টালমাটাল ইউক্রেন যুদ্ধ: পশ্চিমাদের কৌশল বদলাচ্ছে? শেষ পর্যন্ত কি পুতিনই জিততে চলেছেন!

- আপডেট সময় ১১:৪৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫
- / 45
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত এখন যুদ্ধের ময়দান থেকে কূটনৈতিক দুনিয়ায় আরও বেশি আলোচিত। সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পর মনে হচ্ছে, পশ্চিমা বিশ্ব এক নতুন মোড়ের সামনে দাঁড়িয়ে।
২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স তাঁকে কার্যত আক্রমণ করেন। অনেকে মনে করছেন, এটি পূর্বপরিকল্পিত। ট্রাম্প যেন ইউক্রেন থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
৪ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সামরিক সহায়তা বন্ধ করে। পরদিন বন্ধ হয় গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ও। ফলে ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রচেষ্টায় বড় ধাক্কা লাগে। ইউরোপীয় নেতারা দ্রুত বৈঠকে বসে জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন জানান। তবে তাদের সহায়তার শর্ত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই পাশে থাকতে হবে।
তবে ঘটনা এখানেই থেমে নেই। বরিস জনসন একে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। পশ্চিমাদের কাছে এখন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ইচ্ছা কমে আসছে। এতদিন বলা হচ্ছিল, রাশিয়া সহজেই পরাজিত হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।
২০২২ সালে ইস্তাম্বুলে যে শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা ছিল, তা পশ্চিমাদের চাপেই বাতিল হয়েছিল। এখন সে ধরনের কোনো সমাধানও আর দিগন্তে নেই। ২০১৫ সালের মিনস্ক চুক্তির শর্তও হারিয়ে গেছে।
পশ্চিমাদের মধ্যে বিভক্তি স্পষ্ট হচ্ছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেন সামরিক শক্তি বৃদ্ধির কথা বললেও, হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়া ইউক্রেনের জন্য অতিরিক্ত সহায়তা আটকে দিচ্ছে। ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে দোদুল্যমান ইউরোপ স্পষ্টতই যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকিয়ে আছে।
অন্যদিকে, জেলেনস্কি দৃশ্যত কঠোর অবস্থান ধরে রাখছেন। তিনি পশ্চিমাদের কাছ থেকে ‘নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ চাচ্ছেন, যদিও জানেন, সেটি পাওয়া প্রায় অসম্ভব। গোপনে ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থাও স্বীকার করেছে, গ্রীষ্মের মধ্যে শান্তি আলোচনা না হলে দেশটি সংকটের গভীরতম পর্যায়ে পৌঁছাবে।
পশ্চিমারা প্রচারণার রাজনীতিতে সফল হলেও, যুদ্ধক্ষেত্রে তারা পিছু হটছে। বাস্তবতা হলো, কৌশলগতভাবে এগিয়ে রয়েছেন সেই ব্যক্তি, যিনি গণমাধ্যমের প্রচারের চেয়ে বাস্তবতাকে গুরুত্ব দেন ভ্লাদিমির পুতিন।