গাজার অবরোধ: ইসরায়েলি হামলায় ৬২ ফিলিস্তিনির প্রাণহানী

- আপডেট সময় ১০:০৯:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
- / 2
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে ৬২ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই খাদ্য সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন।
রোববার (৩ আগস্ট) আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, শনিবার ভোর থেকে গাজায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে ৩৮ জন এমন স্থান থেকে সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত হন, যা পরিচালনা করছে বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)। এই সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত।
এটি উল্লেখযোগ্য যে, জিএইচএফ পরিচালিত স্থানে সহায়তা নিতে গিয়ে পূর্ববর্তী ঘটনাগুলোর মতো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। গত সপ্তাহে ইসরায়েল মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে সুবিধা দিতে কিছু এলাকায় “কৌশলগত বিরতি” ঘোষণা করেছিল, যা ২৭ জুলাই থেকে কার্যকর হয়। কিন্তু জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার ও বৃহস্পতিবার খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে ১০৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর থেকে মোট ১৩৭৩ জন ফিলিস্তিনি সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, একই সময়ে অপুষ্টি ও অনাহারে মারা গেছেন ১৬৯ জন, যাদের মধ্যে ৯৩ জন শিশু।
গাজাবাসীরা জানিয়েছেন, সহায়তা নেওয়ার সময় ইসরায়েলি সেনা ও মার্কিন কন্ট্রাক্টরদের গুলির অভিযোগ রয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে, আন্তর্জাতিক সমাজের সমালোচনার মুখে জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, স্পেন, জার্মানি ও ফ্রান্স বিমান থেকে ত্রাণ সরবরাহ করছে। তবে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থাগুলো আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহকে অপ্রতুল বলে উল্লেখ করেছে এবং স্থলপথে সহায়তার প্রবাহ নিশ্চিত করার দাবি তুলেছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার মাত্র ৩৬টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে, অথচ দৈনিক অন্তত ৬০০টি ট্রাক প্রয়োজন।
এদিকে খান ইউনিসে ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদর দপ্তরে ইসরায়েলি হামলায় এক কর্মী নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। হামলায় ভবনের প্রথম তলায় আগুন ধরে যায়।
গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খোদারির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক ত্রাণ সরবরাহ সত্ত্বেও ফিলিস্তিনিদের অবস্থা অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। বাজারে খাবার প্রায় নেই এবং যা কিছু আছে, তা খুব বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ জীবন ঝুঁকিতে ফেলে খাবার সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছেন।