গাজায় ইসরাইলি হামলায় একদিনে ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত

- আপডেট সময় ০৯:৩৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / 4
ইসরাইলের অব্যাহত বোমা হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নতুন করে আরও ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৩ জন। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
হামাস একে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অবিলম্বে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনটির দাবি, ইসরাইলি বাহিনীর নির্বিচার বোমাবর্ষণ আশ্রয়কেন্দ্র ও তাঁবুতে থাকা পুরো পরিবারকেও নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে।
বাস্তুচ্যুত গাজার বাসিন্দা সাবরিন আল-মাবহুহ আল জাজিরাকে বলেন, “আমার ভাইকে ঘরেই হত্যা করা হয়েছে। তার স্ত্রী ও সন্তানদেরও হত্যা করা হয়েছে। কেউ বেঁচে নেই।”
গাজার মিডিয়া অফিস জানায়, গত তিন সপ্তাহে শুধু গাজা সিটিতেই অন্তত ১০০ রোবট বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে ইসরাইল। এতে একের পর এক আবাসিক ব্লক ধসে পড়েছে। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া অভিযানে গাজা সিটিতে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ জনে।
উত্তর গাজা সিটিতে আল-জারিসি পরিবারের বাড়িতে বিমান হামলায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হামাস একে “ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ” উল্লেখ করে বলেছে, ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করতে এটি একটি পরিকল্পিত অভিযান।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, কঠোর অবরোধের কারণে খাদ্য ও সহায়তা প্রবেশ সীমিত হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এক শিশুসহ অন্তত ছয়জন অপুষ্টি ও অনাহারে প্রাণ হারিয়েছে। অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ক্ষুধাজনিত কারণে ৩৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ১৩১ শিশু।
জাতিসংঘের হিসাবে, ইসরাইলের গাজা সিটি দখল অভিযান প্রায় ১০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে। শুধু আগস্টের শেষার্ধে জোরপূর্বক ৮২ হাজার মানুষকে স্থানচ্যুত করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩০ হাজারকে উত্তর থেকে দক্ষিণে সরতে বাধ্য করা হয়েছে।
ইউনিসেফ সতর্ক করেছে, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ পাঁচ বছরের নিচে অন্তত ১ লাখ ৩২ হাজার শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়তে পারে। বর্তমানে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার ফিলিস্তিনি শিশু চরম ক্ষুধার মুখে রয়েছে। ইউনিসেফ বলছে, “গাজায় দুর্ভিক্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। শিশুদের এখনই জরুরি খাদ্য সহায়তা ও বিশেষ পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা না গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেবে।”