ঢাকা ০৩:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিংড়ায় কবুতর চুরির অপরাধে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা সিলেটে তামাবিল দিয়ে নারী,শিশুসহ ২২ বাংলাদশীকে ফেরত তারেক রহমানই দেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী: মির্জা ফখরুল মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে নির্বাচন সিস্টেমের উপর : সিইসি ১৫ আগস্ট ইউক্রেন ইস্যুতে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প ও পুতিন উপেক্ষার জবাবে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক রোনালদোর ঢাবির আবাসিক হলে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের ঘোষণা গাজায় একদিনে আরও ৭২ ফিলিস্তিনি নিহত, মোট প্রাণহানি ছাড়াল ৬১ হাজার মুসলিম দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হবে ইউরোপীয় রাব্বানিক সম্মেলন, আয়োজক আজারবাইজান যুক্তরাজ্যের রুয়ান্ডা মডেল কপি করছে ইইউ — সমালোচনা থেকে সমর্থনে তিন বছরের পথচলা

১৫ আগস্ট ইউক্রেন ইস্যুতে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প ও পুতিন

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:১৮:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫
  • / 6

ছবি সংগৃহীত

 

ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে আসছে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বৈঠকে বসবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার (৮ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ পোস্ট দিয়ে এ বৈঠকের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তিনি লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বহু প্রতীক্ষিত বৈঠকটি হবে ১৫ আগস্টে, যুক্তরাষ্ট্রের মহান আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে।” পরে ক্রেমলিনও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, ভৌগোলিক সান্নিধ্যের কারণে আলাস্কা ‘যৌক্তিক স্থান’। পাশাপাশি পুতিন ভবিষ্যতে রাশিয়ায় আরেকটি শীর্ষ বৈঠকে ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।

ঘোষণার দিনই ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “তিন বছরের বেশি সময় ধরে এসব এলাকায় যুদ্ধ চলছে। অসংখ্য রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রাণ হারিয়েছে। কিছু এলাকা ফিরবে, কিছু এলাকা অদলবদল হবে—দুই পক্ষেরই মঙ্গলের জন্য।”

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সম্ভাব্য আলোচনার প্রস্তাবনায় রাশিয়া দনবাসের সম্পূর্ণ অঞ্চল ও ক্রিমিয়ার নিয়ন্ত্রণ রাখবে, আর খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চল (যার আংশিক দখল রাশিয়ার হাতে) ছেড়ে দেবে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, পুতিন সম্প্রতি মস্কোয় ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের কাছে একই ধরনের প্রস্তাব পেশ করেছেন। তবে এই সমঝোতা নিয়ে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর অবস্থান পরিষ্কার নয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সীমান্ত ছাড়ের কোনো শর্ত তিনি গ্রহণ করবেন না।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠকের পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি এবং কোনো পর্যায়ে জেলেনস্কিও এতে যুক্ত হতে পারেন। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড দখলে রেখেছে। তিন দফা সরাসরি আলোচনার পরও মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে শান্তি চুক্তি নিয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে। রাশিয়ার শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করা, সামরিক শক্তি হ্রাস, ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা প্রত্যাহার।

ট্রাম্প দাবি করেছেন, এখনো ত্রিপক্ষীয় শান্তি চুক্তির সুযোগ আছে। তার ভাষায়, “ইউরোপীয় নেতারা শান্তি চান, পুতিন চান, জেলেনস্কিও চান। সই করার জন্য জেলেনস্কির যা দরকার, তা তিনি পাচ্ছেন এবং প্রস্তুত হচ্ছেন।” গত মাসে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, অন্তত চারবার তিনি ভেবেছিলেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সমঝোতা হতে পারে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তিনি ক্রেমলিনের প্রতি কিছুটা কঠোর অবস্থান নিয়েছেন; এমনকি ৮ আগস্টের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আল্টিমেটাম দিয়ে ব্যর্থ হলে কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকিও দেন। তবে শুক্রবার হোয়াইট হাউস নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেনি।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর এটিই হবে ট্রাম্প ও পুতিনের প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। সর্বশেষ কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ২০২১ সালে, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়—তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জো বাইডেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

১৫ আগস্ট ইউক্রেন ইস্যুতে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প ও পুতিন

আপডেট সময় ১১:১৮:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

 

ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে আসছে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বৈঠকে বসবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার (৮ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ পোস্ট দিয়ে এ বৈঠকের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তিনি লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বহু প্রতীক্ষিত বৈঠকটি হবে ১৫ আগস্টে, যুক্তরাষ্ট্রের মহান আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে।” পরে ক্রেমলিনও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, ভৌগোলিক সান্নিধ্যের কারণে আলাস্কা ‘যৌক্তিক স্থান’। পাশাপাশি পুতিন ভবিষ্যতে রাশিয়ায় আরেকটি শীর্ষ বৈঠকে ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।

ঘোষণার দিনই ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “তিন বছরের বেশি সময় ধরে এসব এলাকায় যুদ্ধ চলছে। অসংখ্য রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রাণ হারিয়েছে। কিছু এলাকা ফিরবে, কিছু এলাকা অদলবদল হবে—দুই পক্ষেরই মঙ্গলের জন্য।”

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সম্ভাব্য আলোচনার প্রস্তাবনায় রাশিয়া দনবাসের সম্পূর্ণ অঞ্চল ও ক্রিমিয়ার নিয়ন্ত্রণ রাখবে, আর খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চল (যার আংশিক দখল রাশিয়ার হাতে) ছেড়ে দেবে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, পুতিন সম্প্রতি মস্কোয় ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের কাছে একই ধরনের প্রস্তাব পেশ করেছেন। তবে এই সমঝোতা নিয়ে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর অবস্থান পরিষ্কার নয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সীমান্ত ছাড়ের কোনো শর্ত তিনি গ্রহণ করবেন না।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠকের পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি এবং কোনো পর্যায়ে জেলেনস্কিও এতে যুক্ত হতে পারেন। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড দখলে রেখেছে। তিন দফা সরাসরি আলোচনার পরও মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে শান্তি চুক্তি নিয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে। রাশিয়ার শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করা, সামরিক শক্তি হ্রাস, ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা প্রত্যাহার।

ট্রাম্প দাবি করেছেন, এখনো ত্রিপক্ষীয় শান্তি চুক্তির সুযোগ আছে। তার ভাষায়, “ইউরোপীয় নেতারা শান্তি চান, পুতিন চান, জেলেনস্কিও চান। সই করার জন্য জেলেনস্কির যা দরকার, তা তিনি পাচ্ছেন এবং প্রস্তুত হচ্ছেন।” গত মাসে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, অন্তত চারবার তিনি ভেবেছিলেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সমঝোতা হতে পারে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তিনি ক্রেমলিনের প্রতি কিছুটা কঠোর অবস্থান নিয়েছেন; এমনকি ৮ আগস্টের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আল্টিমেটাম দিয়ে ব্যর্থ হলে কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকিও দেন। তবে শুক্রবার হোয়াইট হাউস নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেনি।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর এটিই হবে ট্রাম্প ও পুতিনের প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। সর্বশেষ কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ২০২১ সালে, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়—তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জো বাইডেন।