০৯:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
‘জুলাই যোদ্ধা’ শনাক্তে গোয়েন্দা তদন্ত শুরু কুয়াকাটার হোটেলে ঝুলন্ত মরদেহ, স্বামী পরিচয়ে থাকা যুবকের খোঁজ নেই যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকা বৃদ্ধি: যোগ হচ্ছে ফিলিস্তিনসহ আরও ছয় দেশ ‘২৫ তারিখ ইনশা আল্লাহ দেশে ফিরছি’: তারেক রহমান হাদিকে গুলি: প্রধান আসামি ফয়সালের বাবা–মা গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার সেই মুসলিমকে ‘জাতীয় হিরো’ আখ্যা দিয়ে যা বললেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে সন্ধ্যায় ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা জনসমাগমের মধ্যে দক্ষিণখানে যুবলীগ নেতা খুন জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা গাজায় যুদ্ধবিরতি মানতে ইসরায়েলকে হোয়াইট হাউসের সতর্কবার্তা, নেতানিয়াহুকে সরাসরি বার্তা

শালবন বিহারে পাওয়া গেল প্রাচীন নিদর্শন, খননে মিলল ‘বালাগাজীর মুড়া

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:০৪:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • / 58

ছবি সংগৃহীত

 

প্রায় ১৩০০ বছরের পুরনো কুমিল্লার ঐতিহাসিক শালবন বিহারের কাছাকাছি লালমাই পাহাড়ে খুঁজে পাওয়া গেল আরও এক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ধর্মপুর এলাকার চারাবাড়ি টিলায় মাটির নিচে আবিষ্কৃত এ প্রাচীন স্থাপনাটির নাম স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘বালাগাজীর মুড়া’। ইতোমধ্যে এখানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খনন ও অনুসন্ধান কাজ শুরু করেছে।

প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব বিবেচনায় এ স্থানকে ১৯৪৫ সালের শিমলা গেজেটে সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে এতদিন তা মাটির নিচেই চাপা পড়ে ছিল। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া খনন কাজের মাধ্যমে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে প্রাচীন এক নির্মাণকাঠামো। এতে উঠে আসছে বড় ইটের প্রাচীর, মাটির পাত্রের ভাঙা টুকরো এবং একাধিক মাটির স্তর।

বিজ্ঞাপন

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোছা. নাহিদ সুলতানার তত্ত্বাবধানে খনন কার্যক্রম চলছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফিল্ড অফিসার মো. আবু সাইদ ইনাম তানভীরুল। এ দলে রয়েছেন আরও ছয়জন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ। কাজ চলবে আগামী জুন মাস পর্যন্ত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের রতনপুর বাজার থেকে একটু দক্ষিণে ধর্মপুরের চারাবাড়ি এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজ চলছে। স্থানীয়রা জানায়, এখানকার টিলার উপরিভাগে বহু আগে থেকেই মাটির পাত্রের ভাঙা টুকরো দেখা যেত, সেখান থেকেই ‘চারা বাড়ি’ নামটির উৎপত্তি।

স্থানীয়দের মতে, খনন শেষে এটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হলে প্রত্ন পর্যটনে কুমিল্লায় নতুন মাত্রা যোগ হবে। সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা চাই এখানকার সব নিদর্শন সংরক্ষিত হোক এবং ইতিহাসের প্রকৃত চিত্র সামনে আসুক।”

ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবিরের মতে, এটি সম্ভবত সপ্তম শতাব্দীর পরবর্তী সময়ের কোনো বৌদ্ধ স্থাপনা। তিনি বলেন, “শালবন বিহার ও এই স্থাপনার ইটের মধ্যে মিল রয়েছে। এটি শালবন, আনন্দ বিহার কিংবা ভোজ বিহারের সমসাময়িক হতে পারে।”

তবে খনন না শেষ হওয়া পর্যন্ত স্থাপনার প্রকৃতি নিয়ে নিশ্চিত হতে নারাজ প্রত্নতত্ত্ববিদরা। ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মো. শাহীন আলম বলেন, “গবেষণা ছাড়া নির্দিষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না।”

প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে বালাগাজীর মুড়ার উন্মোচন কুমিল্লার ইতিহাসে নতুন আলো ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

শালবন বিহারে পাওয়া গেল প্রাচীন নিদর্শন, খননে মিলল ‘বালাগাজীর মুড়া

আপডেট সময় ০৫:০৪:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

 

প্রায় ১৩০০ বছরের পুরনো কুমিল্লার ঐতিহাসিক শালবন বিহারের কাছাকাছি লালমাই পাহাড়ে খুঁজে পাওয়া গেল আরও এক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ধর্মপুর এলাকার চারাবাড়ি টিলায় মাটির নিচে আবিষ্কৃত এ প্রাচীন স্থাপনাটির নাম স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘বালাগাজীর মুড়া’। ইতোমধ্যে এখানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খনন ও অনুসন্ধান কাজ শুরু করেছে।

প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব বিবেচনায় এ স্থানকে ১৯৪৫ সালের শিমলা গেজেটে সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে এতদিন তা মাটির নিচেই চাপা পড়ে ছিল। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া খনন কাজের মাধ্যমে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে প্রাচীন এক নির্মাণকাঠামো। এতে উঠে আসছে বড় ইটের প্রাচীর, মাটির পাত্রের ভাঙা টুকরো এবং একাধিক মাটির স্তর।

বিজ্ঞাপন

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোছা. নাহিদ সুলতানার তত্ত্বাবধানে খনন কার্যক্রম চলছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফিল্ড অফিসার মো. আবু সাইদ ইনাম তানভীরুল। এ দলে রয়েছেন আরও ছয়জন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ। কাজ চলবে আগামী জুন মাস পর্যন্ত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের রতনপুর বাজার থেকে একটু দক্ষিণে ধর্মপুরের চারাবাড়ি এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজ চলছে। স্থানীয়রা জানায়, এখানকার টিলার উপরিভাগে বহু আগে থেকেই মাটির পাত্রের ভাঙা টুকরো দেখা যেত, সেখান থেকেই ‘চারা বাড়ি’ নামটির উৎপত্তি।

স্থানীয়দের মতে, খনন শেষে এটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হলে প্রত্ন পর্যটনে কুমিল্লায় নতুন মাত্রা যোগ হবে। সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা চাই এখানকার সব নিদর্শন সংরক্ষিত হোক এবং ইতিহাসের প্রকৃত চিত্র সামনে আসুক।”

ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবিরের মতে, এটি সম্ভবত সপ্তম শতাব্দীর পরবর্তী সময়ের কোনো বৌদ্ধ স্থাপনা। তিনি বলেন, “শালবন বিহার ও এই স্থাপনার ইটের মধ্যে মিল রয়েছে। এটি শালবন, আনন্দ বিহার কিংবা ভোজ বিহারের সমসাময়িক হতে পারে।”

তবে খনন না শেষ হওয়া পর্যন্ত স্থাপনার প্রকৃতি নিয়ে নিশ্চিত হতে নারাজ প্রত্নতত্ত্ববিদরা। ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মো. শাহীন আলম বলেন, “গবেষণা ছাড়া নির্দিষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না।”

প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে বালাগাজীর মুড়ার উন্মোচন কুমিল্লার ইতিহাসে নতুন আলো ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।