নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র হামলায় ৯ জন নিহত, শতাধিক নারী-শিশুকে অপহরণ

- আপডেট সময় ০১:৫৩:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
- / 3
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জামফারা রাজ্যে দস্যুদের সশস্ত্র হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত এবং শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশুকে অপহরণ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
দীর্ঘদিন ধরেই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে জামফারা রাজ্য। অপহরণ, হত্যা এবং রাস্তাঘাটে নিরাপত্তাহীনতার কারণে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
স্থানীয় আইনপ্রণেতা হামিসু ফারু বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, “এই মুহূর্তে অন্তত ১০০ জন নিখোঁজ, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। আমি যখন আপনার সঙ্গে কথা বলছি, তখনও সশস্ত্র দস্যুরা ঘরে ঘরে তল্লাশি চালিয়ে মানুষ ধরে নিয়ে যাচ্ছে।”
তালাতা মাফারা জেলার প্রশাসক ইয়াহায়া ইয়ারি আবুবকর ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ১৫ জনকে অপহরণ করা হয়েছে।
জেলাটির জানগেবে গ্রামের বাসিন্দা আবু জাকি জানান, নিহতদের মধ্যে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী প্রতিরক্ষা দলের প্রধান এবং তার পাঁচজন সহকর্মী রয়েছেন। নিহত বাকি তিনজন হচ্ছেন গ্রামবাসী। গ্রামবাসী বেল্লো আহমাদু বলেন, “এখন সবাই কৃষিকাজে যেতে ভয় পাচ্ছে। যেকোনো সময় হামলা হতে পারে।”
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে জানগেবে গ্রামেই একটি বোর্ডিং স্কুল থেকে প্রায় ৩০০ ছাত্রীকে অপহরণ করেছিল এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। মুক্তিপণের বিনিময়ে পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ উসমান জানান, হামলাকারীরা দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে গ্রাম ঘিরে রেখে গণহারে অপহরণ চালিয়েছে। এ ঘটনার পর হাজার হাজার মানুষ গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
জামফারা রাজ্য পুলিশ এ ঘটনায় এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
উল্লেখ্য, জামফারা, কাতসিনা, কাদুনা ও নাইজার রাজ্যের সীমান্তবর্তী বিশাল জঙ্গলে এসব সশস্ত্র গোষ্ঠীর ঘাঁটি রয়েছে। শুরুতে কৃষক ও পশুচারকদের মধ্যে ভূমি ও সম্পদের বিরোধ থাকলেও, অস্ত্র পাচার পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বর্তমানে এটি একটি বিস্তৃত সশস্ত্র সংঘাতে রূপ নিয়েছে।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও মিলিশিয়া দল গঠন করে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করছে জামফারা সরকার। গত মাসে, গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় একটি স্বেচ্ছাসেবী দল শিনকাফি জেলায় এক কুখ্যাত সন্ত্রাসীর ঘাঁটিতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০০ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: আলজাজিরা