবে তারা বলছেন, টানা তিন মাস কর্মবিরতির ফলে পরিবার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। অনেকেই অভিযোগ করছেন, সরকার যে পরিমাণ খাদ্য সহায়তা দেয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। এমনকি অনেক প্রকৃত বনজীবী সেই সহায়তা থেকেও বঞ্চিত হন।

জানা গেছে, শ্যামনগর উপজেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২৩ হাজার ৯২৮ জন। অথচ খাদ্য সহায়তা পাবেন মাত্র ৮ হাজার ৩২৪ জন। তাদের মধ্যে প্রত্যেককে দুই ধাপে ৭৭ কেজি করে চাল দেয়া হবে। ট্রলার চালক, সহকারী ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট অনেকেই এই সহায়তার বাইরে রয়ে গেছেন।

সাতক্ষীরা রেঞ্জের ট্রলার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন, “এই তিন মাস বনজীবীরা মানবেতর জীবনযাপন করেন। সরকারিভাবে সকল প্রকৃত বনজীবীর জন্য খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি।”

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের রেঞ্জ সহকারী এবিএম হাবিবুল ইসলাম বলেন, “জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কেউ সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবে না। অনুমতি ছাড়া প্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্মার্ট পেট্রোলিং টিম নিয়মিত টহলে থাকবে।”

তবে একাধিক বনজীবী দাবি করেছেন, নিষেধাজ্ঞা সাধারণ মানুষের জন্য কঠোর হলেও প্রভাবশালী অসাধু চক্র এই সময়ও বনাঞ্চলে প্রবেশ করে মাছ ও কাঁকড়া আহরণ করে। অভিযোগ রয়েছে, বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে এসব চক্র নির্বিঘ্নে বনজ সম্পদ লুটে নেয়।

একজন জেলে বলেন, “আমরা বনে গেলে ধরা পড়ি, কিন্তু ওরা দিব্যি মাছ ধরে। বনের মুখে টহল ফাঁড়ি ও স্মার্ট টিম থাকার পরও তারা কীভাবে ঢোকে? এর দায় বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তাকেই নিতে হবে।”

সাধারণ জেলে ও স্থানীয়রা সুন্দরবনে সুষ্ঠু ও ন্যায়সংগত নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পাশাপাশি যথাযথভাবে খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।