২৫ হাজার বছরের পুরোনো ইন্দোনেশিয়ার গুনুং পাডাং পিরামিড, রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে!

- আপডেট সময় ০৫:০৫:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫
- / 85
পিরামিডের কথা শুনলে সবার প্রথমেই মনে আসে মিশরের প্রাচীন পিরামিডের কথা। কিন্তু জানেন কি, বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো পিরামিডটি আসলে মিশরের নয়, ইন্দোনেশিয়ায়? পশ্চিম জাভায় অবস্থিত গুনুং পাডাং পিরামিডটি প্রায় ২৫ হাজার বছর পুরনো এবং এটি মিশরের পিরামিডের থেকেও অনেক প্রাচীন। এখানকার রহস্যময় স্থাপত্য নিয়ে চলমান গবেষণা এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
গুনুং পাডাং পিরামিডটি একটি পাহাড়ের গায়ে তৈরি, যা প্রাকৃতিক লাভা পাথরের ওপর কেটে তৈরি করা হয়েছে। ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে প্রত্নতত্ত্ববিদ, ভূতত্ত্ববিদ ও ভূপদার্থবিদদের একটি বিশেষ দল এখানে অভিযান চালায়। দীর্ঘ গবেষণা ও বিশ্লেষণের পর প্রকাশিত রিপোর্টে জানা যায়, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন মেগালিথিক (বড় বড় পাথর দিয়ে তৈরি) স্থাপত্যগুলোর মধ্যে একটি।
গুনুং পাডাং পিরামিডের গঠন অত্যন্ত জটিল ও অভিজাত। এটি সম্ভবত খ্রিষ্টপূর্ব ২৫ হাজার থেকে ১৪ হাজার বছরের মধ্যে নির্মিত হয়। এই পিরামিডের সবচেয়ে গভীর অংশটি মাটির প্রায় ৩০ মিটার নিচে রয়েছে এবং এতে রয়েছে অনেক গুপ্ত কক্ষ, যেগুলোর রহস্য এখনও উদঘাটন হয়নি। এটি একটি বহু স্তরের স্থাপত্য, যা বিভিন্ন সময়ে নানা জাতির প্রভাবিত হয়েছে। ফলে, প্রতিটি স্তরের মধ্যে ইতিহাসের বিভিন্ন স্তর লুকিয়ে রয়েছে।
প্রথমদিকে এই পিরামিডটি একটি পাহাড় হিসেবেই পরিচিত ছিল, তবে ২০০০ সালের পর থেকে গবেষকদের নজরে আসার পর, এর আসল পরিচয় ধীরে ধীরে উন্মোচিত হতে থাকে। বিশেষজ্ঞরা জানান, এই স্থাপত্যটি তুষার যুগের শেষের দিকে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি আগ্নেয় পাথরের তৈরি পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হয়েছিল।
গুনুং পাডাং পিরামিডের তৈরি ও ইতিহাস নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। কিছু গবেষক ধারণা করছেন, এটি মানবসৃষ্ট স্থাপত্য, তবে অন্যরা মনে করছেন এটি আদৌ মানুষের তৈরি না-ও হতে পারে। তবে, এটি যে একটি ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য, তা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
এখনও এই পিরামিডের গভীরে লুকিয়ে থাকা রহস্যময় কক্ষগুলো এবং এর নির্মাণের আসল উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা চলছেই। এটি ইতিহাসের একটি অমীমাংসিত অধ্যায়, যা ভবিষ্যতের গবেষণায় আরও নতুন দিক উন্মোচিত করতে পারে।