বিশ্বব্যাপী ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, সিদ্ধান্তে বিশ্ববাণিজ্যে উত্তেজনা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বুধবার নতুন নির্বাহী আদেশ সই করেছেন, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে আসা ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ট্রাম্প দেশীয় ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদনকারীদের সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এই সিদ্ধান্তের পরিণতি হতে পারে বৈশ্বিক বাণিজ্যে উত্তেজনা ও শুল্কযুদ্ধের সূচনা।
শুল্ক আরোপের এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা ও শিল্পপণ্যের দাম বাড়তে পারে। যদিও ট্রাম্পের দাবি, এতে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা কমতে পারে, বাস্তবতা হলো, এই পদক্ষেপের ফলে বৈশ্বিক পরিসরে বাণিজ্যযুদ্ধের সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডা তাদের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে এবং ট্রাম্প একাধিকবার জানিয়েছেন, তারা এই পাল্টা শুল্কের জবাব দেবেন।
কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য দেশের শুল্ক আরোপের পর ট্রাম্প আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ২ এপ্রিলের মধ্যে যদি কানাডা তাদের শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে মার্কিন পণ্যে ‘উল্লেখযোগ্য’ শুল্ক আরোপ করা হবে।
গত ২০১৮ সালে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে মার্কিন বাজারে গাড়ি, যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য ইস্পাত পণ্যের দাম বেড়ে গিয়েছিল। যদিও মার্কিন উৎপাদন সামান্য বেড়েছিল, তবে এতে এক লাখ মার্কিন মানুষের কাজ চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যে অ্যালুমিনিয়াম শিল্পে ২০ হাজার কর্মীর চাকরি হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে যে শিল্পগুলোকে রক্ষা করার কথা বলা হচ্ছে, সেসব শিল্পের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদক প্রতিষ্ঠান অ্যালকোয়ার প্রধান নির্বাহী উইলিয়াম ওপলিঞ্জার সতর্ক করেছেন, এমন পদক্ষেপে কর্মসংস্থান কমে যেতে পারে।
যদিও ট্রাম্প একাধিকবার শুল্ক আরোপের পরে পিছু হটেছেন, তিনি এবার কেবল ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং কানাডার সাথে একযোগে শুল্ক আরোপের পথে হাঁটছেন, যা বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা ও বৈশ্বিক সম্পর্কের ওপর নতুন চাপ সৃষ্টি করতে পারে।