প্লাস্টিক দূষণ রোধে দক্ষিণ এশিয়ার যৌথ উদ্যোগের ডাক বাংলাদেশের

- আপডেট সময় ০১:৫১:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
- / 37
দক্ষিণ এশিয়ার নদ-নদী ও সমুদ্রকে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে রক্ষা করতে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে অনুষ্ঠিত ‘Plastic-Free Rivers and Seas: A Vision for South Asia’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বাংলাদেশ এই বার্তা তুলে ধরে।
গতকাল অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় ‘Policy and Regulatory Challenges of Managing Plastic Waste’ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নদী ও জলাধারসমূহের আবাসস্থল। এসব জলপথে সীমান্ত অতিক্রম করে প্লাস্টিক বর্জ্য প্রবাহিত হচ্ছে, যা পরিবেশের ভারসাম্য ও জনজীবনের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
ড. ফারহিনা বলেন, “এই সংকট থেকে উত্তরণে দরকার একটি সমন্বিত আঞ্চলিক কৌশল—যেখানে থাকবে পারস্পরিক সহযোগিতা, টেকসই অর্থায়ন ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন।”
তিনি উল্লেখ করেন, প্লাস্টিক দূষণ রোধে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং তথ্য আদান-প্রদানে অভাব। এ প্রসঙ্গে তিনি একটি দক্ষিণ এশীয় বহুমাত্রিক কর্মপরিকল্পনা গঠনের প্রস্তাব দেন, যার মধ্যে থাকবে বৃত্তাকার অর্থনীতির নীতি, প্লাস্টিক উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে অভিন্ন মানদণ্ড এবং গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা।
পরিবেশ সচিব আরও বলেন, “প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ, আলাদা করা ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণে যৌথ উদ্যোগ নিতে হবে। উদ্ভাবনী প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ এবং ইন্ডাস্ট্রির সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এক্সটেন্ডেড প্রোডিউসার রেস্পন্সিবিলিটি (EPR) মডেল বাস্তবায়নের ওপরও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।”
বাংলাদেশ ধাপে ধাপে ক্ষতিকর প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি পুনর্ব্যবহারযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবহারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করছে বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক পর্যায়ে প্লাস্টিক ট্র্যাকিং, হটস্পট পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি এবং কঠোর আইন প্রয়োগের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, “সমস্যা এক দেশের নয়। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই সম্ভব একটি প্লাস্টিকমুক্ত দক্ষিণ এশিয়া গড়ে তোলা।”
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব শামীমা বেগম ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক রাজিনারা বেগম। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারক ও পরিবেশবিদরা এই রাউন্ডটেবিলে অংশগ্রহণ করেন।