জাহাজে আক্রমণ বন্ধ না হলে হুতিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে: যুক্তরাষ্ট্র
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর হামলা চালিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র, যদি তারা লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলে আঘাত হানতে থাকে এমনই কঠোর বার্তা দিলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পেট হেগসেথ। রোববার (১৬ মার্চ) এ ঘোষণা দেওয়ার পরদিন, সোমবার (১৭ মার্চ), বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এর আগে ইরান-সমর্থিত হুতিরা জানিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের হামলা অব্যাহত থাকলে তারা প্রতিশোধ নিতে আরও বড় পরিসরে আক্রমণ চালাবে। ইতিমধ্যে হুতি পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ৫৩ জন নিহত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জানুয়ারির অভিষেকের পর এটি মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান। রয়টার্সকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, রোববার যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান ১১টি হুতি ড্রোন ভূপাতিত করেছে, তবে কোনো ড্রোনই মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস. ট্রুম্যানের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারেনি।
রোববার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে হুতি নেতা আব্দুল মালিক আল-হুতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যতক্ষণ যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে যাবে, ততক্ষণ আমাদের প্রতিরোধও চলবে। লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজগুলো আমাদের লক্ষ্যবস্তু থাকবে।” তিনি আরও বলেন, “যদি তারা আগ্রাসন চালিয়ে যায়, আমরাও প্রতিরোধ জোরদার করব।” হুতি আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যুরো যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। অন্যদিকে, মস্কো ওয়াশিংটনকে হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার ভোরে হুতিদের সামরিক মুখপাত্র দাবি করেন, তারা লোহিত সাগরে মার্কিন রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস. ট্রুম্যানের ওপর দ্বিতীয় দফায় হামলা চালিয়েছে, যদিও এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। অন্যদিকে, মার্কিন বাহিনী ইয়েমেন উপকূলে নিক্ষিপ্ত একটি ক্ষেপণাস্ত্র ট্র্যাক করলেও তা ‘তাৎক্ষণিক হুমকি’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি।
সম্প্রতি গাজায় মানবিক ত্রাণ সরবরাহের জন্য ইসরাইলকে দেওয়া চার দিনের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর, হুতিরা আবার ইসরাইল-সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে হামলা শুরু করে। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্র হুতিদের লক্ষ্য করে পাল্টা সামরিক অভিযান শুরু করে। মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এই সংঘাত আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।