জামিনে মুক্তির পর হামলা, নবাবগঞ্জে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫

- আপডেট সময় ০৪:০২:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
- / 9
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কৈলাইল ইউনিয়নের নয়াকান্দা গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। হত্যা মামলায় জামিনে মুক্তি পাওয়া আসামিরা বাড়ি ফিরেই প্রতিপক্ষের ওপর লাঠিসোটা, টেঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে নারী-পুরুষসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, গতকাল রবিবার (২৫ মে) বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত থেমে থেমে কয়েক দফায় এ সংঘর্ষ হয়। আহতদের মধ্যে অধিকাংশকে ঢাকা মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েকজন নবাবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়াকান্দা গ্রামে একটি মোটরসাইকেল চাওয়া নিয়ে বিরোধে মো. মোকলেছুর রহমান (৫০) নামে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বিলকিস বেগম নবাবগঞ্জ থানায় রাজিব, পলাশ, রাসেল, তানভীর, ইব্রাহীম বাবুসহ ২০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার ৯ আসামি জামিনে মুক্ত হয়ে গতকাল বাড়িতে ফেরে। এরপরই বিকেল থেকে রাজিব, পলাশ, রাসেল, তানভীর ও ইব্রাহীম বাবুর নেতৃত্বে ১৫–২০ জনের একটি দল নিহত মোকলেছুর রহমানের স্বজনদের বাড়িতে হামলা চালায়। মালেক দেওয়ানসহ চার-পাঁচটি বাড়িতে এই হামলায় অন্তত ৯ জন আহত হন বলে জানান স্থানীয়রা।
আহতদের মধ্যে মালেক দেওয়ানের স্ত্রী নাজমা বেগম গুরুতর আহত হন। তার মাথায় আঘাত লেগেছে বলে জানান ছেলে রতন দেওয়ান। তিনি বলেন, “আমার মায়ের মাথায় রামদার কোপ লেগেছে। অনেকের শরীরে টেঁটা বিদ্ধ হয়েছে।” তিনি আরও জানান, “এটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা ছিল।”
এদিকে, মালেক দেওয়ানের পক্ষের লোকজনও প্রতিরোধে নামে এবং রাজিব-পলাশ গ্রুপের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। এতে তাদের ৫–৬ জন আহত হন বলে দাবি অপর পক্ষের।
সংঘর্ষের সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, “হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে এসে প্রথমে বাদীপক্ষের বাড়িতে হামলা চালায়। এরপর উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যাই এবং পরিস্থিতি শান্ত করি। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়ভাবে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান ওসি মমিনুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ না দিলেও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে, যা যে কোনো সময় আবারও সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।