ঢাকা ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
নিউজিল্যান্ডের স্কোয়াডে বড় পরিবর্তন, তিন ক্রিকেটার ছিটকে টাঙ্গাইলে পিকআপ ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩ গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা, সামরিক প্রধানের সতর্কবার্তা ঘানায় ভয়াবহ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা: দুই মন্ত্রীসহ ৮ জন নিহত যুক্তরাষ্ট্রে বিমান বিধ্বস্তে সব যাত্রী নিহত বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২৮ শিক্ষার্থী আহত এনসিপির শীর্ষ ৫ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ভোটের দুই মাস আগে তফসিল দেওয়া হবে : সিইসি নির্বাচন ছাড়া কোনো কিছুতেই বিশ্বাস করি না: মির্জা ফখরুল তুরস্কের মালিকানার প্রমাণে মুক্তি পেল ‘সি ওয়ার্ল্ড’ জাহাজ

গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা, সামরিক প্রধানের সতর্কবার্তা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৯:৪৮:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
  • / 3

ছবি: সংগৃহীত

 

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির। গোপন বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, গাজা পুরোপুরি দখলে নেওয়া হলে সেনাবাহিনীকে জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জামির বলেন, পুরো গাজা দখলের চেষ্টা আইডিএফকে (ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) ছিটমহলের মতো সংকীর্ণ এলাকায় আটকে ফেলতে পারে। এতে অবশিষ্ট জিম্মিদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে এবং সেনাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে।

সূত্র জানিয়েছে, জামিরের বিকল্প প্রস্তাবে গাজা শহরসহ জিম্মিদের অবস্থান বলে আশঙ্কাজনক এলাকাগুলো ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বরং গাজার কেন্দ্রে আরও বিস্তৃত সামরিক অভিযানের পক্ষে জোর দিয়েছেন।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে গাজা দখলের ব্যাপারে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করবেন। এটি আন্তর্জাতিকভাবে যুদ্ধবিরতির দাবির মাঝেই ইসরাইলি অভিযান জোরদারের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই মতবিরোধ ইসরাইলের সামরিক নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান বিভেদের প্রতিচ্ছবি। যেখানে সামরিক বাহিনী কূটনৈতিক উপায়ে যুদ্ধের সমাপ্তি চাচ্ছে, সেখানে সরকার যুদ্ধের পূর্ণ লক্ষ্যে পৌঁছাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দাবি, দীর্ঘ প্রায় দুই বছরের সংঘাতের পর তারা ইতোমধ্যে গাজার প্রায় ৭৫ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে এই দখলদারিতে অঞ্চলজুড়ে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ইসরাইল দুই দশক আগে গাজা থেকে একতরফাভাবে সেনা প্রত্যাহার করে। নতুন সেনাপ্রধান জামির আশঙ্কা করছেন, সম্পূর্ণ সামরিক দখল আইডিএফকে নতুন করে বিপদের ফাঁদে ফেলতে পারে।

অতি-ডানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো হামাসকে নির্মূল করতে গাজায় আরও কঠোর পদক্ষেপের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে তাদের এই অবস্থান সেনাবাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে পড়ছে। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির সামাজিক মাধ্যমে জামিরকে ‘সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলার’ আহ্বান জানান।

বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সেনাবাহিনী সরকার বা নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রস্তুত রয়েছে।
এদিকে, বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার ল্যাপিডের সঙ্গেও নেতানিয়াহু বৈঠক করেন। পরে ল্যাপিড এক ভিডিও বিবৃতিতে গাজা দখলের পরিকল্পনাকে ‘চরম ভুল’ বলে উল্লেখ করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা, সামরিক প্রধানের সতর্কবার্তা

আপডেট সময় ০৯:৪৮:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

 

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির। গোপন বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, গাজা পুরোপুরি দখলে নেওয়া হলে সেনাবাহিনীকে জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জামির বলেন, পুরো গাজা দখলের চেষ্টা আইডিএফকে (ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) ছিটমহলের মতো সংকীর্ণ এলাকায় আটকে ফেলতে পারে। এতে অবশিষ্ট জিম্মিদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে এবং সেনাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে।

সূত্র জানিয়েছে, জামিরের বিকল্প প্রস্তাবে গাজা শহরসহ জিম্মিদের অবস্থান বলে আশঙ্কাজনক এলাকাগুলো ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বরং গাজার কেন্দ্রে আরও বিস্তৃত সামরিক অভিযানের পক্ষে জোর দিয়েছেন।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে গাজা দখলের ব্যাপারে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করবেন। এটি আন্তর্জাতিকভাবে যুদ্ধবিরতির দাবির মাঝেই ইসরাইলি অভিযান জোরদারের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই মতবিরোধ ইসরাইলের সামরিক নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান বিভেদের প্রতিচ্ছবি। যেখানে সামরিক বাহিনী কূটনৈতিক উপায়ে যুদ্ধের সমাপ্তি চাচ্ছে, সেখানে সরকার যুদ্ধের পূর্ণ লক্ষ্যে পৌঁছাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দাবি, দীর্ঘ প্রায় দুই বছরের সংঘাতের পর তারা ইতোমধ্যে গাজার প্রায় ৭৫ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে এই দখলদারিতে অঞ্চলজুড়ে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ইসরাইল দুই দশক আগে গাজা থেকে একতরফাভাবে সেনা প্রত্যাহার করে। নতুন সেনাপ্রধান জামির আশঙ্কা করছেন, সম্পূর্ণ সামরিক দখল আইডিএফকে নতুন করে বিপদের ফাঁদে ফেলতে পারে।

অতি-ডানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো হামাসকে নির্মূল করতে গাজায় আরও কঠোর পদক্ষেপের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে তাদের এই অবস্থান সেনাবাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে পড়ছে। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির সামাজিক মাধ্যমে জামিরকে ‘সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলার’ আহ্বান জানান।

বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সেনাবাহিনী সরকার বা নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রস্তুত রয়েছে।
এদিকে, বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার ল্যাপিডের সঙ্গেও নেতানিয়াহু বৈঠক করেন। পরে ল্যাপিড এক ভিডিও বিবৃতিতে গাজা দখলের পরিকল্পনাকে ‘চরম ভুল’ বলে উল্লেখ করেন।