স্টারমারের নেতৃত্বে গাজা ও ফিলিস্তিন বিষয়ে যুক্তরাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক আসন্ন

- আপডেট সময় ১১:৫২:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
- / 11
গাজার চলমান সংকট ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতির বিষয়টি নিয়ে আগামী সপ্তাহে মন্ত্রিসভার বৈঠক আহ্বানের পরিকল্পনা করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। সরকারের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে এমন তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।
যদিও বর্তমানে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভা গ্রীষ্মকালীন অবকাশে রয়েছে এবং মন্ত্রীরা আনুষ্ঠানিকভাবে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে আছেন, তবুও বৈশ্বিক পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় তারা নির্ধারিত সময়ের আগেই বৈঠকে বসতে চলেছেন।
স্টারমারের দপ্তর এই সংক্রান্ত বিষয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এই পদক্ষেপ এমন এক সময় নেওয়া হচ্ছে, যখন স্টারমার সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন যে, কেবলমাত্র একটি পূর্ণাঙ্গ শান্তি আলোচনার ফলাফল হিসেবেই ব্রিটেন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে। তবে তার এই মন্তব্য লেবার পার্টির অভ্যন্তরে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে, কারণ অনেকেই ফ্রান্সের মতো দ্রুত পদক্ষেপের পক্ষে।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের ২২০ জনেরও বেশি সংসদ সদস্য—যাঁদের মধ্যে লেবার পার্টির সদস্যরাও রয়েছেন—প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন, যেন তিনি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেন।
নয়টি ভিন্ন রাজনৈতিক দলের এমপিদের স্বাক্ষরিত একটি যৌথ চিঠিতে তারা উল্লেখ করেছেন, “আগামী সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া যুক্তরাজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক বার্তা হয়ে উঠবে।”
জাতিসংঘের উদ্যোগে আয়োজিত ওই সম্মেলনটি ২৮ ও ২৯ জুলাই ফ্রান্স ও সৌদি আরবের সহ-সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, “আমরা উপলব্ধি করি—শুধু যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতিতে একটি পূর্ণ স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। কিন্তু এমন একটি পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ন্যায়বিচার ও শান্তির বার্তা দেবে।”
সেইসঙ্গে তারা যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক ভূমিকা ও নৈতিক দায়ের দিকটিও স্মরণ করিয়ে দেন। তারা বলেন, “১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষণা’র মধ্য দিয়ে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দিয়েছিল ব্রিটেন; এখন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়াও আমাদের দায়িত্ব।”
চিঠিতে কনজারভেটিভ পার্টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাট, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি, প্লাইড কামরিসসহ নয়টি দলের এমপিরা স্বাক্ষর করেছেন। এতে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাজ্যের ভূমিকা নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, লেবার পার্টির অভ্যন্তরীণ চাপ এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিস্থিতির পটভূমিতে আসন্ন মন্ত্রিসভা বৈঠককে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।